আলমডাঙ্গায় বিক্ষোভ সমাবেশ :ভাঙচুর :আজ পুনরায় বিক্ষোভ সমাবেশ

 

অর্পিত সম্পত্তি বিষয়ক মামলায় নির্ধারিত দিনের আগেই ভারতীয় দু নাগরিক গোপনে আদালতে হাজির

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে মামলার নির্ধারিত তারিখের ১০ দিন আগে গোপনে ভারতীয় দু নাগরিককে আদালতে হাজিরা দেয়ার সুযোগ করে দেয়ায় গতকাল সন্ধ্যায় আলমডাঙ্গায় আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠন বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা পৌরসভা অফিসও গিরিধারী লাল মোদীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-বাড়িতে হামলা চালায়। বিক্ষোভকারীরা শহরময় খোঁজ করে বেড়ায় ভারতীয় নাগরিকের পক্ষের উকিল ও দালালদের। এ সময় শহরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় পুনরায় ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

জানাগেছে, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যাবর্তণ আইন পাশের পর আলমডাঙ্গার শশকোটি টাকার অর্পিত সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে স্থানীয় একটি দালালচক্র কোটি কোটি টাকার মিশন নিয়ে মাঠে নামে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তারা ওই সম্পত্তির পূর্ব মালিকদের উত্তরসূরীদের যারা বর্তমানে ভারতের বিশিষ্ট নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও এদেশের নাগরিকত্ব দিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। প্রথমে তারা ভুয়া পরিচয় দিয়ে স্থানীয় পৌরসভা থেকে নিয়মবহির্ভুতভাবে প্রত্যায়নপত্র সংগ্রহ করে। আলমডাঙ্গা শহরে স্থায়ী বসবাস ও চাকরি করার মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করানোর অপচেষ্টা করে। বিষয়টি জানাজানি হলে নাম কর্তনের জন্য সে সময় আন্দোলন শুরু হয়। করা হয় মানববন্ধন। সর্বদলীয় আন্দোলনের ফলে আলমডাঙ্গা নির্বাচন অফিস ও চুয়াডাঙ্গা নির্বাচন অফিস পৃথক ৩টি তদন্ত করে ভারতীয় দু নাগরিকের দেয়া তথ্যের সত্যতা না পেয়ে ভোটার তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দিতে সুপারিশ করে নির্বাচন কমিশনে পাঠায়। ওই দু বিদেশির নাম ভোটার তালিকা থেকে যাতে কর্তন করতে বিলম্ব করানো যায়, সেজন্য ভারতীয় নাগরিকের পক্ষে গিরিধারী লাল মোদী হাইকোর্টে স্টে চেয়ে রিট করেছে। এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা জর্জ আদালতে বিচারাধীন মামলায় ভারতীয় দু নাগরিককে সশরীরে আদালতে হাজির হতে গত ১৬ জুলাই নির্দেশ দেয়া হয়। সে সময় হাজির হয়নি ভারতীয় দু নাগরিক। তাদের পক্ষের উকিল নতুন করে সময় প্রার্থনা করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত নতুন করে আগামী ২১ আগস্ট হাজির হওয়ার দিন ধার্য্য করেন আদালত। মামলার নির্ধারিত তারিখের বেশ কয়েকদিন আগে গতকাল ভারতীয় নাগরিক দুজন আদালতে হাজির হয়। অভিযোগ ওঠে, প্রতিপক্ষের আইনজীবীকেও বিষয়টি জানানো হয়নি। অত্যন্ত সংগোপনে এ কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রতিপক্ষরা। বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে আলমডাঙ্গার বহু মানুষ। গতকাল সন্ধ্যায় আওয়ামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠন শহরে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। জেলা আওয়ামীলীগ সহসভাপতি আওরঙ্গজেব মোল্লা টিপু, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি হাসান কাদির গনু, উপজেলা চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দীনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ শহর প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় অফিসে ফিরে সমাবেশ করে। পরে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় পুনরায় ব্যাপক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয়া হয়। আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের উপজেলার সমস্ত নেতাকর্মীকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়।

এদিকেবিক্ষোভ মিছিলকালে দু ভারতীয়ের পক্ষাবলম্বন করার অভিযোগে আলমডাঙ্গা পৌর মেয়র মীর মহিউদ্দীনের বাড়িতে ও গিরিধারী লাল মোদীর ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানেবাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। ভাঙচুর করা হয়েছে আলমডাঙ্গা পৌরসভা অফিসের সম্মেলন কক্ষ। বিক্ষোভকারীরা ওই সময় ভারতীয় দু নাগরিকসহ তাদের পক্ষের আইনজীবী, ভারতীয় দু নাগরিককে অবৈধভাবে প্রত্যয়নপত্র প্রদানকারী পৌরসভার কাউন্সিলর দীনেশ বিশ্বাসকে শহরময় খুঁজে বেড়ায়। সারা শহরজুড়ে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। রাতেই পুলিশ সুপার ও সার্কেল আলমডাঙ্গায় যান।