আজ বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস : সরকারি ও বেসরকারিভাবে পালিত হচ্ছে দিবসটি

ইলিয়াস হোসেন: আজ বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারিভাবে পালিত হচ্ছে দিবসটি। তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিষিদ্ধ আইন থাকলেও তার সঠিক প্রয়োগ করা হয় না। সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতি মাসে মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করার কথা কিন্তু শুধুমাত্র দিবস পালনের দিন ২-১টি মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করা হয়। যার ফলে পাবলিক প্লেসগুলোতে ধূমপান বেড়েই চলেছে।

অপরদিকে জেলা ট্রাস্কফোর্স কমিটির সভা প্রতি ৩ মাসে একবার হওয়ার কথা থাকলে ও গত ৩ বছরে একবার হয়েছে কি-না সন্দেহ। জেলা ট্রাস্কফোর্স কমিটির অনেক সদস্য জানিয়েছে কয়েক বছর জেলা ট্রাস্কফোর্স কমিটির সভা হয়নি। তাহলে জাতিয় এন্টি টোবাকে সেলে কি মিথ্যা রিপোর্ট দেয়া হয়। এছাড়াও আইনের প্রয়োগ না থাকায় ধূমপান, তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন মানছে না সিগারেট কোম্পানি। প্রশাসনের চোখ ফাকি দিয়ে অভিনব কৌশলে জেলা শহর, বাজার ও গ্রামে চালিয়ে যাচ্ছে সিগারেট বিড়িসহ তামাকজাত দ্রব্যের নিষিদ্ধ বিজ্ঞাপন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০০৪ সালের জরিপের সূত্র মতে বাংলাদেশে প্রতিদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে যত মানুষ মারা যাচ্ছে তার মধ্যে ১শ ৫৭ জন এবং প্রতি বছর মারা যাচ্ছে ৫৭ হাজার মানুষ। এছাড়া ও বিশ্বে প্রতি বছর ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ফলে প্রত্যক্ষভাবে গলায় ও ফুঁসফুঁসে ক্যান্সার, স্ট্রোক, হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে ৪ কোটি মানুষ এবং পরক্ষভাবে ৪ কোটি ২০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হলেও প্রতিরোধে মাঠ পর্যায়ে নেই কোনো উদ্যোগ।

তামাক কোম্পানি প্রচার দেয় সরকার তামাক কোম্পানির নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে। কিন্তু ২০১৩-১৪ অর্থ বছরের বাজেটে দেখা যায়, সরকার রাজস্ব আদায় করেছে ১২ হাজার কোটি টাকা কিন্তু এর জন্য চিকিৎসা খাতে খরচ হয়েছে ২৩ হাজার কোটি টাকা। এর ভয়াবহতা বিবেচনা করে সরকার ২০০৫ সালের ধূমপান ও তামাকজাতদ্রব্য আইন ২০১৩ সালে সংশোধন করে আইন পাস করেছে। এ আইনে কোনো পাবলিক প্লেসে প্রকাশ্যে ধূমপান করলে ৫০ টাকার পরিবর্তে ৩শ’ টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে। এছাড়াও কোনো ব্যক্তি তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রকাশ্যে প্রচার করলে সেই ব্যক্তিকে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা, কোনো ব্যক্তি অপ্রাপ্ত ব্যক্তির নিকট তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করলে সেই ব্যক্তি অনধিক ৫ হাজার টাকা জরিমানার দণ্ডে দণ্ডিত হবে। কিন্তু সিগারেট ও তামাক কোম্পানিগুলো প্রশাসনের নজর ফাকি দিয়ে বেছে নিয়েছে অবিনব কৌশল। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর, বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লিফলেট ও পোস্টারের বিজ্ঞাপনের পরিবর্তে চায়ের দোকানগুলোর সামনের দিকে বিভিন্ন ডিজাইনের বক্স তৈরি করে সিগারেটের প্যাকেটের মোড়ক দিয়ে সাজানো হয়েছে। যা সরকারের ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইনের লংঘন। বিগত ৬ মাসে ইবোলা ভাইরাসে প্রায় ৫ হাজার লোকের মৃত্যু নিয়ে তোড়পাড়। সেখানে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে বাংলাদেশে মানুষ মারা যাচ্ছে প্রতিদিন ৫৭ জন। সেদিকে নেই কারো কোনো নজর।  অবিলম্বে পাবলিক প্লেসগুলো এবং যে সকল দোকানে সিগারেটের প্যাকেট দিয়ে সাজিয়ে রাখা হয়েছে সেই সকল দোকানগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল। পাশাপাশি সিগারেট ও তামাকজাতদ্রব্যের ওপর কর বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে।