সর্বনাশা সেই কবিরাজ আনিচের অপচিকিৎসা অব্যাহত

গ্রেফতারের পর দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি : মুক্ত হয়েই ফিরেছে পুরাতন পেশায়!

 

সুবলপুরের হাসিবুলের পর যন্ত্রণায় কাতর দামুড়হুদা মদনার সব্দুল্লাহ

 

স্টাফ রিপোর্টার: দামুড়হুদা কাদীপুরের সেই কথিত কবিরাজ আনিচের অপচিকিৎসা বন্ধ হয়নি। আরো এক হাত ভাঙ্গা কিশোর অপচিকিৎসায় হাত হারাতে বসেছে। হাতের হাড় ভেঙে হাসপাতালে চিকিৎসার বদলে ওই কবিরাজের দেয়া চিকিৎসা নিয়ে এবার হাত হারাতে বসেছে দামুড়হুদা মদনার সব্দুল্লাহ (১৭)। অপচিকিৎসায় টানা ২২ দিন ধরে অসহনীয় যন্ত্রণা সহ্যর পর অবশেষে গতকাল রোববার তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার মদনা পারকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মদনা গ্রামের আব্দুল জলিল দরিদ্র। তার ছোট ছেলে সব্দুল্লাহ মাছ ফেরিওয়ালা। ২২দিন আগে বাইসাইকেলযোগে মাছ বিক্রি করতে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বড়শলুয়ায় গেলে এক গৃহীনি গাছে উঠে আমড়া পেড়ে দেয়ার কথা বলে। জলিল অল্প কিছু বকশিসের জন্য গাছে উঠে আমড়া পাড়ার সময় আছড়ে পড়ে হাত ভাঙে। প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আসে। খরচ হবে ভেবে সে বাড়ি ফেরে। গ্রামের কয়েকজনের প্ররোচণায় সব্দুল্লাহকে নেয়া হয় কাদীপুর গ্রামের আলী শেখের ছেলে কথিত কবিরাজ আনিছুর রহমান আনিচের বাড়িতে। তিনি কিছু টাকার বিনিময়ে হাড়ভাঙ্গা গাছ বাটা আর বাশের কাবারিসহ টুকরো কাপড় দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দেন। এতেই নেমে আসে সর্বনাশ! হাত বেধে দিলে তীব্রযন্ত্রণা শুরু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গতকাল ভর্তির পর আব্দুল্লাহ ও তার শয্যাপাশে থাকা নিকটজনেরা অভিযোগ করে বলেন, হাত বেঁধে দিলে বাড়ি ফিরিয়ে নেয়া হয়। যন্ত্রণা বাড়তেই থাকে। একদিন পর পর কবিরাজের বাড়িতে নেয়া হয়। নতুন নতুন চিকিৎসা দেয়। অবশেষে হাত খুলে দেখা যায় হাতে ইনফেকশন। কবিরাজ আনিছ কিশোর আব্দল্লাহর হাত এক্স-রে করতে বলে। পরে জানায়, রাজশাহী হাসপাতালে নিতে হবে। এখানে হবে না। এ কথা শুনে কবিরাজ আনিছের নেয়া ৩ হাজার টাকা ফেরত দিতে বললে উল্টো আচরণ করে। উপায় না পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করিয়েছি।

অভিযুক্ত তথাকথিত কবিরাজ আনিচের বিরুদ্ধে এর আগেও অপচিকিৎসার অভিযোগ উত্থাপন হয়। চুয়াডাঙ্গা ডিবি পুলিশ তাকে গত বছরের ১৮ এপ্রিল গ্রেফতারও করে। পরে অবশ্য চিকিৎসা বাবদ কিছু টাকা দিয়ে কবিরাজ আনিচ মুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরে। মুক্ত হওয়ার সময় আর হাড়ভাঙ্গা রোগীর চিকিৎসা দেবে না মর্মে প্রতিজ্ঞাও করে। বাড়ি ফিরেই প্রতিজ্ঞা ভুলে আবারও শুরু করে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা। সে সময় হাতে ইনফেকশন হয়ে তীব্র যন্ত্রণায় কাতরের পর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠে দামুড়গহুদা সুবলপুরের নাজিমুদ্দিনের ছেলে হাসিবুল। এবার অপচিকিৎসায় যন্ত্রণায় কাতর হয়ে অবশেষে হাসপাতালে মদনার সব্দুল্লাহ।