আমন্ত্রণ বহাল আছে : আলোচনা সংবিধানের ভিত্তিতে

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া না দিয়ে হরতাল পালন করলেও এখনও বিএনপিকে দেয়া আলোচনা ও নৈশভোজের আমন্ত্রণ বহাল আছে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। একই সাথে সংবিধানের ভিত্তিতে আলোচনা হবে বলেও জানিয়েছে দলটি। গতকাল রোববার বিকেলে দলীয় সভানেত্রীর ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী একথা জানান।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমরা আশা ছাড়িনি। আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করে নেইনি। তিনি বলেন, অধৈর্য হয়ে জনগণকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দেবো, এমন রাজনীতি আমরা করি না। প্রয়োজনে যতো ধরনের উদ্যোগ নেয়ার আমরা নেব। আলোচনা গণতন্ত্রের রাজনীতিতে সহায়ক। আমরা কখনও পরিহার করবো না। আর আমাদের ইচ্ছা আছে বলেই বারবার আলোচনার কথা বলছি। হরতালের পর সংলাপের জন্য আবার আহ্বান করা হবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের দল ও ১৪ দলের মধ্যে আলোচনার প্রয়োজন আছে। তবে আমরা ইতিবাচক ধারায় চলতে চাই। সংবিধানের বাইরে কোনো আলোচনা হতে পারে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভিত্তি সংবিধান। তবে নেতিবাচকভাবে কিছু দেখবো না, ইতিবাচক থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করবো। মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমরা ধৈর্য ধারণ করে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিচ্ছেন। এভাবেই আমরা এগিয়ে যাব। নির্বাচন হবেই। বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সংঘাতের পথ পরিহার করুন। গণতন্ত্রের পথে আসুন। জনগণ যে রায় দেয় তা মেনে নিন। এটাই আমাদের আহ্বান। আওয়ামী লীগের এ নেতা অভিযোগ করে বলেন, দু নেত্রীর ফোনালাপের সময় বিরোধীদলের নেত্রীর সৌজন্যতাবোধ দেখা যায়নি। তার কথার মধ্যে শিষ্টাচারের অভাব ছিলো। তিনি বলেন, দুজনের ফোনালাপের সময় বিরোধীদলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যাবাদী বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী যখন বলছিলেন আমি ফোন করে আপনাকে পাইনি। বিরোধীদলীয় নেতা বলেছেন, ‘আপনি মিথ্যা কথা বলছেন’। একটি রাজনৈতিক দলের সভাপতিকে এভাবে মিথ্যাবাদী বলা কোনো ধরনের শিষ্টাচার আমাদের জানা নেই। তাছাড়া কারও লাল টেলিফোন এভাবে নষ্ট হওয়ার কথা নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, ইদানীং বিরোধীদলীয় নেতার হিসাবে গরমিল হচ্ছে। তার দিন তারিখ ঘণ্টা খেয়াল থাকে না। ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিরোধী দলের হরতালের কারণে পাসের হার কমছে। তারা বলছে, বৃহত্তর স্বার্থে ছাড় দিতে। একজন ছাত্রের জীবনের পাস করা ছাড়া আর বড় স্বার্থ আছে বলে আমার জানা নেই।

হরতালের সহিংসতায় যশোরে আলমগীর হোসেন নামে একজন নেতা মারা গেছেন। বিক্ষিপ্তভাবে ভাঙচুর হয়েছে। ট্রেনে হামলা করেছে পিকেটাররা। টিভি সেন্টারে ককটেল নিক্ষেপ করে আহত করা হয়েছে সাংবাদিকদের। এসব ঘটনার নিন্দা জানান তিনি। তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক নিহত ও আহত হয়েছেন। এখন দেশে তো কোনো যুদ্ধ হচ্ছে না। কেন তারা আহত হবে? আমরা এর নিন্দা জানাই। আর আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাই। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, এনামুল হক শামীম, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজ প্রমুখ।