বাহরাইনের কাছে হেরে স্বপ্ন ভাঙলো বাংলাদেশের

স্টাফ রিপোর্টার: শেষ বাঁশি বাজতেই স্টেডিয়ামে ঘটা করে ফাটানো হলো আতশবাজি। ততোক্ষণে উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা বাহরাইনের খেলোয়াড়রা। অন্যদিকে রনি-হেমন্তরা টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার লজ্জায় মুখ লুকাতে বসে পড়লেন হাঁটু গেড়ে। প্রথম সেমিফাইনালে বাহরাইনের যুবাদের কাছে বাংলাদেশ হেরে গেছে একমাত্র গোলে। সর্বশেষ সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়ার ব্যর্থতা মাথায় করে গোল্ড কাপ শুরু করেছিলেন মামুনুলরা। সাফ ফুটবল ব্যর্থ হওয়া কোচ মারুফুল হক নিজেকে প্রমাণের আরেকটি সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু ফলাফল শূন্য। গোল্ড কাপের গত আসরের রানার্সআপ বাংলাদেশ বিদায় নিল এবার সেমি-ফাইনালেই!
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সোমবার ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে ইয়াসিন বক্সের একটু ওপরে ফাউল করলে ফ্রি-কিক পায় বাহরাইন অনূর্ধ্ব-২৩ দল। অধিনায়ক নাসির আল কাশমির শট পোস্টের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। প্রতিপক্ষ গোলকিপারকে ফাউল করে হলুদ কার্ড পান মিঠুন চৌধুরী। ২৪তম মিনিটে বাংলাদেশের তৈরি করা প্রথমার্ধের সেরা সুযোগটিও নষ্ট করেন এ ফরোয়ার্ড। রায়হানের লম্বা থ্রোয়ে বক্সের মধ্যে স্বাগতিক দলের কেউ শট নিতে না পারার পর ডান দিক থেকে আক্রমণ সাজানো হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসের ক্রসে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন মিঠুন।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে ডান দিকের বক্সের বাইরে বিপজ্জনক এলাকায় আবারও ফাউল করেন ইয়াসিন। বাহরাইনের ফরোয়ার্ড আনোয়ার আলির ফ্রি কিক পাঞ্চ করে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান দু ম্যাচ পর গোলপোস্টের নিচে ফেরা শহীদুল আলম সোহেল। প্রথমার্ধের শেষ দিকে শহীদুলের ভুলে এগিয়ে যায় বাহরাইন। সেলিম আদেলের ক্রস লাফিয়ে পাঞ্চ না করে হাত দিয়ে নামিয়ে দেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক; সামনে থাকা প্রতিপক্ষ দলের মিডফিল্ডার ইব্রাহিম আলহুতি নিখুঁত হেডে বল লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। এ গোলেই শেষ পর্যন্ত স্বপ্ন গুঁড়িয়েছে স্বাগতিকদের। অবশ্য পিছিয়ে পড়ার পর অনেক সুযোগ তৈরি করেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় এক রাশ হতাশা নিয়ে ঘরে ফিরতে হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আসা হাজার দশেক সমর্থককে। ৫২তম মিনিটে অবশ্য বাধা হয়ে দাঁড়ায় গোলপোস্ট। মিঠুনের ক্রসে রনি নেওয়া হেড গোলরক্ষকে পরাস্ত করলেও পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
চোট পাওয়া মামুনুলকে তুলে নিয়ে মিডফিল্ডার সোহেল রানাকে ও ফরোয়ার্ড মিঠুনকে তুলে ডিফেন্ডার ‍তপু বর্মনকে নামান বাংলাদেশ কোচ। মিডফিল্ডার মোনায়েম খান রাজুর জায়গায় নামেন ফরোয়ার্ড জুয়েল রানা। তাতে অবশ্য ম্যাচের ভাগ্য বদলায়নি। ৮০তম মিনিটে আরেকটি সুযোগ হারান রনি। নাসিরউদ্দিন চৌধুরীর ক্রস বক্সে ফাঁকায় পেয়েও এবার তাড়াহুড়ো করে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন এই ফরোয়ার্ড। ফিনিশিংয়ের সমস্যা যে কাটেনি; রয়ে গেছে আগের মতোই; তা এ ম্যাচেও ফুটে উঠল বারবার।