অবসরের পর রায় লেখার ভুল আর নয়

স্টাফ রিপোর্টার: অবসরের পর রায় লেখা সংবিধান পরিপন্থি- এ বক্তব্য নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার মধ্যে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা জোর দিয়ে বলেছেন, ওই ভুল আর করতে দেবেন না তিনি। গত বৃহস্পতিবার রাতে মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক নৈশভোজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, রিটায়ারমেন্টের পরে আপনাকে আমি কোনো পাবলিক ডকুমেন্টে হাত দিতে দেব না। সেইটিতেই প্রশ্ন। আর এই বিচারক … রিটায়ারমেন্টের পরে তার ব্যক্তিগত কী ইন্টারেস্ট? কেন রায় লেখার জন্য ইন্টারেস্ট থাকবে?
এটা কোর্ট দেখবে। … এখানে ভুল একটা নীতি চলে আসছে। একজন চুরি করেছে বলে আমিও চুরি করবো? এ অন্যায় করেছে বলে আমিও কি অ্যালাউ করবো অন্যায়টা ইয়ে করার? নো। আই উইল নট অ্যালাউ টু পারপেচুয়েট দিজ রংস। মঙ্গলবার দেশের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে একবছর পূর্তি উপলক্ষে দেয়া বাণীতে রায় লিখতে কোনো কোনো সহকর্মীর দেরিতে উষ্মা প্রকাশ করেন বিচারপতি সিনহা। তিনি বলেন, কোনো কোনো বিচারপতি রায় লিখতে অস্বাভাবিক বিলম্ব করেন। আবার কেউ কেউ অবসর গ্রহণের দীর্ঘদিন পর পর্যন্ত রায় লেখা অব্যাহত রাখেন, যা আইন ও সংবিধান পরিপন্থি।
তার এ বক্তব্যে বিএনপি নেতাদের পাশাপাশি তাদের সমর্থক আইনজীবীরা জোর সমর্থন দিয়ে বলছেন, এর মধ্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের রায় অবৈধ প্রমাণিত হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম মনে করেন, ন্যায়বিচার পাওয়ার ওপর গুরুত্ব দিতে গিয়ে এই বক্তব্য এসেছে প্রধান বিচারপতির। তবে ঘোষিত রায় পরে লেখা বেআইনি মনে করছেন না তিনি। সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদও বিচারপতিদের অবসরের পর রায় লেখার দীর্ঘদিনের এই চর্চায় কোনো সমস্যা দেখছেন না। মৌলভীবাজার পৌর জনমিলন কেন্দ্রে নৈশভোজে নিজেদের অনেক ভুল ও অজ্ঞতার কথা তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের সংশোধিত হতে হবে। আমাদের অনেক ভুল, আমরা অনেক জানি না। আমাদের আইন-সংবিধান রক্ষা করতে হলে তাদেরকে … সম্মান দেখাতে হবে। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মোছাব্বিরের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ মো. শফিকুল ইসলাম, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের জেলা জজ মোতাহির আলী, জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল। সভায় জেলা বারের নবীন-প্রবীণ পাঁচ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।