আলমডাঙ্গার কৃষ্ণপুরের ভণ্ড কবিরাজ ইসমিতার প্রতারণা ব্যবস্যার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব কয়েকটি পরিবার ॥ ইউনিয়ন পরিষদে মামলা

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: আমাদের বর্তমান সমাজে কিছু কবিরাজের আবিষ্কার হয়েছে যারা পবিত্র কোরআন শরীফ পড়া জানেনা, কোনো সুরা কেরাত দোয়া দরুদ জানেনা, কিন্তু পাচঁ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। নাম মাত্র মুসলিম তারা। শুধু মাত্র মুখে হাবিজাবি বলে মুখ নাড়িয়ে পানিতে ফু দিয়ে পানি পড়া দিয়ে এলাকার সহজ সরল মানুষ গুলোকে ধোকা দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কেউ কেউ জিনের কথা বলে প্রতারণার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনি কবিরাজের সন্ধান পাওয়া গেছে আলমডাঙ্গা কৃষ্ণপুর গ্রামে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জের হৈদারপুর গ্রামের জিয়া উদ্দিনের মেয়ে কাজলীর (২৫) বিয়ে হয় জোড়গাছা গ্রামের রকিবুলের সাথে। তাদের সংসারে সন্তান রয়েছে। কিছুদিন ধরে তাদের সংসারে বনিবনা হচ্ছিলো না। কাকলীর স্বামী তাকে আর নিতেও আসেনি, পিতার বাড়ি থাকে সে। স্বামীকে ফেরত পেতে কৃষ্ণপুর গ্রামের ওয়ারেসের স্ত্রী কবিরাজ ইসমিতার (৪৫) স্বরনাপন্ন হয় সে। তার স্বামীকে ফেরত পেতে হাদিয়া স্বরুপ মোটা টাকা দাবি করে সে। কবিরাজ জানাই জিনের মাধ্যমে তোমার স্বামী ফেরত আসবে এবং তোমার বসে চলবে তোমাকে নিয়ে সংসার করবে। প্রথমে ২০ হাজার পরে কয়েকদফা মোট ৬০ হাজার টাকা ৩ জোড়া কানের দুল ও সোনার চেইন হাতিয়ে নেয় কবিরাজ ইসমিতা। দীর্ঘদিনেও কাকলীর স্বামী ফিরে না আসায় হতাশ হয়ে পড়ে সে। গ্রাম্য মানুষ ও প্রতিবেশিদের কাছে থেকে বুঝতে পারে সে ভ- কবিরাজের ধোকায় পড়েছে। যখন তার ভুল বুঝতে পারে তখন আর কিছুই করার নেই। কবিরাজের বাড়িতে হাদিয়ার টাকা ও সোনার গয়না ফেরত চাইতে গেলে সব কিছু অস্বীকার করতে থাকে। উপায় না বিচারপতিদের দ্বারস্থ হয়। জেহালা ইউনিয়ন পরিষদে মামলা দায়ের করেছে সে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কবিরাজ ইসমিতা জানায়, আমার কাছে কোনো জিন নেই। আমি পাচঁ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে পানিতে ফু দিয়ে দিই এতেই সব রোগ ভালো হয়ে যায়। কি দোয়া পড়ে ঝাঁড়ফুক করেন জানতে চাইলে বলেন, আমি মুর্খ্য মানুষ লেখাপড়া জানিনে, বিসমিল্লাহ ও আলহামদু সুরা জানি সেটা পড়েই ফু দিই। সুরা না জেনে পাচঁ ওয়াক্ত নামাজ কেমন করে পড়েন, এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চুপ থাকেন কবিরাজ ইসমিতা।
এলাকাবাসী জানায়, ভ- কবিরাজ ইসমিতা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় জিন আছে বলে বাড়ির পাশে আসন করে গ্রামের সহজ সরল মহিলাদের ঠকিয়ে টাকা কামিয়ে আসছে। কৃষ্ণপুর ও আশপাশের মানুষের কাছে থেকে প্রতারণার ফাঁদ পেতে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। কয়েকবার কৃষ্ণপুর গ্রামের লোকজন প্রতারণার অভিযোগ তুলে কবিরাজ ব্যবসা বন্ধ করেও আবারও সে নতুন করে সেই প্রতারণার ফাঁদ পেতে বসে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করেছে এলাকার ভুক্তভোগীরা।