১৫ শতাংশ ভ্যাটে দাম বাড়বে বিদ্যুতের

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুতের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক-ভ্যাট) আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুতে ৫ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর রয়েছে। ফলে ভোক্তা পর্যায়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির খুচরা মূল্য ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। আর মূল্যবৃদ্ধির বাড়তি চাপে পিষ্ট হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে জনগণ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বলছে, বিদ্যুত বিলের সাথে এ ভ্যাট এমনভাবে সমন্বয় করা হবে যাতে গ্রাহকদের ওপর অতিরিক্ত খরচের বোঝা না চাপে। এ জন্য বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও বিতরণ কোম্পানিগুলোকে উত্পাদন পর্যায়ে কর রেয়াত দেয়া হবে। তবে পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ বলেন, বিদ্যুত বিলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলে সমস্যা তৈরি হবে। বিদ্যুতের দাম একই রেখে এ ভ্যাট আদায় করা যাবে না। পিডিবি এখনো লোকসানি প্রতিষ্ঠান। গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করেই এ ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে। ভ্যাটের হার বৃদ্ধি হলে বিদ্যুতের দামও বাড়াতে হবে।

এ মুহূর্তে এটি কাম্য নয়। তিনি জানান, সরকারের নীতিনির্ধারণী কর্তাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সপ্তাহেই এ বিষয়ে একটি সমাধান আসতে পারে। পিডিবির এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, পিডিবি বার্ষিক প্রায় ৭০০ কোটি টাকার কর রেয়াত পায়। কিন্তু বিদ্যুত খাত থেকে ১৫ ভাগ হারে ভ্যাট আদায় করলে এর পরিমাণ দাঁড়াবে তিন হাজার ১০০ কোটি টাকা। এখানে আরো ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার সংকট থাকে। বিপুল পরিমাণ এই অর্থ লোকসানি পিডিবির পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে দাম বাড়ানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকবে না। গত ১ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেট বক্তৃতায় বিদ্যুতের ওপর ভ্যাট ৫ ভাগ থেকে বাড়িয়ে অন্যান্য পণ্যের মতো ১৫ ভাগ করার প্রস্তাব করেছেন।

বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, এই ভ্যাট আরোপ করা হলে সরকার অতিরিক্ত ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে পারবে। বিদ্যুত বিল বাবদ গ্রাহকদের খরচ ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে আরো ৬৭ পয়সা বাড়বে। গ্রাহকরা বলছেন, নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্পন্ন বিদ্যুত না দিয়ে শুধু দামই বাড়িয়ে দিচ্ছে সরকার। সেবার মান বাড়াচ্ছে না। বিদ্যুতের দাম বাড়লে পণ্যের উত্পাদন খরচ বাড়বে। অনেক নিত্য পণ্যের দামও এতে বেড়ে যাবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়লেও বেসরকারি চাকরিজীবীদের তেমন বাড়েনি। কর-ভ্যাটে জনগণের পকেটের শেষ টাকাটাও নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সঞ্চয় নেই। বরং দেনায় পড়তে হবে।