আলমডাঙ্গা পাইকপাড়া গ্রামে ভুল চিকিৎসায় দিনমজুরের মৃত্যুর অভিযোগ

বহুল আলোচিত হাতুড়ে ডাক্তার চুন্নু মালিথা এবার গ্যাঁড়াকলে : এলাকায় তোলপাড়

 

ঘোলদাড়ী প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলমকে সাথে নিয়ে সদরুল নিপুল/অনিক সাইফুল: আলমডাঙ্গার পাইকপাড়া গ্রামে বহুল আলোচিত হাতুড়ে ডাক্তার চুন্নু মালিথার বিরুদ্ধে আবারো ভুল চিকিৎসায় রোগীকে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। গত ৭ মাস আগে পাইকপাড়া গ্রামের ৬ বছরের এক শিশুকে ভুল চিকিৎসায় মেরে ফেলার ৭ মাস পর একই গ্রামের এক দিনমজুরকে ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হওয়ায় এলাকায় আবারো সমালোচনার পাত্র হয়ে দাঁড়িয়েছেন চুন্নু ডাক্তার। দিনমজুরের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকার জনগণ অভিযুক্ত হাতুড়ে ডাক্তারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। চুন্নু ডাক্তার নিজেকে বাঁচাতে প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাস ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের ক্যানালপাড়ার মৃত সবেদ আলীর মেজ ছেলে দিনমজুর আব্দুল জলিল (৪০) গতকাল বৃহস্পতিবার সকালের খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে বের হন কামলা খাটার জন্য। আলমডাঙ্গা জেহালার পিটিআই মোড়ের কামলার হাটে যান তিনি। সেখানে কোনো কাজ না পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। বেলা ১১টার দিকে আব্দুল জলিল পেটে ব্যথা অনুভব করেন। তার পরিবারের লোকজন একই গ্রামের গ্রাম্য চিকিৎসক আশাবুল হক মালিথা ওরফে চুন্নু ডাক্তারকে ডাকেন। তিনি বেলা পৌনে ১২টার দিকে জলিলের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে জলিলের ডান হাত, বাঁ হাত ও মাজায় একটি করে মোট ৩টি ইনজেকশন পুশ করেন। কিছুক্ষণের মাথায় রোগী আব্দুল জলিল বুক জ্বলে গেলো পুড়ে গেলো বলে আর্তনাদ করতে থাকেন। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় জলিলকে গোসল করানো হয়। এ সময় তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে চুন্নু ডাক্তার সটকে পড়েন।

এ সময় গ্রামের কয়েকজন লোক এসে উপস্থিত সাংবাদিককে জানায়, জলিলের স্ত্রী মানসিক প্রতিবন্ধী। তিনি কিছু জানেন না। এ সময় পাইকপাড়া গ্রামের অনেক জনগণ চুন্নু ডাক্তারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। গত ৭ মাস আগে একই গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মিলনের ছেলে মিতুলকে (৬) ভুল চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে।

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিকেল  অফিসার ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষ মাথাভাঙ্গাকে জানান, সঠিক জায়গায় যদি ইনজেকশন না দেয়া হয় এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ইনজেকশন যদি রোগীর শরীরে পুশ করা হয়; তাহলে রোগী মারা যেতে পারে। ৩ সন্তানের জনক মৃত আব্দুল জলিল হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় এবং প্রভাবশালীদের চাপের মুখে মামলা করতে সাহস পাননি। গতকাল সন্ধ্যায় গ্রাম্য কবরস্থানে জানাজা শেষে নিহতের লাশ দাফন করা হয়।