ব্রাজিলের নতুন কৌশল

মাথাভাঙ্গা মনিটর: আপাতত লক্ষ্যটা ফাইনাল খেলার, মনের মধ্যে বিশ্বজয়ের স্বপ্নটাও আছে।ফাইনালের প্রতিপক্ষ হিসেবে চায় আর্জেন্টিনাকে। কিন্তু ম্যাচের ফলাফলে তারছাপ কোথায়! মেক্সিকোর বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করার পর ব্রাজিলীয়রা এখনঅনেকটাই চুপসে যাচ্ছে।ক্যামেরুনের বিপক্ষে ম্যাচেও তাই তীব্রসতর্কতা নিয়েই মাঠে নামবে ব্রাজিল। দ্বিতীয় পর্বে ওঠার রাস্তায় বড় কোনোবাধা না থাকলেও পারফরম্যান্স নিয়ে ভাবতেই হচ্ছে ব্রাজিল শিবিরকে। কীভাবেচাপমুক্ত থাকা যায় তা নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট আঁকছেন নানারকম ছক। দলকেউদ্বুদ্ধ করতে সফল ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে অনুশীলন ক্যাম্পে।সমর্থকরাওভাবছেন ব্রাজিল দলকে নিয়ে। শুভেচ্ছা ও খেলায় আরও মনোযোগ দেয়ার পরামর্শজানিয়ে ব্রাজিল ফুটবল দলের হাতে পৌঁছেছে প্রায় ছয় হাজার চিঠি। কোনোটায় আছেজ্বলে ওঠার আহবান, কোনোটায় আছে তীব্র ক্ষোভ। ফর্মেশন কিংবা খেলার স্টাইলনিয়েও কথা বলেছেন কেউ কেউ। দল গঠনের প্রক্রিয়াও উঠে এসেছে চিঠিগুলোতে।ভাষা যাই হোক না কেনো, সব চিঠিই শেষে এসে মিলেছে একই সমীকরণে- বিশ্বকাপজয়!ব্রাজিল দলও চিঠিগুলোকে সমর্থকদের ভালোবাসা হিসেবেই দেখছে।চিঠির জবাবে রক্ষণভাগের খেলোয়াড় ডেভিড লুইজ যেমন বলেই দিলেন, দেশ প্রেমনিয়ে কেউ আশঙ্কা করলে সেটা ঠিক হবে না। কনফেডারেশন কাপ জয় আর বিশ্বকাপফুটবল, দুটো এক জিনিস না। সমর্থকদের ভালোবাসা আমরা বুঝি। চাই সেই ভালোবাসারপ্রতিদান দিতে।চিঠির জবাবে স্ট্রাইকার ফ্রেড বলেছেন, আমরা শুধুদর্শকদের চিঠিই পড়ছি না। টিমগুলোকেও পড়ে নিচ্ছি। আমরা সামাজিক কর্মকাণ্ডেরসাথে জড়িত। আমরা জানি কতোটুকু দায়িত্ব আমাদের আছে।মেক্সিকোর বিপক্ষেসর্বশেষ ম্যাচের পর দলের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় গণ-মাধ্যমগুলোও।রক্ষণাত্মক ধরনের ফুটবলের সমালোচনা করেছেন তারা। শীর্ষস্থানীয় এক পত্রিকালিখেছে, ১৯৫০ বিশ্বকাপ ফুটবলে ফাইনালে গিয়েও হেরে গিয়েছিলো ব্রাজিল।কেঁদেছিলো দর্শক। আজ আবার ৬৪ বছর পর নিজেদের মাঠে খেলা। স্পেন ইংল্যান্ডস্মরণ করিয়ে দিয়েছে ব্রাজিলকে, কী করতে হবে।ব্রাজিল অবশ্যগণমাধ্যমের চাপ নিয়ে মাথা ঘামাতে চাইছে না। ফ্রেড যেমন বললেন, এটাবিশ্বকাপ, আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। এখানে খেলাটা এতো সহজ হবে না। ক্যামেরুনকেআমরা জানি। ওদের আছে কোয়ালিটি, ওরা শক্তিশালী দল। আমরা প্রতিপক্ষকেশ্রদ্ধা করি। আমরা মাঠে যাবো আমাদের দায়িত্ব পালন করবো।বিশ্বকাপটাএবার বড় দলগুলোর জন্য হতাশা নিয়েই এসেছে। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনের বিদায়, সাবেক চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিদায়। ব্রাজিলের ভাগ্যে কী লেখা আছে সেটানিয়ে তাই চিন্তিত কোচ লুইস ফিলিপ স্কোলারি। চাপ কাটিয়ে ওঠার জন্য কাজশুরু করে দিয়েছেন তিনি। ক্যামেরুনের বিপক্ষে ম্যাচ আগামীকাল। টানা অনুশীলনচললো। মাঝে সংক্ষিপ্ত এক সংবাদ সম্মেলনে হাজির হলেন ডেভিড লুইজ ওমার্সেলো।ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে ম্য্যাচের খেলোয়াড়দের চাঙ্গা করতেবেস ক্যাম্পে গিয়েছিলেন ব্রাজিলের অনেকেই। গোলকিপার হুলিও সিজার ছাড়াবাকি সবাই শুক্রবার দেড় ঘন্টা টেকনিক্যাল টেনিং সেশন করেছেন। সাবেক বিখ্যাতফুটবলার ও বর্তমান টেকনিক্যাল ডিরেক্টর কার্লোস আলবার্তো পাহেইরা, জাতীয়দলের আরেক সাবেক ডিফেন্ডার রক জুনিয়র, দুজন জাতীয় দলের সাবেক ভলিবলখেলোয়াড় বার্নাড এবং মার্কোসরা ছিলেন। সবাই মিলে বিশ্বকাপ জয়ের কৌশলনিয়ে কথা বললেন! সবাই এক সাথে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করলেন ব্রাজিলকে। এদিকেশনিবার সকালে অনুশীলন বাতিল করেছেন কোচ স্কোলারি। বিকেলে সেব ক্যাম্পছেড়ে ব্রাসিলিয়ার উদ্দেশে রওনা দেয় ব্রাজিল।বিশ্বকাপ ফুটবলেরআগে ব্রাজিলীয়রা খেলা নিয়ে এতোটা মাথা ঘামায়নি। খেলাটা শুরু হওয়ার পরইযেটা নিয়ে ভাবনা বেড়ে গেছে তাদের। রাস্তায় পথে চলতে গেলে ব্রাজিলেরনাগরিকরা ফুটবল নিয়ে কথা বলেন। দর্শকদের মনোভাব, খেলোয়াড়দের মনেভাব তারাজানেন। দর্শকদের রাগ ক্ষোভের প্রকাশের কারণটাও তাই অনুমান করা যায়। চেলসিরফুটবলার ডেভিড লুইস আরো যুক্তি তুলে ধরলেন, আমরা যদি গ্রুপ পর্বে ৩-০গোলে ম্যাচ জিতি, আর দ্বিতীয় পর্বে যদি ১-০ গোলে হেরে বাড়ি ফেরত আসি-তাহলে কী সেটা ভালো হবে?প্রতিটি ম্যাচেই আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। দ্বিতীয়রাউন্ড নয়, আমরা চাই বিশ্বকাপ।ক্ষোভ, হতাশা যাই থাকুক না কেনো, গোটা ব্রাজিলের চাওয়াটাও এমনই!