আধিপত্য বিস্তার নিয়েই বিএনপি নেতা মিঠু খুন

স্টাফ রিপোর্টার: এক পরিবারের সাথে রাজনৈতিক বিরোধে খুন হয়েছেন খুলনা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফুলতলা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সরদার আলাউদ্দিন মিঠু। পারিবারিক বিরোধে এর আগে মিঠুর পিতা ও ভাই খুন হন। এবার খুন হলেন মিঠু ও তার দেহরক্ষী নওশের গাজী। মিঠুর ভাই সরদার সেলিমের অভিযোগ তার ভাইয়ের জনপ্রিয়তা ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।

এর সাথে ফুলতলা উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আকরাম হোসেন, দামোদর ইউপি চেয়ারম্যান শিপলু ভুঁইয়া ও তার ভাই চরমপন্থি দলনেতা শিমুল ভুঁইয়া জড়িত রয়েছেন। এদিকে, এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিএনপি আজ শনিবার খুলনায় আধাবেলা হরতালসহ চারদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথসভা শেষে মহানগর বিএনপি সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টায় বিএনপি নেতা সরদার আলাউদ্দিন মিঠু, তার শ্বশুর সৈয়দ সেলিম, দেহরক্ষী নওশের গাজী, সানোয়ার ও সাদ্দামসহ পাঁচজন মিঠুর দামোদর গ্রামের ‘চেয়ারম্যান বাড়ী’র সামনে তার কার্যালয় বসে আলোচনা করছিলেন। এ সময় তিনটি মোটরসাইকেলে সাতজন আরোহী এসে দাঁড়ায়। তাদের পরনে ছিল ডিবি পুলিশের পোশাক। মোটরসাইকেল থেকে চারজন নেমে এসে নিজেদের ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে। ডিবির পরিচয় পেয়ে মিঠু উঠে দাঁড়ালে তারা মুহূর্তের মধ্যে মিঠুকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ সময় বাধা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা মিঠুর দেহরক্ষী নওশের গাজী ও তার শ্বশুর সৈয়দ সেলিমকেও গুলি করে। দুটি গুলি নওশের গাজীর বুকে এবং সেলিমের বাম পায়ে বিদ্ধ হয়। মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে মিঠুর মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা গুলি করতে করতে ফুলতলা উপজেলা সদরের দিকে চলে যায়। এসময় উপজেলা সদরে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়রা নওশের গাজী ও সৈয়দ সেলিমকে উদ্ধার করে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নওশের গাজীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপারেশন থিয়েটারে চিকিত্সাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২টায় তিনি মারা যান। বিএনপি নেতা মিঠুসহ জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ ইমরুল শেখ নামে এক যুবককে আটক করেছে। তাকে ফুলতলা থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু এখনো উদ্ধার করতে পারেনি। এর আগে ২০১৫ সালে মিঠুর ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। তবে সে সময় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তিনি।