উচ্চশিক্ষায় খালি থাকবে লাখের বেশি আসন

 

স্টাফ রিপোর্টার: উচ্চশিক্ষায় এ বছর লক্ষাধিক আসন খালি থাকবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসনসংখ্যা বাড়ানো, নতুন কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম শুরু হওয়া ও পুরনোগুলোতে আসন বাড়ানো এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কলেজ অধিভুক্ত করার কারণে আসনসংখ্যা বেড়ে গেছে। তবে কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যায়ের আসন খালি থাকার সম্ভাবনা নেই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন খালি থাকবে বলে ইউজিসি সূত্রে জানা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) হিসাবে জানা যায়, ৩৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স কলেজ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মিলিয়ে আসনসংখ্যা প্রায় চার লাখ ৫৬ হাজার, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসনসংখ্যা দুই লাখ ১০ হাজার এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি কলেজে আসন রয়েছে দুই লাখের কিছু কম। মোট দু হাজারের বেশি এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আসনসংখ্যা প্রায় সাড়ে আট লাখ। এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে সাত লাখ ৪৪ হাজার ৮৯১ জন। সে হিসেবে আসন খালি থাকবে লক্ষাধিক।

ইতোমধ্যে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েরই ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যেই অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম বিতরণ ও ভর্তি পরীক্ষা শেষ হবে। ভর্তি অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়ে চলবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, প্রকৌশল, কৃষি ও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একেকটি গুচ্ছের আওতায় এনে একটি পরীক্ষা নেয়া) না হওয়ায় এ বছর এইচএসসি ও সমমান পাস করা শিক্ষার্থীরা এখন ব্যস্ত- কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম তুলবেন তা নিয়ে। অনেকেই আট-দশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম কেনার প্রস্তুতি নিয়েছেন। তবে সব শিক্ষার্থীরই প্রধান টার্গেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি মেডিকেল কলেজসমূহ এবং বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। তবে এসব নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সীমিত হওয়ায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদেরও কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী বলেন, আমাদের আসনের কোনো সঙ্কট নেই। অনেক আসন এবারও খালি থাকবে। তবে কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিষয়ে হয়তো অনেকেই ভর্তি হতে পারবেন না। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে এ বছর অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েরই সিট বাড়ানো হয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন টাকা কম নেয়, সে বিষয়ে নজর দেয়া হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো ভালো বিষয়, প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে দ্রুত পরীক্ষা নেয়া ও ফলাফল দেয়া হয়, সেজন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।

ইউজিসির চেয়ারম্যান বলেন, গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা চালুর ইচ্ছা থাকলেও সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মতামত না পাওয়ায় তা এ বছর চালু করা যায়নি। আগামী বছর থেকে যেন এ পদ্ধতি চালু করা যায়, সে ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা চলছে। তবে অনেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে মূল্য দিতে চান না। এখনো অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের মূল্য বেশি।

ইউজিসির অতিরিক্ত পরিচালক (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) ফেরদৌস জামান বলেন, আমাদের হিসাবে ৭০ থেকে ৮০ হাজার আসন খালি থাকতে পারে। তবে অধিকাংশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে কয়েকটি সেশনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। অনেক শিক্ষার্থী যারা প্রাইভেটে পড়তে চায় বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কম, তারা ইতোমধ্যে ভর্তি হয়ে গেছে। আবার জানুয়ারিতেও নতুন সেশনে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারবে। এতে খালি আসনের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে। তবে এ আসন খালি থাকবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।