আলমডাঙ্গার ঘোলদাড়ি বাজারে হারানো টাকা পাইয়ে দিতে ভণ্ড কবিরাজের ভণ্ডামি

রুটিপড়া খাইয়ে বিপাকে কবিরাজ : পালিয়ে রক্ষা

 

সদরুল নিপুল/অনিক সাইফুল/জাহাঙ্গীর আলম: আলমডাঙ্গার ঘোলাদাড়ি বাজারে একমাস আগে হারানো ৯২ হাজার টাকা ফেরত পাইয়ে দেয়ার কথা বলে কবিরাজি করতে এসে বিপাকে পড়েছেন এক কবিরাজ। চোর সন্দেহ করে ১৫ জন নারী ও ১৮ জন পুরুষকে রুটিপড়া খাওয়ানো হয়। রুটি খেয়ে কারো কিছুই না হলে জনরোষে পড়েন ভণ্ড কবিরাজ মোহন। তাকে তাড়িয়ে এলাকাছাড়া করেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। কবিরাজের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে শামসুল আলম গণধোলাই থেকে বাঁচতে পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে রক্ষা পেয়েছেন। এ নিয়ে  এলাকায় উঠছে সমালোচনার ঝড়।

জানা গেছে, প্রায় একমাস আগে বড় পাইকপাড়া গ্রামের মালেকের ছেলে জাহাঙ্গীর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঘোলদাড়ি বাজারে দোকানের ব্যবসার কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় বাজারের বিশ্বাস বিল্ড অ্যান্ড ট্রেডার্সের কাছে টিউবওয়েলের মাথায় ৯৩ হাজার টাকাভর্তি ব্যাগ রেখে হাত-মুখ ধুয়ে বাড়ি চলে আসেন। টাকার ব্যাগের কথা মনে পড়ায় ব্যাগটি খুঁজতে যান। অনেক খোঁজাখুজি করেও ব্যাগটি না পেয়ে বাজারের কয়েক দোকানদার ও এলাকার মহিলাসহ কয়েকজনকে সন্দেহ করেন। পরে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার বাগারপাড়া গ্রামের কথিত কবিরাজ মোহন ফকির ওরফে মোহন কবিরাজ ওরফে মোহন পাগলের কাছে যান। গতকাল শনিবার বেলা ৫টার দিকে ঘোড়দাড়ি বাজারের বিশ্বাস ট্রেডার্সের পেছনে জনতার ভিড়ে কথিত কবিরাজ রুটিপড়া নিয়ে হাজির হন। বলা হয়, যে ব্যক্তি টাকা পেয়েছে রুটি খেলে তার গলা আটকে যাবে। টাকা না দেয়া পর্যন্ত রুটি আটকে থাকবে। এ সময় উপস্থিত জনতার সামনে কুটিপাইকপাড়ার মনি, ইব্রাহিম, লুৎফর, নিজাম, হাসান, জাহাঙ্গীর, বিল্লাল, সমির, আকবার, মিলিফা, শাহিন, হাসিবুল, ইউনুচসহ মহিরন, রুসিয়া, জিতিরন, মিহিরন, লাইলি, আকবারের মা, ছাইয়াসহ ১৮ জন পুরুষ ও ১৫ জন মহিলাকে সন্দেহ করে জনসমাবেশে নেয়া হয়। উপস্থিত জনতার সামনে কবিরাজ তার রুটিপড়া খাওয়ান। এতে কারো কোনো অসুবিধা না হলেও শুকনো রুটি খেতে গিয়ে একটু অসুবিধায় পড়েন প্রায় ৭০ বছর বয়স্ক বৃদ্ধা মাহিরন। তাকে নিয়ে কটুকথা বলায় কুটিপাইকপাড়া গ্রামের মৃত গোলাম রুহুলের ছেলে শামসুল আলম জনরোষে পড়েন। জনতার তাড়া খেয়ে ঘোলদাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির মধ্যে পালিয়ে রক্ষা পান তিনি। এ সময় জনতাড়া খেয়ে ভণ্ড কবিরাজ মোহন পালিয়ে যান। এ ব্যাপারে ঘোলদাড়ি ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ এএসআই লিয়াকত বলেন, কবিরাজ দিয়ে যদি চোর ধরা যায় তবে পুলিশের কাজ কী? সরকার টাকা খরচ করে পুলিশ না রেখে কবিরাজ রাখলেই তো পারে। গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে হয়রানি ও সম্মানহানি করা এমন কবিরাজ ও কবিরাজের ভণ্ডামিকে প্রশ্রয় দেয়া ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতনমহল।