সকল মৃত্যুদণ্ড বাতিলের আহবান অ্যামনেস্টির

মাথাভাঙ্গা মনিটর: বাংলাদেশকে অবশ্যই সকল মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করতে হবে। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বাংলাদেশের একজন এমপিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রতি সুবিচারের এটা কোনো পথ নয়। গতকাল মঙ্গলবার বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ওই বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বাংলাদেশ গবেষক আব্বাস ফয়েজ বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় যেসব মানুষ নৃশংসতার শিকার হয়েছেন তারা এবং তাদের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে সুবিচার দাবিদার। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডই জবাব নয়। মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি ঘটনাকে আরেকটি লঙ্ঘন দিয়ে সংশোধন করা যায় না। তিনি আরও বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও অন্য সবার বিরুদ্ধে দেয়া মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি অবশ্যই বাংলাদেশকে বাতিল করতে হবে। মৃত্যুদণ্ড হলো একটি নির্মম ও অমানবিক এক শাস্তি। এটা সুবিচারের কোনো পথ কখনও হতে পারে না। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বাংলাদেশের বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর সংসদ সদস্য। তিনি ছয় বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তাকে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় গণহত্যা ও নির্যাতনসহ বেশ কিছু অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তার পরিবার বলেছে, তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। আব্বাস ফয়েজ বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই মৃত্যুদণ্ডের শাস্তিতে ফিরে না গিয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আপিল আন্তর্জাতিক আইন ও মানদণ্ড বজায় রেখে বিবেচনা করতে, যাতে সুষ্ঠু বিচার হয়। মৃত্যুদণ্ড বিলোপ করার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই ফাঁসি কার্যকর বিলম্বিত বা মুলতবি করতে হবে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সকল মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করে। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০১০ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের বিচারের জন্য দেশীয় আইনের অধীনে গঠন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিটি)। এ পর্যন্ত এ আদালত যে সাত জনকে শাস্তি দিয়েছেন তার মধ্যে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়া হয়েছে। তারা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর চার সদস্য। বাকি দু’জনকে দেয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তার একজন আবদুল কাদের মোল্লা। সুপ্রিম কোর্ট তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন সরকারের এক আপিলে। এখন তিনি এ শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন না। কারণ এ নিয়ে শুনানির জন্য আর কোনো উচ্চতর আদালত নেই।