উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় খোলামেলাভাবে নকলের দায়ে ২ শিক্ষকসহ ৮ পরীক্ষার্থী বহিষ্কৃত

 

আনজাম খালেক: চুয়াডাঙ্গায় বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় নকল হচ্ছে অনেকটা খোলামেলাভাবেই। গতকালও চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে বিএ ও বিএসএস পরীক্ষায় নকল করার দায়ে দু শিক্ষকসহ ৮ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এভাবে খোলামেলাভাবে নকলের খবর পেয়ে স্বয়ং ঢাকা থেকে বাউবি’র ডেপুটি ডিরেক্টর চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজ পরিদর্শনে আসেন। তিনি পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের নির্দেশ দেন। তাতেও কোনো কাজ হয়নি। হরদম নকল চলছেই। পরীক্ষা শুরু থেকে এ পর্যন্ত এ কেন্দ্রে শিক্ষকসহ ৫২ জনকে বহিষ্কার করা হলো। অভিযোগকারীরা জানায়, একই দশা দামুড়হুদা ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজ ও আলমডাঙ্গা মহিলা কলেজ কেন্দ্রেরও।

সূত্র জানায়, গতকাল সকালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে সিভিক এডুকেশন-২ বিষয়ে পরীক্ষা চলছিলো। এ সময় অনেকটা খোলামেলা নকল চলছিলো ৩টি কক্ষেই। এসময় হঠাত করেই কেন্দ্রে প্রবেশ করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট চুয়াডাঙ্গার এনডিসি মুনিবুর রহমান। সচক্ষে দেখে তিনি নকল করার দায়ে ৫ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেন। নকলে সরাসরি সহযোগিতা করার অপরাধে ৪ নম্বর কক্ষের এক নারী শিক্ষকসহ ২ শিক্ষককেও বহিষ্কার করা হয়। বিকেলে এ কেন্দ্রে ইসলামিক ইস্টাডিজ-৪ বিষয়ে পরীক্ষা চলাকালীন নকল করার দায়ে আরো ৩ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়।

ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরু থেকেই ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করছেন এনডিসি মুনিবুর রহমান। তিনি জানান, পরীক্ষা শুরু থেকেই এ কেন্দ্রে খোলামেলাভাবেই নকল চলছে। এর সাথে সরাসরিভাবে জড়িত রয়েছেন শিক্ষকরা। যার ফলে একটু সুযোগ পেলেই শিক্ষার্থীরা দেদারছে নকল করে চলছে। পরীক্ষার প্রথম দিন গত ২৭ জুন নকলের দায়ে ২১ জনকে বহিষ্কার করা হয়। প্রথমদিনই এভাবে নকলের দায়ে শিক্ষার্থী বহিষ্কারের খবর পেয়ে পরদিন ২৮ জুন ঢাকা থেকে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর আসেন পরিদর্শনে। ওইদিনও ১৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর সংশ্লিষ্টদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিলেও তাতে কর্ণপাত করেননি দায়িত্বপ্রাপ্ত কক্ষ পরিদর্শক শিক্ষকেরা।এরপরও চলতে থাকে নকল। যার ফলে আবারো গত ৪ জুলাই ৫ জন, ৫ জুলাই ৫ জন ও গতকাল শুক্রবার ১৮ জুলাই ৮ জনসহ মোট ৫০ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। আর সরাসরি সহযোগিতার জন্য ২ শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমাদের কিছু করার নেই। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে গেলেই বিভিন্নভাবে বাধা আসে। আবার সঠিকভাবে দায়িত্ব করতে না পারলেও বহিষ্কার হতে হয়। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্য কুদরত ই খোদা জানান, চলতি বছরের ২৭ জুন থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রতি শুক্র ও শনিবার চলবে পরীক্ষা। পরীক্ষার সমাপনী হবে আগামী ২৫ অক্টোবর। চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে ৬ সিমেস্টারে মোট পরীক্ষার্থী রয়েছে এক হাজার ৪৫ জন।

সূত্র আরো জানায়, দামুড়হুদা ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজ ও আলমডাঙ্গা মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রেও খোলামেলা নকল চলছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসন খতিয়ে দেখে নকল প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে সচেতন অভিভাবকেরা আশা করেন।