কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আলমডাঙ্গার নাগদাহ ও আইলহাস এবং জীবননগরের বাঁকা হাসাদহ ও রায়পুর ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার নাগদাহ ও আইলহাস এবং জীবননগরের বাঁকা, হাসাদহ ও রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। গতকাল বুধবার ৪৫ ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী ব্যালট পেপার ও বিভিন্ন নির্বাচনী সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৫টি ইউপিতে ৬১ হাজার ১৩৬ জন ভোটার ভোট প্রয়োগ করবেন।
এদিকে, গত ২৭ মার্চ রাত ৯টার দিকে আইলহাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী আ.লীগ নেতা আব্দুল মালেক জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রাজু আহমেদের পাজেরো জিপ আটকানোর নির্দেশ দিলে তিনি অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন এবং ১৫ মিনিট পর অবমুক্ত হন। সেজন্য নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার স্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনের সচিব বরাবর লিখিতভাবে অবগত করেছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।
অপরদিকে, গতকাল বুধবার আইলহাস ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিনহাজ উদ্দীন বিশ্বাস চারটি অধিক ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্রে বিশেষ নিরাপত্তার দাবি করে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন। কেন্দ্র চারটি হলো খাসবাগুন্দা, আইলহাস ও হাড়োকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং হোসেনপুর অস্থায়ী ব্র্যাক স্কুল কেন্দ্র। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আলমডাঙ্গা উপজেলায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল হালিম এবং জীবননগর উপজেলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুস্তাফিজুর রহমান দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সুচিত্র রঞ্জন দাস আলমডাঙ্গার নাগদাহ ও আইলহাস ইউপিতে এবং জীবননগরের বাঁকা, হাসাদহ ও রায়পুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ফকরুল ইসলাম দায়িত্ব পালন করবেন। নাগদাহ ইউপিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ইফতার আরা জামান উর্মি এবং আইলহাস ইউপিতে সিব্বির আহমেদ দায়িত্ব পালন করবেন। বাঁকা ইউপিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পাপিয়া আক্তার, হাসাদহ ইউপিতে চৌধুরী মুস্তাফিজুর রহমান এবং রায়পুর ইউপিতে ফখরুল ইসলাম দায়িত্ব পালন করবেন।
ইউপি নির্বাচনে ৪৫ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৮ ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্রে ৬ জন করে ১০৮ জন, ৪টি কম ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্রে ৫ জন করে ২০ জন এবং ২৩টি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ৫ জন করে ১১৫ জন সর্বমোট ২৪৩ জন পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন। ১৫টি মোবাইল টিমে ৮জন করে ১২০ জন পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন। ১৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্সে ৭জন করে ১০৫ জন দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি ভোট কেন্দ্রে ১৭ জন করে ৪৫টি কেন্দ্রে ৭৬৫ জনের মধ্যে ১৮০ জন অস্ত্রসহ আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। বিজিবি সদস্য থাকবে ১২০ জন ও সাথে থাকবে র‌্যাব।
নির্বাচনে নাগদাহ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে মকলেছুর রহমান জোয়ার্দ্দার (ধানের শীষ), আবুল কালাম আজাদ (নৌকা), জাহাঙ্গীর আলম (গোলাপ ফুল), আবুল হোসেন (মোটর সাইকেল) ও দারুস সালাম (আনারস) প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপর প্রার্থী আলমগীর হোসেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। আইলহাস ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আব্দুল ওয়াহাব (ধানের শীষ), আব্দুল মালেক (নৌকা), রকিবুল হাসান (আনারস) ও মিনাজ উদ্দীন বিশ্বাস (চশমা) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বাঁকা ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আবুল কাশেম মুন্সী (ধানের শীষ), আব্দুল কাদের প্রধান (নৌকা) এবং হাফিজুর রহমান (মোটর সাইকেল) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হাসাদহ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে কামাল উদ্দীন সিদ্দীকী (ধানের শীষ), রবিউল ইসলাম (নৌকা), সিরাজুল হক (আনারস) এবং সোহরাফ বিশ্বাস (চশমা) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রায়পুর ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে আব্দুর রশীদ শাহ (আনারস), তাহাজ্জত হোসেন (নৌকা), মতিয়ার রহমান (ধানের শীষ) এবং মোহাম্মদ আলী (মোটর সাইকেল) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া ১৫টি সংরক্ষিত সদস্য পদে ৫২জন এবং ৪৫টি সাধারণ সদস্য পদে ২০০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রাজু আহমেদ বলেন, আইলহাস ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সচিব মহোদয়কে লিখিতভাবে অবগত করানো হয়েছে এবং নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।