ইউএনও যখন নিরাপত্তাহীন তখন সাধারণ মানুষের কী অবস্থা!

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বক্তাদের ক্ষোভ

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় আইনশৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভার সভাপতিই যখন নিরাপত্তাহীন তখন সাধারণ মানুষের কী অবস্থা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তীব্র ক্ষোভ আর নিন্দা জ্ঞাপন করে গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুন-উজ্জামান। প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ আসাদুল হক বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর ভূমি কর্মকর্তা বদিউজ্জামান, ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হক হযরত, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কহিনুর বেগম ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত আলী। প্রধান অতিথি আসাদুল হক বিশ্বাস বলেন, সদর ইউএনওর বাসায় দুর্বৃত্তদের হামলা ও ডাকাতির ঘটনা মোটেও সামান্য নয়। তার বাসা থেকে যতসামান্যই টাকা-পয়সা, গয়নাগাটি ডাকাতি হোক না কেন। এটা সদর উপজেলা আইনশৃঙ্খলার ওপর কঠোর আঘাত। দেশ স্বাধীনের পর সরকারি কোনো কর্মকর্তার বাসায় এমন নগ্ন হামলা ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। মানুষের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিধানের নির্বাহী ক্ষমতা যার ওপর ন্যাস্ত তার বাসায়ই যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে উপজেলার সাধারণ মানুষ কাদের ভরসায় থাকবে? চলতি মাসে সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নসহ অনেক এলাকায় দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। চুরি, ছিনতাই আর ধর্ষণের ঘটনার তো ইয়ত্তা নেই। তাহলে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কাজটা কি? সেটা সকলের জানা দরকার।

মাসিক সভায় সদর থানা অফিসার ইনচার্জের দাখিলকৃত অপরাধ চিত্রে দেখা গেছে, গত মাসে ৩টি চুরি মামলা, ৩টি মাদকের মামলা, ৬টি চোরাচালান মামলা, ৪টি নারী নির্যাতন মামলা ও ২৩টি অন্যান্য মামলাসহ মোট ৪৫টি মামলা হয়েছে। যা আগের মাসের চেয়ে বেশি। চলতি মাসের অপরাধ চিত্রের সঠিক হিসেব জানা না গেলেও এ মাসে সদর উপজেলায় লাগাতার ডাকাতি, ছিনতাই আর শেষ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা কমিটির নিয়মিত সভাপতি ইউএনওর বাসায় ডাকাতির ঘটনা অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙেছে। যা সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। সদর উপজেলা অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত হোসেন ইউএনওর বাসায় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার মোটিভ উদঘাটনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। অপরাধী যেই হোক তারা ছাড় পাবে না। তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। মাসিক সভায় একই সাথে উপজেলা পরিষদ এলাকার বাউন্ডারি ওয়াল উঁচু করে নির্মাণ, পরিষদ এলাকায় বসবাসরত জনগণের সার্বিক তথ্য, পরিষদের সকল দপ্তরের নাইটগার্ডদের দায়িত্ব পালন বিষয়ে সঠিক তথ্য ও পুলিশ টহল জোরদার বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে দুর্বৃত্তদের নিশ্চিত খোঁজখবর, তাদের কথা-বার্তা, আচরণ থেকে প্রতীয়মান হয়েছে এ কাজে খুব কাছের মানুষদের সহযোগিতা আছে। এ সন্দেহের তীর নাইটগার্ডদের দিকেই নিক্ষিপ্ত বলে পুলিশ ও মাসিক সভায় বক্তাদের অভিমত।