অবিচারের শিকার তাসকিন : আপিল করা হতে পারে

 

স্টাফ রিপোর্টার: ভারতে থাকা জাতীয় দল ম্যানেজমেন্টের বরাতে সকাল থেকেই খবরটা শোনা যাচ্ছিলো আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশন অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু আশ্বাস ছিলো যে, তাসকিন আহমেদ পরীক্ষা উতরে গেছেন। বিকেল বেলা সবাইকে চমকে দিয়ে আর্ন্তজাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানালো, অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায়ে বাংলাদেশের দুই বোলার আরাফাত সানি ও তাসকিন আহমেদকে সব ধরণের বোলিং থেকে নিষিদ্ধ করেছে তারা। আইসিসি বলেছেন, চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় আরাফাত সানির প্রায় সব ডেলিভারি বৈধ সীমার ওপরে বলে দেখা গেছে। তাসকিনের ক্ষেত্রে কিছু কিছু ডেলিভারি অবৈধ বলে জানিয়েছে আইসিসি। গতকালই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এই বার্তা পাওয়ার পর চলমান আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দু জনের বদলী চেয়ে আবেদন করেছে। বাংলাদেশ জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন নিশ্চিত করেছেন, আরাফাত সানির বদলে সাকলাইন সজীব ও তাসকিন আহমেদের বদলে অলরাউন্ডার শুভাগত হোম যাচ্ছেন ভারতে। সানির বদলে সাকলাইনের যাওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু ফাস্ট বোলার তাসকিনের বদলে স্পিনিং অলরাউন্ডার শুভাগত কেন? হাবিবুল এই প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘ধর্মশালার কন্ডিশনের কথা মাথায় রেখেই মূলত পাঁচ জন পেসার রাখা হয়েছিলো দলে। এখন আমাদের মনে হয়েছে, সামনের ম্যাচগুলো আমরা যে কন্ডিশন-উইকেটে খেলব, একাদশে হয়ত ৩ পেসারের বেশি খেলানো হবেই না। টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়াও ছিলো স্পিনে আরেকটি বিকল্প। সব মিলিয়েই শুভাগতকে বেছে নিয়েছি আমরা।’ সানি ও তাসকিনের ওপর তাত্ক্ষনিক কার্যকর হওয়া এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের শীর্ষ এই দুই বোলার অ্যাকশন সংশোধন করে পুনরায় পরীক্ষা দেয়ার আগ পর্যন্ত আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারবেন না। এমনকি আইসিসির সদস্য কোনো দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটও খেলতে পারবেন না। তবে, বিসিবি মনে করলে অ্যাকশন শোধরানোর অংশ হিসেবে নিজের দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে তাদের খেলার অনুমতি দিতে পারে, ‘আরাফাত ও তাসকিনের এই আর্ন্তজাতিক নিষেধাজ্ঞা সদস্য দেশগুলোর ঘরোয়া ক্রিকেট ও তাদের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকার জন্যও প্রযোজ্য হবে। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অনুমতিসাপেক্ষে দুই বোলার, তাদের উন্নতির জন্য নিজেদের ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নিতে পারবেন।’

উল্লেখ্য গত ৯ মার্চ ধর্মশালায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচে এই দু জন বোলারের অ্যাকশন সন্দেহজনক বলে রায় দেন ম্যাচের কর্মকর্তারা। তাদের রিপোর্টের পর আরফাত সানি ১২ মার্চ ও তাসকিন ১৫ মার্চ নিকটস্থ চেন্নাইয়ের শ্রী রামচন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরোটরিতে অ্যাকশনের পরীক্ষা দেন। গতকাল আইসিসি পরীক্ষার ফল ঘোষণা করে। কার ঠিক কোন ডেলিভারিতে হাত কতোটা বাঁকছে, সেটা আইসিসি প্রকাশ না করলেও বলেছে, ‘আরাফাতের বিশ্লেষন দেখাচ্ছে যে, তার সিংহভাগ ডেলিভারি আইসিসির সহনশীলতা মাত্র ১৫ ডিগ্রি অতিক্রম করছে। অন্যদিকে তাসকিনের সব ডেলিভারি বৈধ নয়। অফস্পিনার আরফাত সানির পরীক্ষার ফলাফল মানুষ একরকম মেনে নিলেও সুদর্শন অ্যাকশনের অধিকারী তাসকিনের খবরে মারাত্মক বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে দেশে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে শুরু করে সাবেক ক্রিকেটার, ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বিস্ময়ের সাথে তাসকিনের খবরটির প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন।