আলমডাঙ্গায় আড়াই ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক দুর্ঘটনায় বিয়াই-বিয়ান নিহত

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বিয়াই মোয়াজ্জেমের নিহত হওয়ার খবরে পৃথক মোটরসাইকেলযোগে রওনা হয়ে মোটরচালিত ভ্যানের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন আলেয়া খাতুন নামক বিয়াইন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে আনুমানিক আড়াই ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক দুর্ঘটনায় দুজনের নিহত হওয়ার খবর আলমডাঙ্গার কালীদাসপুর ও পার্শ্ববর্তী মিরপুর শুকচায় নেমে আসে শোকের ছাঁয়া।
বিকেল ৩টার দিকে দাওয়াতে শরিক হয়ে বাড়ি আলমডাঙ্গার কালিদাসপুর ফেরার পথে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত হন মোয়াজ্জেম আলী (৬০)। তিনি কালিদাসপুরের মৃত এরশাদ আলীর ছেলে। পেশায় ছিলেন মিষ্টি ব্যবসায়ী। তার নিহত হওয়ার খবরে কুষ্টিয়া মিরপুরের শুকচা গ্রাম থেকে নাতির মোটরসাইকেলে কালিদাসপুরের উদ্দেশে রওনা হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন আলেয়া খাতুন। তিনি শুকচা গ্রামের সেনা সদস্যের স্ত্রী।
প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গার কালিদাসপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ার মৃত এরশাদ আলীর ছেলে মিষ্টি ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেম আলী (৬০) গতকাল শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে পার্শ্ববর্তী এলাকায় খানা খেতে যান। খানা খেয়ে বেলা ৩টার দিকে বাড়ি ফেরেন। পৌনে ৪টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে চায়ের দোকানে যাচ্ছিলেন। চুয়াডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের কালিদাসপুর মোড়ের নিকটবর্তী স্থানে রাস্তা পার হওয়ার সময় পেছন দিক থেকে একটি দ্রুতগামী মোটরসাইকেল তাকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এ সময় রোডের ওপর ছিটকে পড়লে তার মৃত্যু ঘটে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে মোটরসাইকেলের ঘাতক চালক সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। ঘাতক চালকের পরিচয় সম্পর্কে তথ্য দিতে প্রায় সকলেই অনীহা দেখিয়েছেন। তবে প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে ঘাতক মোটরসাইকেল চালকের নাম না প্রকাশ করলেও এতোটুকু জানিয়েছেন যে, ঘাতক মোটরসাইকেল চালকের পেছনে তার স্ত্রী বসে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে ঘাতক মোটরসাইকেল চালক স্থানীয় ছেলে। ফলে কেউ সাংবাদিকের নিকট মুখ খুলছে না। গতকাল সন্ধ্যায় নিহত মোয়াজ্জেম আলীর বাড়ি ছুটে গেলে দেখা যায়- মোয়াজ্জেম আলীর লাশ দাফনের ব্যবস্থা করতে সকলেই ব্যস্ত। আলমডাঙ্গা থানার এসআই জিয়াউর রহমান সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন- রোডে একজন মরে পড়ে থাকার সংবাদ পেয়ে ছুটে এসেছি। কিন্তু নিহতের স্বজনেরা কেউ মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত হওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করছেন না। বরং স্ট্রোক করে মৃত্যু হয়েছে বলে জানাচ্ছেন। নিহতের শরীরেও কোনো ক্ষত নেই।
এদিকে মোটর সাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধ মিষ্টি ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেম আলীর মৃত্যু সংবাদ বিকেল ৪টার দিকে সম্পর্কে তার বিয়াই মিরপুর উপজেলার শুকচা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মুক্তিযোদ্ধা শাহাদত হোসেনের বাড়ি গিয়ে পৌঁছে। সংবাদ পেয়ে প্রায় সাথে সাথে তড়িঘড়ি করেই নাতি ছেলে শাহীনের মোটরসাইকেলে চেপে ছুটে যাচ্ছিলেন সেনা সদস্যের স্ত্রী আলেয়া খাতুন (৫০)। পথিমধ্যে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আলমডাঙ্গার মোনাকষা মোড়ে পৌঁছুলে নিয়ন্ত্রণহীন এক মোটরচালিত ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন দু সন্তানের জননী আলেয়া খাতুন। মাথা ফেটে ঘিলু বের হয়ে যায়। তাকে সংজ্ঞাহীনভাবে উদ্ধার করে আলমডাঙ্গার একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আহত মোটরসাইকেল চালক শাহীনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।