আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্ত : সাবেরার স্বামী পিলু ও সতিন মাছুরাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হচ্ছে

 

স্টাফ রিপোর্টার: দুর্ঘটনার কথা বলা হলো অথচ মোটরসাইকেল অক্ষত থাকলো। আরোহী দ্বিতীয় স্ত্রী সাবেরা খাতুন ক্ষতবিক্ষত হয়ে মারা গেছে বলে দাবি করা হলেও স্বামী নজরুর ইসলাম পিলু রক্তাক্ত হলো না। কেনো? সাবেরা খাতুনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ফেলে রেখে দুর্ঘটনা বলে চালানো হচ্ছে। এ অভিযোগ তুলে সাবেরা খাতুনের চাচা বাদী হয়ে আজ রোববার আদালতে মামলা দায়ের করছেন।

মামলায় নজরুর ইসলাম পিলু, তার প্রথম স্ত্রী মাছুরা ও ফরজ মেম্বারকে আসামি করা হতে পারে। এ তথ্য জানিয়ে মানবতা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক অ্যাড. মানি খন্দকার বলেছেন, আবেদনের প্রেক্ষিতে মানবতা সংস্থা আইনগত সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। মামলা দায়েরের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আজ আদালতে মামলার আরজি পেশ করা হবে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাঁকা ব্রিকফিল্ডপাড়ার নজরুল ইসলাম পিলু ব্যবসায়ী। তার প্রথম স্ত্রী ঘরে রেখে আনুমানিক ১৬ বছর আগে সোরাইয়া খাতুন সাবেরাকে বিয়ে করেন। সাবেরার রয়েছে এক পুত্রসন্তান। সে বর্তমানে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। গত ২৪ জুন আত্মীয়বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে পিলু তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবেরাকে সাথে নিয়ে বের হন। রাত ৮টার দিকে ছেলে মোবাইলে মায়ের খোঁজ নেয়। রাতে আসতে পারবে না, সকালে বাড়ি ফিরবে বলে জানান পিতা পিলু। সকাল হওয়ার আগেই রাত ৩টার দিকে বাঁকা ব্রিকফিল্ডের অদূরে রাস্তায় সাবেরার লাশ পাওয়া যায়। মোটরসাইকেলযোগে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় সাবেরা নিহত হয়েছে বলে জানিয়ে পিলুও আহত বলে জানিয়ে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। পরে অবশ্য তাকে যশোরে নেয়া হয়। বুধবার সাবেরার লাশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত করা হয়। সাবেরা জীবননগরের উথলী ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে।

লাশ উদ্ধারের পর থেকেই সাবেরার পিতা পক্ষ অভিযোগ তুলে বলে, নজরুল ইসলাম পিলু তার প্রথম স্ত্রীসহ অন্যদের সাথে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশ অবশ্য থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু করে জানায়, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। পুলিশের এ কথায় সন্তুষ্ট নন সাবেরার ভাই হাতেম, চাচা বজলুর রহমান ও নানি জুরমন বিবি। এরা আদালতে মামলা দায়েরের কথা জানিয়ে মানবতা সংস্থায় আইনগত সহায়তা চেয়ে আবেন করেন। মানবতা সংস্থার নেতৃবৃন্দ গতকাল সরেজমিন তদন্ত করেন। স্থানীয়দের মতামতের ভিত্তিতে এবং সাবেরার নিকটজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আইনগত সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়।

আইনগত সহায়তা চেয়ে আবেদনের সময় সাবেরা খাতুনের নানিসহ নিকটজনেরা বলেছেন, নানি জুরমন বিবি বাড়ির ভিটেমাটিসহ দু বিঘা জমি সাবেরার নামে লিখে দেন। ওই জমি পিলু তার নামে লিখে দেয়ার জন্য সাবেরাকে চাপ দিতে থাকে। এর আগে এক দফা ঘরে বন্দিও করে রেখেছিলো। এবার তাকে হত্যাই করা হলো।