ইতিহাস গড়ে বিশ্বকাপে ফ্রান্স

মাথাভাঙ্গা মনিটর: ঘুরে দাঁড়ানোর অসাধারণ এক দৃষ্টান্ত গড়লো ফ্রান্স। বাছাইপর্বের প্লে-অফের ফিরতি লেগে ইউক্রেনকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলা নিশ্চিত করেছে ১৯৯৮ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। এই প্রথম ইউরোপীয় অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্লে-অফে প্রথম লেগে দু গোলে পিছিয়ে থেকেও বিশ্বকাপে যাওয়ার দৃষ্টান্ত গড়লো কোনো দল। প্রথম লেগে প্রতিপক্ষের মাঠে ২-০ ব্যবধানে হেরেছিলো ফরাসিরা। দু লেগ মিলে ৩-২ গোলে এগিয়ে ব্রাজিলের টিকেট পেলো দিদিয়ের দেশশমের দল।

বিশ্বকাপের টিকেট পেতে হলে কমপক্ষে তিন গোলের ব্যবধানে জয় প্রয়োজন ছিলো ফ্রান্সের। সে লক্ষ্যে প্যারিসে তারা শুরুটাও করেছিলো দারুণ। প্রথম দশ মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার সহজ দুটি সুযোগ তৈরি করেছিলো ফ্রান্সের আক্রমণভাগ। কিন্তু নয় মিনিটে মিডফিল্ডার পল পোগবা ও ১০ মিনিটে স্ট্রাইকার করিম বেনজেমার হেড জালে ঢোকেনি।মামাদু সাকোর গোল। সাকোর গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। ম্যাচের ২২ মিনিটে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ডি বক্সের কিনারা থেকে নেয়া মিডফিল্ডার ম্যাথিউ ভ্যালবুয়েনার দারুণ একটি ক্রস অতিথিদের গোলরক্ষক আন্দ্রি পিয়াতোভ ঠেকিয়ে দিলেও ফিরতি বল পেয়ে যান ডিফেন্ডার মামাদু সাকো, যা জালে ঢোকাতে ভুল করেননি তিনি। ফ্রান্সের দ্বিতীয় গোলটি করেন করিম বেনজেমা  বেনজেমাকে নিয়ে সতীর্থদের উচ্ছ্বাস। বিশ্বকাপের পথে দলকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেন স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা। গোলমুখে জটলায় বল পেয়ে কাছ থেকে জোরালো শটে বল জালে জড়ান রিয়াল মাদ্রিদের এই ফরোয়ার্ড। দুই লেগ মিলে স্কোর তখন ২-২ সমতায়। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল না হওয়ায় ব্রাজিল যাত্রার স্বপ্ন বুকে নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামে দু দলই। ৪৭ মিনিটে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খায় ইউক্রেন। গত মৌসুমের ইউরোপ সেরা খেলোয়াড় মিডফিল্ডার ফ্রাঙ্ক রিবেরিকে ফাউল করায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার ইয়েভহান খাচেরিদি। বিশ্বকাপের চুড়ান্ত পর্বে খেলা নিশ্চিত করে ফ্রান্সের ফুটবলারদের উচ্ছ্বাস। তারপরও ১০ জনের দল নিয়ে নিজেদের গোলমুখ ভালোই সামলে রেখেছিল অতিথিরা। কিন্তু সর্বনাশ ঘটে ৭২ মিনিটে। বদলি মিডফিল্ডার ওলে হাসিয়েভের আত্মঘাতী গোলে সব স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় ইউক্রেনের। এদিকে প্লে অফের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সুইডেনকে তাদেরই মাঠে ৩-২ গোলে হারিয়ে দুই লেগ মিলে ৪-২ ব্যবধানে বিশ্বকাপে উঠেছে পর্তুগাল। হ্যাটট্রিক করেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। রোনালদোর একমাত্র গোলে প্রথম লেগও জিতেছিলো পর্তুগাল। ম্যাচ শেষে পর্তুগাল কোচের আলিঙ্গনে রোনালদো।

এছাড়া প্লে অফের লড়াই শেষে ইউরোপ থেকে বিশ্বকাপের টিকেট পেয়েছে গ্রিস ও ক্রোয়েশিয়া। ফিরতি লেগে নিজেদের মাঠে ক্রোয়েশিয়া ২-০ গোলে আইসল্যান্ডকে হারিয়েছে। প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হওয়ায় দুই লেগ মিলে ক্রোয়েশিয়ার অগ্রগামিতাও ২-০। আর রোমানিয়ার সাথে ফিরতি লেগে ১-১ গোলে ড্র করলেও প্রথম লেগ জেতায় মোট ৪-২ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিশ্বকাপের চুড়ান্ত পর্বে উঠেছে গ্রিস। প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ৩-১ গোলে জিতেছিল তারা। ইনজুরি সময়ে চতুর্থ গোলটিও পেতে পারতেন ২৮ বছর বয়সী রোনালদো। তবে বিশ্বকাপ নিশ্চিত হওয়ার আনন্দেই কিনা, দূর থেকে নেয়া সতীর্থের লম্বা পাস থেকে লাফিয়ে উঠে নিখুঁত দক্ষতায় বল আয়ত্বে নিলেও শটটি নিলেন বড় অবহেলায়। গোলবার ঘেঁষে তা চলে গেল মাঠের বাইরে।