সিরিজে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার: বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রথম ওয়ানডেতে ডাকওয়ার্থ/লুইস পদ্ধতিতে নিউজিল্যান্ডকে ৪৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সুবাদে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। গতকাল মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ৫ বলে ২৬৫ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। অতিথিদের ইনিংসের ২০ ওভার শেষে বৃষ্টি নামে। সে সময় নিউজিল্যান্ডের স্কোর ছিলো ৮২/৩। দেড় ঘণ্টা পর খেলা শুরু হলে ডাকওয়ার্থ/লুইস পদ্ধতিতে অতিথিদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৩ ওভারে ২০৬ রান।

জবাবে ২৯ ওভার ৫ বলে বলে ১৬২ রানে অলআউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। সপ্তম ওভারে ২৫ রানে প্রথম সারির তিন ব্যাটসম্যানের বিদায় বাংলাদেশের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। টিম সাউদির করা তৃতীয় ওভারের শেষ বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তামিম ইকবাল (৫)। টেস্ট সিরিজের সেরা খেলোয়াড় মুমিনুল হক তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ‘ডায়মন্ড ডাক’ অর্থাৎ কোনো বল না খেলেই শূন্য রানে বিদায় নেন। এরপর বেশিক্ষণ টেকেননি এনামুলও (১৩)। জ্বরের জন্য ওয়ানডে সিরিজে খেলা হচ্ছে না সাকিব আল হাসানের। তার বদলে দলে ফিরেন নাঈম ইসলাম। গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ ওয়ানডে খেলেছিলেন তিনি। চতুর্থ উইকেটে নাঈমের সাথে মুশফিকের ১৫৪ রানের জুটি দলকে ৩ উইকেটে ১৭৯ রানের দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড় করায়। জেমস নিশামের করা ব্যাটিং পাউয়ার প্লের দ্বিতীয় ওভারে (৩৭তম) মুশফিক ও নাসির হোসেনের (১) বিদায় স্বাগতিকদের অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। ৯০ রান করা মুশফিকের ৯৮ বলের ইনিংসে ২টি বিশাল ছক্কা ও ৮টি চার। এটি তার দ্বাদশ অর্ধশতক।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হামিশ রাদারফোর্ডকে (১) বোল্ড করে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন অফস্পিনার সোহাগ গাজী।বদলি বোলার হিসেবে বল করতে এসে প্রথম ওভারেই সাফল্য পান আরেক অফস্পিনার মাহমুদুল্লাহ। অভিষিক্ত উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান অ্যান্টন ডেভসিচকে বোল্ড করেন তিনি। মাশরাফি বিন মুর্তজার বদলে বল করতে এসে প্রথম ওভারেই সাফল্য পেয়েছেন পেসার রুবেল হোসেনও। বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান রস টেইলরকে মুশফিকের গ্লাভসবন্দী করেন তিনি। বৃষ্টি থামার পর ১৩ ওভারে নিউ জিল্যান্ডের প্রয়োজনীয়তা দাঁড়ায় ১২৪ রান। প্রথম তিন ওভারে ৩৮ রান নিয়ে আশা জাগিয়েছিলেন গ্রান্ট এলিয়ট ও কোরি অ্যান্ডারসন। বদলি বোলার হিসেবে এসে পর-পর তিন বলে অ্যান্ডারসন (৩১ বলে ৪৬), ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (০) ও জেমস নিশামকে (০) বিদায় করে ম্যাচের পাল্লা স্বাগতিকদের দিকে নিয়ে আসেন রুবেল। বাংলাদেশের তৃতীয় বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করা এই বোলার ৪২ ম্যাচের ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট পেয়েছেন। তার আগের সেরাও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ছিল। ২০১০ সালে এই মাঠেই ২৫ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। চোটের কারণে ব্যাট করতে নামেননি কেন উলিয়ামন। দারুণ একটা চেষ্টা করেছিলেন এলিয়ট। ৭৭ বলে ৭১ রান করা এলিয়টকে মাশরাফির ক্যাচে পরিণত করে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের টানা পঞ্চম জয় নিশ্চিত করেন রুবেল। ২৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে রুবেলই বাংলাদেশের সেরা বোলার। সাবেক অফস্পিনার শেখ সালাউদ্দিনের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে কালো আর্মব্যান্ড পরে খেলছে বাংলাদেশ দল। ম্যাচ শুরুর আগে এজন্য মাঠে এক মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়। সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ৪৯.৫ ওভারে ২৬৫ (তামিম ৫, এনামুল ১৩, মুমিনুল ০, মুশফিক ৯০, নাঈম ৮৪, নাসির ১, মাহমুদুল্লাহ ২৯, সোহাগ ৬, মাশরাফি ৬, রাজ্জাক ১২, রুবেল ৩*; নিশাম ৪/৪২, সাউদি ৩/৩৪, অ্যান্ডারসন ২/৪৬) নিউজিল্যান্ড: ২৯.৫ ওভারে ওভারে ১৬২ (ডেভিসিচ ২২, এলিয়ট ৭১, ‍রুবেল ৬/২৬।