অপহণের এক মাস পর অপহৃত যুবকের লাশ নদী থেকে উদ্ধার

মেহেরপুর গাংনীর হিন্দা গ্রামের পিপুলকে বাড়ি থেকে তুলে নেয়া হলেও পুলিশ প্রথমে বিশ্বাস করেনি

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হিন্দা গ্রামের পিপুল হোসেনের (২৫) অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মহাম্মদপুর মাথাভাঙ্গা নদীর খেয়াঘাট থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। পিপুলকে প্রায় এক মাস আগে বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয় বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। তারা বলেছেন ঘটনার পর অপহরণের কথা পুলিশকে জানালেও তা বিশ্বাস করতে চায়নি। এখন কী বলবে পুলিশ? পুলিশ অবশ্য বলেছে অভিযোগের ভিত্তিতে দুজনকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তখন তথ্য মেলেনি। আসামিদের ধরার প্রক্রিয়া করা হচ্ছে। লাশ আজ বুধবার মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত করা হবে।

 

পিপুল হোসেন হিন্দা গ্রামের একছার আলী সাধুর ছেলে। গাংনী থানা ও নিহতের পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে অপহরণ হয় পিপুল হোসেন। এমন অভিযোগ করে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়। আসামি করা হয় একই গ্রামের ঝন্টু, জিল্লু ও হাউসকে। পুলিশ ঝন্টুকে গ্রেফতার করে। কুষ্টিয়ার মিরপুরের নৃত্য শিল্পি সোনিয়াকেও সন্দিগ্ধ হিসেবে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিখোঁজের আগে পিপুলের সাথে মোবাইলে কয়েক দফা কথা হয় সোনিয়ার। তবে সোনিয়া কিংবা ঝন্টুর কাছ থেকে অপহরণ কিংবা নিখোঁজের বিষয়ে কোনো তথ্য পায়নি পুলিশ।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলের দিকে পেছন থেকে হাত বাঁধা একটি লাশ মাথাভাঙ্গা নদীর গাংনী উপজেলার বেতবাড়ীয়া এলাকায় দেখা যায়। লাশটি ভাসতে ভাসতে মহাম্মদপুর গ্রামের খেয়া ঘাটের কাছে আসে। স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় গাংনী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জলিল সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যদের নিয়ে লাশটি উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে একছার সাধু ঘটনাস্থলে পৌছে লাশের পরিচয় সনাক্ত করেন। অর্ধগলিত লাশের বর্ণনা দিতে গিয়ে পুলিশ জানিয়েছে মৃত্যুর আগে পিপুল হোসেনের পুরুষাঙ্গ কাটা হয়। তার মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দু হাত পিঠ মোড়া করে বাঁধা ছিলো। বেশ কয়েক দিন আগেই তাকে স্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণের লক্ষ্যে গতরাতে গাংনী থানায় রাখা হয়েছে।

একছার সাধু জানিয়েছেন কয়েকটি বিষয়ে শত্রুতার কারণে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করেছে। তাদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেছেন তিনি। পিপুল হোসেন বিবাহিত। তার মৃত্যুর খবরে স্ত্রী ও পিতা-মাতাসহ পরিবারে বিরাজ করছে শোকের ছায়া। গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাছুদুল আলম জানিয়েছেন, হত্যার কারণ সম্পর্কে মোটামুটিভাবে নিশ্চিত পুলিশ। জড়িতদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চলছে।