অসাড় দেহ ধুকছে দু দিন : মধ্যবয়সীর মরতে বাকি!

 

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে অজ্ঞাত পরিচয়ের রোগীকে অবহেলার অন্ত নেই

 

স্টাফ রিপোর্টার: অসাড় দেহ পড়ে আছে। কোনো রকম চলছে শ্বাস-প্রশ্বাস। কেউ ঘুরেও তাকাচ্ছে না ওদিকে। পরশু রাতে কে বা কারা মধ্যবয়সী পুরুষ মানুষটাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেখে গেছেন। কী হয়েছে? সংজ্ঞাহীন কেন? হাসপাতালে ভর্তির টিকিট নেই। কোনো চিকিৎসকই দেখেননি। ফলে সেবিকাদের কেউই বলতে পারলেন না কেন, ওই অবস্থায় হাসপাতালের নিচে ট্রলি সিঁড়ির নিকট পড়ে আছে লোকটা।

বয়স আনুমানিক ৪০ বছর। গায়ের রং শ্যামলা। মাথায় কালো চুল। মুখে গোফ ও দাঁড়ি। গায়ে ছায়ে রঙের জামা। পরনে চেক লুঙ্গি। মুখ দিয়ে মাঝে মাঝে লালা ঝরছে। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় অসাড় দেহ পড়ে আছে। মলমূত্রের দুর্গন্ধে ওদিকে তেমন কেউই আগ্রহভরে যান না। হাসপাতালের একাধিক সেবিকার সাথে যোগাযোগ করেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি পরশু রাতে কখন কে বা কারা মধ্যবয়সী মানুষটাকে হাসপাতালে রেখে গেছেন। ভর্তিই বা করানো হলো না কেন? তিনি অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েছেন? নাকি মানসিক প্রতিবন্ধী? কোনো জবাব নেই।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এরকম অজ্ঞত পরিচয়ের অনেক রোগী ভর্তি করানো হয়। কোনো এক কোণে পড়ে থেকে ধুঁকে ধুঁকে মারা গেলে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয়। অথচ হাসপাতালে সমাজসেবা কার্যক্রম রয়েছে। চিকিৎসার ব্যয় জোগানোর তহবিলও রয়েছে। তহবিল থেকে কিছু রোগীর ওষুধও কিনে দেয়া হয়। কিন্তু এ ধরনের অজ্ঞাত পরিচয়ের তেমন কেউই সমাজসেবার তরফে সহযোগিতা পায় না বললেই চলে। মাঝে কিছুদিন হাসপাতাল অভ্যন্তরের ওষুধের দোকানি মানিকুজ্জামান মানিক নিজ উদ্যোগে ওষুধসহ প্রাথমিক খরচ জোগালেও তিনি এখন আর তেমন আগ্রহ দেখান না। ফলে অজ্ঞাত পরিচয়ের রোগীদের দুর্দশার শেষ নেই।