এরশাদ-রওশন কথা বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় পার্টির দু কাণ্ডারি এইচএম এরশাদ ও রওশন এরশাদের মধ্যে সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। পারস্পরিক রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে এ অবস্থা। দুজনের মধ্যে এখন কথাবার্তাও বন্ধ। বারিধারা-গুলশান দূরত্ব মাত্র দু কিলোমিটার হলেও যোগাযোগ অনেকটা বিচ্ছিন্ন। এরশাদ থাকেন বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কে। অপরদিকে রওশন এরশাদ থাকেন গুলশানে। তারপরও এ দুজনের মধ্যে যোগাযোগ নেই বললেই চলে। একই অবস্থা সংসদেও। বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে রওশন এরশাদের অফিস তিন তলায়। এর নিচেই রয়েছে এইচএম এরশাদের অফিস। মাঝে দূরত্ব মাত্র কয়েকটি সিঁড়ি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউই একে-অপরের অফিসে ঢুঁ মারেননি। দুজনের এ দূরত্বের কারণে চলতি সংসদের প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টির এমপিদের মধ্যে তৈরি হয়েছে বিভক্তি। দু পন্থিতে বিভক্ত দলের ৩৪ জন এমপি। পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের পক্ষে রয়েছেন কয়েকজন। অপরদিকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশনের পক্ষে রয়েছেন দলের বেশির ভাগ এমপি। যারা এরশাদের নির্দেশ সরাসরি উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তারাই রয়েছেন রওশনের পক্ষে। সংসদে এসে ওইসব এমপি বসেন বিরোধী নেতার অফিসে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দেন সেখানে। এ সময় ভুলেও তারা দলের চেয়ারম্যানের অফিসে যান না।

অপরদিকে এরশাদের পক্ষের এমপিরা বসেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের জন্য বরাদ্দ করা অফিসে। দলের একাধিক এমপির সাথে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া যায়। তবে তাদের প্রত্যাশা দলের চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতার মধ্যকার এ দূরত্ব শিগগিরই অবসান হবে। দুজনের মধ্যে অভিমান কাজ করছে বলেও তারাও মন্তব্য করেন। এরশাদ ও রওশনকে সংসদে বরাদ্দ দেয়া অফিসের স্টাফদের সাথে কথা বলেও একই তথ্য পাওয়া যায়। ময়মনসিংহ-৮ থেকে নির্বাচিত এমপি ফকরুল ইমাম গতকাল বলেন, দুজনের মধ্যকার সম্পর্ক আসলে কোনো বিভেদ নয়। এটা অভিমান। রাজনীতি করতে গেলে এটা হওয়াটা স্বাভাবিক। তিনি বলেন, আপাতত উনারা দুজন পরস্পরের সাথে কথা না বললেও আগামী দু-এক সপ্তার মধ্যেই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। একই মন্তব্য করেন বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচিত নুরুল ইসলাম ওমর। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এটা সবাই জানে। ম্যাডামের সিদ্ধান্ত ছিলো নির্বাচনের পক্ষে। অপরদিকে দলের চেয়ারম্যান শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। বিষয়টা নিয়ে স্যার ও ম্যাডামের মধ্যে দুঃখ-কষ্ট তো থাকতেই পারে। আশা করি কয়েক দিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।