সফল সমাপ্তির আশায় বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার: ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্ত শুরুর পরও ফাইনালে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে রানারআপ হয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে ড্র’তে শুরু করে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরে যায় টাইগাররা। তাই ত্রিদেশীয় ও টেস্ট সিরিজের ব্যর্থতাকে সাথে নিয়ে আজ থেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করছে বাংলাদেশ। তবে টি-টোয়েন্টিতে সাফল্য নিয়ে সিরিজ শেষ করার মিশনে এখন বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত ভার্সনে ভালো করার জন্য দল মুখিয়ে আছে বলে জানালেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ত্রিদেশীয় ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজের মতো টি-টোয়েন্টিতেও সাফল্য চায় শ্রীলঙ্কা। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিকেল পাঁচটায় শুরু হবে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি। গেল মাসে ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে দুর্দান্ত জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। এমন জয়ে আগেভাগেই ফাইনালের টিকিট পায় টাইগাররা। কিন্তু ফাইনালে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে টাইগারদের। শ্রীলঙ্কার সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করে টাইগাররা। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল হারের দুঃস্মৃতি নিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু করে বাংলাদেশ। সেখানেও দুর্দান্ত শুরু হয় বাংলাদেশের। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে আঙ্গুলে চোটের কারণে টেস্ট সিরিজের শুরু থেকেই ছিটকে পড়েন দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পাওয়া সাকিব আল হাসান। তার অনুপস্থিতিতে টেস্টে অধিনায়কত্ব পান মাহমুদউল্লাহ। চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ড্রয়ের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ। তবে ঢাকায় সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে লজ্জার হারের ঢেকুর তুলে স্বাগতিকরা। তাই ১-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ হারে বাংলাদেশ। ত্রিদেশীয় ও টেস্ট সিরিজে ব্যর্থতার গ্লানি কিছুটা লাঘব হওয়ার সুযোগ রয়েছে টাইগারদের। আছে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এই দু’টি ম্যাচ জিতে সিরিজ শেষ করাটাই এখন বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য। আজ শুরু হওয়া মিশন পূরণে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ। এমনটাই জানালেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ, ‘টি-টোয়েন্টি ভিন্ন একটা ফরম্যাট। আমরা শেষ কয়েকটা সিরিজে ভালো খেলিনি। এই সিরিজটা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা এই সিরিজটি দিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে একটি বার্তা দিতে চাই যে, ওয়ানডে ও টেস্টের মতো টি-টোয়েন্টিতেও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা এই সিরিজটি জিততে চাই।’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের জন্য ঘোষিত প্রথম টি-টোয়েন্টি টুয়েন্টির দলে ছিলেন সাকিব। কিন্তু আঙ্গুলের ইনজুরিতে থেকে পুরোপুরি সুস্থ হতে না পারায় প্রথম ম্যাচে খেলবেন না বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। তার পরিবর্তে দলে ডাক পেয়েছেন বাঁ-হাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু। এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ না পেলেও ঘরোয়া আসরে ৫০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এছাড়া পাঁচজন নতুন মুখ রয়েছে বাংলাদেশ দলে। নতুনদের উপর আস্থা রেখেছেন মাহমুদউল্লাহ, ‘নতুনদের উপর আস্থা রাখছি আমরা। ভালো খেলেই ডাক পেয়েছেন তারা। আশা করছি সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারবো এবং এই সিরিজে জিততে পারবো।’

খাদের কিনারায় পড়ে গিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল খেলে শ্রীলঙ্কা। এরপর টুর্নামেন্টের শিরোপাও জয় করে লঙ্কানরা। চ্যাম্পিয়নের তকমা সাথে নিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতে নেয় সফরকারীরা। তাই মানসিক দিক দিয়ে বেশি উৎফুল্ল শ্রীলঙ্কা। তাই টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ভালো করতে উদগ্রীব লঙ্কানরা বলে জানালেন প্রথম ম্যাচের আগে আজ সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা ওপেনার ও সাবেক অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গা, ‘ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজে আমরা অনেক বেশি ভালো পারফরমেন্স করেছি। আমরা এখন আত্মবিশ্বাসী। টি-টোয়েন্টিতে আমরা বেশ কিছু নতুন মুখ পেয়েছি। আমরা ভালো মুহূর্তে আছি, এটা ধরে রাখতে চাই। ভালোর করার জন্য সবাই সামনে তাকিয়ে আছে।’ প্রথম ম্যাচের পর সিলেটে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে সিরিজে দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি।

বাংলাদেশ দল: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আবু হায়দার রনি, আবু জায়েদ রাহি, নাজমুল ইসলাম অপু, আরিফুল হক, মেহেদি হাসান, আফিফ হোসেন ও জাকির হাসান।

শ্রীলঙ্কা দল: দিনেশ চান্দিমাল (অধিনায়ক), উপুল থারাঙ্গা, দানুস্কা গুনাথিলাকা, কুশল মেন্ডিস, থিসারা পেরেরা, আসলে গুনারত্নে, নিরোশান দিকবেলা, দাসুন শানাকা, ইসুরু উদানা, শেহান মাদুশঙ্কা, জেফরি ভান্দারসে, আকিলা ধনঞ্জয়া, আমিলা আপোনসো, জীবন মেন্ডিস ও আসিথা ফার্নান্দো।