সম্প্রচার নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত

স্টাফ রিপোর্টার: টেলিভিশন ও বেতারের কার্যক্রম তদারকি ও নিয়ন্ত্রণে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় তোলা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। নীতিমালার আলোকে আইনের মাধ্যমে একটি স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে। ওই কমিশন একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন করে টেলিভিশন ও বেতারের লাইসেন্স দেয়ার জন্য সরকারকে সুপারিশ করবে। তথ্যমন্ত্রী গতকাল রোববার বলেন, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা সংক্রান্ত কমিটির সভায় নীতিমালাটির খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয় এতোদিন ধরে যার আলোকে বেসরকারি টেলিভিশন ও বেতারের লাইসেন্স দিয়ে আসছে, তাতে গলদ রয়েছে বলে গণমাধ্যম বিশ্লেষকদের অভিযোগ। তবে প্রস্তাবিত নীতিমালায় তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে অনাপত্তিপত্র পাওয়া বেসরকারি সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হিসাবে বিবেচিত হবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে।

এতোদিন ধরে সম্প্রচার নীতিমালা না থাকায় সমস্যা হওয়ার কথা স্বীকার করেন তথ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন বিষয়ে জনগণের অভিযোগ ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় আছে। এছাড়া রাষ্ট্রের অভিযোগ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ থাকলে ওকালতি করা যাবে। তবে কমিশন স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করবে। নীতিমালায় সম্প্রচার কমিশন প্রণীত বিধিমালায় সম্প্রচারিত তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা ও পেশাগত নিরপেক্ষতা নিশ্চিত, পেশাগত নৈতিকতা সমুন্নত রাখা এবং সংবেদনশীল বিষয় সম্প্রচারের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, সম্প্রচার নীতিমালার আলোকে প্রতিটি সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানকে সুনির্দিষ্ট সম্পাদকীয় নীতি প্রণয়ন করতে হবে। আইনের মাধ্যমে স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন গঠনের বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়, এ কমিশন সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান, তথ্য এবং বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত মান সম্পর্কে জনগণের অভিযোগ গ্রহণ এবং তা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করবে। কমিশন একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হবে উল্লেখ করে খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, এতে একজন চেয়ারম্যান ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য থাকবে। চেয়ারম্যান ও সদস্যদের তথ্য মন্ত্রণালয় গঠিত অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে নির্বাচিত করা হবে এবং রাষ্ট্রপতি এদের নিয়োগ দেবেন। সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের জন্য একটি অনুসরণীয় নিয়মাবলী তৈরি করবে সম্প্রচার কমিশন। তবে প্রয়োজনে এ বিধিমালা সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সম্প্রচার কমিশন সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করতে পারবে বলেও নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে। সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের কোনো অনুষ্ঠান, সংবাদ বা বিজ্ঞাপন যদি কোনো নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের অধিকার ক্ষুণ্ন করে তাহলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কমিশনের কাছে অভিযোগ করতে পারবে। নীতিমালা অনুযায়ী, এই অভিযোগ নিষ্পত্তিতে সম্প্রচার কমিশন বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। ১৩ পৃষ্ঠার খসড়া সম্প্রচার নীতিমালার ছয়টি অধ্যায়ে সম্প্রচার নীতিমালার পটভূমি, সম্প্রচার লাইসেন্স, অনুষ্ঠান সম্প্রচার সংক্রান্ত, বিজ্ঞাপন সম্প্রচার সংক্রান্ত, অনুষ্ঠান সম্প্রচারের অনুপযুক্ততা এবং সম্প্রচার কমিশনের ব্যাপারে বিশদভাবে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দেয়া হয়েছে। তথ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা কমিটির সভাপতি ও তথ্যসচিব মরতুজা আহমদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *