আজ সরস্বতী পূজা

স্টাফ রিপোর্টার: আজ শনিবার সরস্বতী পূজা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন সরস্বতী বিদ্যা ও শিল্পকলার দেবী। মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে তাকে ভক্তি ভরে পূজা করে ভক্তরা, বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা। গতকাল মধ্যরাতে প্রতিমা স্থাপন করে পূজার আনুষ্ঠানিকতা সূচনা হয়। চলবে আজ রাত অবধি। হিন্দু ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সকালে দেবীকে দুধ, মধু, দই, ঘি, কর্পূর, চন্দন দিয়ে স্নান করানো হবে। আজ সকাল নয়টার দিকে হবে বাণী অর্চনা। পুরোহিতরা সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যা কমললোচনে/বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যংদেহী নমোহস্তুতে মন্ত্র উচ্চারণ করে বিদ্যার দেবী সরস্বতীকে আরাধনা করবেন। এরপর ভক্তরা পুষ্পাঞ্জলি দেবেন। তাদের বিশ্বাস, দেবী খুশি হলে বিদ্যা অর্জিত হবে। দেবীর সামনে হাতেখড়ি দিয়ে শিশুদের বিদ্যাচর্চার সূচনা করা হবে অনেক স্থানে। সন্ধ্যায় থাকবে আরতি। সন্ধ্যার পর বিভিন্ন মণ্ডপে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এ উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পৃথক পৃথক বাণীতে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি বাণীতে আশা প্রকাশ করেন, দেশে বিদ্যমান সম্প্রীতির এই সুমহান ঐতিহ্যকে আরও সুদৃঢ় করতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সকল ধর্মের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সুষম উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী। দেবী সরস্বতীর পূজার্চনা উপলক্ষে তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে জ্ঞানার্জনে ব্রতী হয়ে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগের আহবান জানান।
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পূজা ছাড়াও অন্য অনুষ্ঠানমালায় আছে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা-আরতি, আলোকসজ্জা প্রভৃতি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলে মহাসাড়ম্বরে বিদ্যা ও আরাধনার অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর পূজার আয়োজন করা হয়েছে। সকাল ৮টায় শুরু হবে পূজার্চনা এবং ১০টা থেকে শুরু হবে অঞ্জলি প্রদান। সন্ধ্যা ৬টায় হবে আরতি অনুষ্ঠান।
এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট জগন্নাথ হল চত্বর জুড়ে বিভিন্ন আইডিয়া ও থিমভিত্তিক ৭০টির বেশি প্রতিমা স্থাপন ও মণ্ডপ নির্মাণ করেছে। জগন্নাথ হল উপাসনালয়ে হল প্রশাসনের উদ্যোগে কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজিত একটি পূজা ছাড়াও এই মহোত্সবের বিশেষ আকর্ষণ থাকবে হলপুকুরে চারুকলা অনুষদের তৈরি ৪৫ ফিট দীর্ঘ বিশাল অবয়বের একটি প্রতিমা।
এছাড়াও হলজুড়ে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের বিদ্যার্থীরা তৈরি করেছে বিভিন্ন মোটিফের ওপর ভিত্তি করে প্রতিমা ও বিভিন্ন মেটাফোরিক্যাল মণ্ডপ। দৃষ্টিনন্দন এই মহোত্সবে প্রতিফলিত হয়েছে চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির শাশ্বত মহিমা এবং একই সময় রয়েছে বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তির কলাকৌশল ও বিজ্ঞানের সমন্বিত শিল্পরূপ।