আলমডাঙ্গা বণ্ডবিলের আমবাগান থেকে উদ্ধারকৃত লাশের পরিচয় মিলেছে

 

প্রেমিক রানার ডকে সাড়া দিয়ে হত্যার শিকার রজিনা

আলমডাঙ্গা ব্যুরো/জামজামি প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গা বন্ডবিলের আমবাগান থেকে উদ্ধারকৃত লাশের পরিচয় মিলেছে। আলমডাঙ্গা রামদিয়ার রিয়াজউদ্দিন ও মনোয়ারা বেগম লাশ দেখে তাদের মেয়ে রোজিনার লাশ বলে শনাক্ত করেন। একইসাথে অভিযোগ তুলে বলেন, রানা ফুঁসলিয়ে দু সন্তানের জননী রোজিনাকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশ রানাকে গ্রেফতারের পাশাপাশি হত্যার মোটিভ উদ্ধারে জোর তৎপরতা শুরু করেছে।

নৃশংসতার শিকার রোজিনার পিতা বলেছেন, রোজিনা তার চাচাতো বোনের বিয়ে উপলক্ষে রামদিয়ায় বেড়াতে এসেছিলো। রানা ফুঁসলিয়ে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। রানাসহ তার লোকজন হত্যা করেছে। এ অভিযোগ জানিয়ে আসামিকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি তুলেছেন নিহতের পিতা-মাতা। আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রফিকুল ইসলাম দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা খাসকররা ইউনিয়নের রামদিয়া গ্রামের কৃষক রিয়াজুদ্দিন মণ্ডলের মেয়ে রোজিনা (২৫) । মা মনোয়ারা জানান, ৮/৯ বছর আগে রোজিনার বিয়ে দেয়া হয় হরিণাকুণ্ডুর দৌলতপুর ইউনিয়নের মহারাজপুর গ্রামের মুছা মণ্ডলের ছেলে নান্টুর সাথে। এ ঘরে আসে ছেলে রাজন (৭) ও সাজন (৫)। চাচাতো বোনের বিয়েতে পিতার বাড়িতে বেড়াতে আসে রোজিনা। এ সময় পুরোনো সর্ম্পকের জের ধরে মোবাইলফোনে ফুঁসলাতে থাকে হরিণাকুণ্ডুর ধুলিয়ার সোহরাব সর্দারের ছেলে রানা (২৬)। গত শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে রানা ডেকে নেয় তাকে। তখন বিয়ে বাড়িতে ব্যস্ত ছিলো পরিবারের সকলে। রানার ডাকে সাড়া দিয়ে বাপের বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি সে। রাতে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে অনেকেই হতাশ হন। রানার কাছে ওই রাতে মোবাইলফোন করে রোজিনাকে বাড়ি ফিরিয়ে দেয়ার অনুরোধও জানানো হয়। তাতে সাড়া মেলেনি।

এদিকে গতকাল সোমবার সকালে দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় ছবিসহ প্রতিবেদন পড়ে চমকে ওঠেন নিকটজনেরা। লাশ শনাক্ত করতে রোজিনার পিতা ও মা প্রথমে আলমডাঙ্গা থানায় হাজির হন। পরে চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে ছোটেন। এ সময় রোজিনার মা আরো বলেন, ওর (রোজিনার) নানাবাড়ি হরিণাকুণ্ডুর তাহেরহুদা ইউনিয়নের ধুলিয়ায়। সেখানে আসা-যাওয়ার সময়ই সোহরাব সর্দারের ছেলে রানার সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ৮/৯ বছর আগে সে সময় একদা প্রেম ঘনিষ্ঠতায় নিজের গলা থেকে সোনার চেন খুলে প্রেমিক রানার গলায় পরিয়ে দেয় রোজিনা। রানার প্রেম মেনে না নিয়ে রোজিনাকে বিয়ে দেয়া হয় মহারাজপুর গ্রামের মুছা মণ্ডলের ছেলে নান্টুর সাথে। এ সংসারে ছেলে ও মেয়ে আসার পরও রানা পিছু ছাড়েনি। শেষ পর্যন্ত ডেকে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে বলে ধারণা করছে নিকটজনেরা।

 

উল্লেখ্য, আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার বণ্ডবিল গ্রামের খেদ আলীর আমবাগানে অজ্ঞাত যুবতীর গলায় ফাঁস লাগানো লাশ দেখতে পেয়ে গ্রামবাসী থানায় খবর দেয়। সকালেই থানা পুলিশ বণ্ডবিল বাজার ছেড়ে ফরিদপুরের দিকে একটু গিয়েই অনেক লোকের জটলা দেখতে পায়। থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট সংগ্রহ ও লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে নেয়। গতকাল বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফনের সময় শনাক্ত হয়। জান্নাতুল মাওলা কবরস্থানেই দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মানবতা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক অ্যাড. মানি খন্দকার, সহসভাপতি অ্যাড. কাইজার হোসেন জোয়ার্দ্দার শিল্পী, অ্যাড. জিল্লুর রহমান, মিডিয়া কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ ও হাফিজ উদ্দীন হাবলু।