অসময়ের বৃষ্টি আলমডাঙ্গায় ডাল জাতীয় শস্যচাষিদের কপালের ভাঁজ দীর্ঘতর করেছে

 

রহমান মুকুল: ফাগুন রাতের শিলা বৃষ্টিসহ বেশ কয়েক দফা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে সারাদেশের মতো আলমডাঙ্গার চাষিরা। মসুর, ছোলা, খেসারি, ভূট্টা, ধানক্ষেত থেকে  শুরু করে আমের মুকুল, সজনের ফুল, কুমড়োসহ সব ধরনের ফসলই কম-বেশি নষ্ট হয়েছে।  সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ডাল জাতীয় শস্য। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের কপালের ভাঁজ হয়েছে দীর্ঘতর।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৮ ফাল্গুনের হঠাৎ শিলাবৃষ্টিতে আলমডাঙ্গা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত বছর মসুরের আবাদ করে কৃষকরা বিঘা প্রতি ৬ থেকে ৭ মণ ডাল উত্পাদন করতে পারলেও এবার তাদের বেশিরভাগ পাচ্ছেন মাত্র ২০ থেকে ২৫ কেজি। একইভাবে আগাম জাতের গমের চাষ করে গত বছর বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১২ মণ করে গম পেলেও এবছর ২ থেকে ৩ মণের বেশি ফলন পাচ্ছেন না কেউ। অন্যদিকে, আমের মুকুল ও গুটির অবস্থা আরও শোচনীয়। শোচনীয় সজনে ফুলের অবস্থারও।

পাঁচলিয়া গ্রামের মসুরচাষি বাবুল হোসেন জানান, গত মাসে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ফুলে ভরা মসুরসহ ডাল জাতীয় শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বৃষ্টির পর রৌদ্রের দেখা মিললেও রাতে সৃষ্টি হয় এক ধরনের কুয়াশার। ফলে মসুরের ফুলে পচন ধরে।

খাসকররা এলাকার কৃষক খোয়াজ মালিথা জানান, ফাল্গুনের বৃষ্টিতে তার সাড়ে ৩ বিঘা গম এবং ৩ বিঘা মসুরসহ বোরো ধানেরও ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, নাবি গম ক্ষেতের এতো বেশি ক্ষতি হয়েছে যে, অনেক কৃষক তার ক্ষতিগ্রস্ত গমক্ষেতের গম কেটে ঘরে তোলেননি। জমিতেই নষ্ট হয়েছে। অনেকে আবার জমি পরিষ্কার করতে ক্ষতিগ্রস্ত গমক্ষেত আগুনে পুড়িয়ে সাফ করেছেন। উপজেলার সর্বত্র ভুট্টাক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শিলার আঘাতে ভুট্টার মোচা ভেঙে গেছে আর ঝড় বৃষ্টিতে ভুট্টাক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে কলাবাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও কোনো কোনো এলাকায় পেঁয়াজের ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।

অন্যদিকে গত ৮ ফাল্গুনের রাতের ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে আমের বোলে ও সজনে গাছের ফুলে বৃষ্টির পানি পড়লে বোল ও ফুল ঝরে যায়। ছত্রাক আক্রমণের  আশঙ্কাও অধিক থাকে।

এলাকার একাধিক পানচাষি জানান, পান চাষের পক্ষে বৃষ্টির পানি ভীষণ ক্ষতিকর। অসময়ের বৃষ্টির পানি পান পাতায় পড়লে পাতায় দাগ দেখা যাবে। শিলার আঘাতে পানবরজের ছাউনি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে যখন পান গাছে রোদ পড়বে তখন গাছের লতায় পচন ধরতে পারে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।