দিন শেষে সঙ্গী হলো আক্ষেপ

স্টাফ রিপোর্টার: তৃতীয় দিনটি অনায়াসে বাংলাদেশ নিজেদের করে নিতে পারতো।  নিজেদের করে নেয়ার সব উপকরণই ছিলো সাজানো। দরকার ছিলো কেবল সুযোগটা কাজে লাগানো। সুযোগের সদব্যবহার কি পুরোপুরি করতে পেরেছে বাংলাদেশ? ১ উইকেটে ২৩২ থেকে দিন শেষ করতে হলো ৮ উইকেটে ৪০৯-এ। মাঝে সময় কাটলো ফলোঅন এড়ানোর ‘শঙ্কায়’।  ফলোঅনের ফাঁড়াটা আপাতত কেটেছে বটে। তবে দুশ্চিন্তার মেঘ যে মাথার ওপরেই ভেসে বেড়াচ্ছে। মুশফিকুর রহিমের দল এখনো পিছিয়ে ১৭৮ রানে, হাতে উইকেট অবশিষ্ট দুটি। শামসুর রহমান আর ইমরুল কায়েসের সেঞ্চুরিতে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কাকে ভালোই জবাব দিচ্ছিলো বাংলাদেশ। দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলা ইনিংস-গাড়ি হঠাতই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিটকে পড়ার উপক্রম হলো। শামসুর-ইমরুলের দ্বিতীয় উইকেটে জুটিতে এলো ২৩২ রান। এর পরের ১৬৪ রানে হাওয়া হয়ে গেল ৭ উইকেট। শামসুর আর ইমরুলের সেঞ্চুরির পরও গত দিনে পতন ঘটা উইকেটগুলোই মন খারাপ করিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। ইমরুল-শামসুর-মুমিনুল-সাকিব, একটি উইকেটও কি টেস্টসুলভ! দ্বিতীয় উইকেটে ২৩২ রান তোলা ইমরুল ও শামসুর পুরো সময় এতো ভালো খেললেন, সেঞ্চুরি করে দেখিয়ে দিলেন নিজেদের সামর্থ্য, উইকেটে টিকে রইলেন এতোক্ষণ, কিন্তু তাদের বিদায় যেন কেমন বেসুরো ঠেকলো! অজন্তা মেন্ডিসের বলে শামসুর যে শটটি খেলে বোল্ড হলেন, তার কোনো দরকার ছিলো? ১৯১টি বল খেলে ১০৬ রান করা এ ব্যাটসম্যান কি পারতেন না নিজের সংগ্রহকে আরও স্ফীত করার চেষ্টা নিতে? পারতেন না মাথা ঠাণ্ডা রেখে দলের প্রয়োজনে আরও কিছুক্ষণ উইকেট আগলে থাকতে? একই অভিযোগ ইমরুল কায়েসের বিরুদ্ধেও। ওই মেন্ডিসের বলেই বাইরে বেরিয়ে এসে শট খেলার পাগলামিতে কেন তাকে পেয়ে বসলো তার উত্তর নেই। দীর্ঘক্ষণ উইকেটে ছিলেন, হয়তো কিছু শারীরিক সমস্যাও হচ্ছিলো, কিন্তু হঠাত করেই কেন এতো ধৈর্যহারা হবেন? মুমিনুল হক সুইপ শট খেলে আউট হয়েছেন। মাত্র উইকেটে আসা একজন ব্যাটসম্যানের জন্য বিপজ্জনক এ শটটি খেলার আগে মুমিনুল কি একবারও ভাবলেন না কুমার সাঙ্গাকারার মতো ব্যাটসম্যান দেড় শয়ের আগে একবারও এমন শট খেলেননি! সাকিব গত টেস্টের মতো চট্টগ্রামেও ধারাবাহিক ছিলেন বটে। তবে সেট হয়েও প্রতিপক্ষের বোলারদের উইকেটে বিলিয়ে দেয়ার কি মানে! তার ৫০ রানের ইনিংসের ফিতে কি আরও লম্বা করা যেতো না? নাসির হোসেনকেও একই অভিযোগে অভিযুক্ত করা যায় অনায়াসে। উইকেটে থিতু হওয়ার পর ৪২ রানেই দিয়ে এলেন উইকেটটি। সাঙ্গাকারা যেখানে ৩১৯ রান করেও আত্মতুষ্টিতে ভোগেন না, সেখানে শতক বা অর্ধশতকের পর কেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা নিজেদের আরও বড় অর্জনের পথে প্রয়োগ করতে পারেন না? বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আত্মাহুতির দিনে অজন্তা মেন্ডিসের কৃতিত্বকে খাটো করার উপায় নেই। বহুদিন পর নিজেকে  চেনালেন মেন্ডিস। তুলে নিলেন ৪ উইকেট। মেন্ডিসের দিনে দিলরুয়ান পেরেরাও কম যাননি। ডানহাতি এ স্পিনার ঝুলিতে পুরেছেন ৩ উইকেট।