হবিগঞ্জে শাকিব খানের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা

স্টাফ রিপোর্টার: চিত্র নায়ক শাকিব খানসহ রাজনীতি ছবির পরিচালক এবং প্রযোজকের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জে প্রতারণা ও মানহানির মামলা দায়ের হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সম্পা জাহানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা গ্রামের দিনমজুর ইজাজুল মিয়া। মামলায় ‘রাজনীতি’ সিনেমার নায়ক শাকিব খান, পরিচালক বুলবুল বিশ্বাস ও প্রযোজক আশফাক আহমেদকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, প্রায় ২ ঘণ্টা ১৬ মিনিট ১১ সেকেন্ডের রাজনীতি চলচ্চিত্রের ২৬ মিনিট ১২ সেকেন্ডর সময় চলচ্চিত্রের নায়িকা অপু বিশ্বাস নায়ককে উদ্দেশ্য করে বলেন ‘এভাবে বার বার আর কোনো দিন চলে যেতে দেবো না আমার স্বপ্নের রাজকুমার, জবাবে নায়ক শাকিব খান ‘আমিও তোমাকে আর ছেড়ে যাবো না আমার রাজ কুমারী’। নায়িকা অপু বিশ্বাস বলেন ‘আমার ফেইসবুক আইডি যে ‘রাজকুমারী’ তুমি তা জানলে কী করে। জবাবে নায়ক শাকিব খান বলেন ‘যেভাবে তুমি জান আমার মোবাইল নাম্বার’। বলে তিনি এক দমেই গ্রামীণ ফোনের ০১৭১৫-২৯৫২২৬ নাম্বারটি বলেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে গ্রামীণ ফোনের ০১৭১৫-২৯৫২২৬ মোবাইল নাম্বারটি চিত্র নায়ক শাকিব খানের নয়। এটির মালিক হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা গ্রামের দিনমজুর ইজাজুল মিয়া। আসামিদের মিথ্যা তথ্যের কারণে গত ১০ জুলাই রাত থেকে ১৫ জুলাই রাত ৯টার মধ্যে ৪৩২টি কল আসে। তাদের বেশির ভাগই মেয়ে কণ্ঠ। শাকিব খান মনে করে খুলনা থেকে এক গৃহকর্মী চলে আসে ইজাজুলের বানিয়াচংয়ের বাড়িতে। তিনি পেশায় অটোরিকশা চালক। তাছাড়া রাত বিরাতে অনবরত মেয়েরা ফোন করতে থাকে ইজাজুলের মোবাইল নাম্বারে। ফলে ১ সন্তানের জনক ইজাজুলের সংসার ভাঙ্গার উপক্রম হয়। অনুমতি ছাড়া সিনেমায় মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করায় এবং সেটি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হওয়ায় প্রতারণা ও ৫০ লাখ টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেন ইজাজুল। মামলাটি তদন্ত করে আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবিগঞ্জ ডিবি’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

মামলার বাদী ইজাজুল মিয়া জানান, দিন-রাত শাকিব ভক্তরা আমাকে ফোন করে ভোগাতে থাকেন। আমি শাকিব না তা বার বার বললেও তারা মানতে চান না। তাদের যন্ত্রণায় আমার সব আয়ের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। তার সংসার ভাঙ্গার উপক্রম হয়েছে। তিনি বলেন, আমার কি দোষ। আমার সাথে কেন তারা প্রতারণা করলেন।

এ ব্যাপারে মামলার আইনজীবী এমএ মজিদ জানান, কারও অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত মোবাইলফোন আমার (নায়ক শাকিব খান যেভাবে বলেছেন) বলে প্রচার করা একটি প্রতারণা। মোবাইল নাম্বারটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ায় বাদীর দিনের অধিকাংশ সময় ব্যয় হচ্ছে মোবাইলফোন রিসিভ করতে গিয়ে। তাতে বাদী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আমরা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রাজনীতি সিনেমা প্রচার বন্ধের আবেদন জানিয়েছি। একই সাথে প্রতারণা ও মানহানি করায় আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছি।