আসছে লাগাতার আন্দোলন : ভোটের দিন গণকারফিউ ঘোষণা করতে পারে ১৮ দল

স্টাফ রিপোর্টার: একাদশ নয়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশ্নেই সরকারের সাথে সমঝোতার সদিচ্ছা জিইয়ে রেখে টানা আন্দোলনের ছক কষেছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দল। আন্দোলনের রূপরেখায় থাকছে শুক্রবারসহ লাগাতার অবরোধ, ঘেরাও, গণমিছিল। এ কর্মসূচি শুরু হতে পারে ২৮ ডিসেম্বর থেকে। আগামী ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন থাকবে গণকারফিউ। ওইদিন ভোটারদের ঘর থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানানো হবে। এর আগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। আর আন্দোলনের এ ছক রেখেই আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য রাখবেন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। বক্তব্যে তিনি নির্বাচন প্রশ্নে সরকারকে সমঝোতার শেষ আহ্বান জানাবেন।

এদিকে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের ব্যাপারে সমঝোতায় রাজি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। কিন্তু সেটি দশম নাকি একাদশ সংসদ নির্বাচন, এ প্রশ্নেরই মীমাংসা হচ্ছে না। তিন দফা বৈঠকে আলোচনা হলেও এ নিয়েই দু পক্ষের নেতারা একমত হতে পারেননি। অনেকের মতে, এ প্রশ্নে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে এক ধরনের অনানুষ্ঠানিক দরকষাকষি এখনও চলছে। প্রতিকূল অনেক পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ায় দশম সংসদ নির্বাচন বাদ দিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে সমঝোতা চুক্তি করতে চাইছে আওয়ামী লীগ। চাইছে নির্বিঘ্নে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর পাশাপাশি এ নির্বাচনকে বৈধ করতেও। অপরদিকে নবম সংসদ ভেঙে দিয়ে দশম সংসদ নির্বাচন নিয়েই সমঝোতা চায় বিএনপি। পাশাপাশি দশম নির্বাচনকে তারা বৈধতা দিতেও রাজি নয়। তাছাড়া আওয়ামী লীগকে তারা বিশ্বাসও করতে পারছে না। দলটির নেতারা বলছেন, সমঝোতার কথা বলে কার্যত উত্তপ্ত পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করতে চাইছে সরকার। কিন্তু ক্ষমতায় বসতে পারলে আগের মতোই তারা নির্যাতন-নিপীড়নের পথ বেছে নেবে।

সূত্র জানায়, দল দুটির দু ধরনের এ প্রস্তাব বা অবস্থান নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়েই সর্বশেষ ১৩ ডিসেম্বরের সমঝোতা বৈঠক শেষ হয়। উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা বৈঠকে বলেন, ১০ম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান প্রায় শেষ হওয়ার পথে। আসুন আমরা একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলি। জবাবে বিএনপি জানায়, সমঝোতা করতে হলে দশম সংসদ নির্বাচন নিয়ে করতে অসুবিধা কোথায়! তারা জানান, দশম সংসদকে কিছুতেই তারা বৈধতা দেবে না। ওই নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যতে অনেক জটিলতা তৈরি হবে বলে মত দেন তারা। সূত্র জানায়, জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর মধ্যস্থতায় শুরু হওয়ার পর তৃতীয় দফার বৈঠক কার্যত ওই আলোচনার মধ্যদিয়ে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। বিএনপি জানায়, আলোচনা ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি তারা আনুষ্ঠানিকভাবে মিডিয়ায় জানিয়ে দেবে। কিন্তু উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আলোচনা ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে না জানাতে অনুরোধ করেন। ফলে পরবর্তীকালে আর কোনো বৈঠক না হওয়া সত্ত্বেও দুটি দলের কোনো নেতাই আজ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়ে কিছু বলেননি।