শীতের আগমনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন লেপতোষক আর জাজিমের কারিগররা : গত বছরের তুলনায় দাম একটু বেশি

নজরুল ইসলাম: লজ্জাবতী নারীর বেশে আসা হেমন্তের বিদায়ের পর পত্রহীন গাছপালাকে অলঙ্কারবিহীন বিধবার সাজে সাজিয়ে আসছে শীত। শীতের আবির্ভাবে প্রতিটি পরিবারের নারীরা যেমন ব্যস্ত হয়ে পড়ে শীতের পিঠা বানানো এবং ঘরের মাচায় কিংবা বাক্সে ভরে রাখা পুরনো লেপ-তোষক বের করে একটু রোদে শুকিয়ে নিতে। খাবারের পাশাপাশি সূর্যাস্ত যাওয়ার পরপরই রাতে বাড়ির গৃহিণীরা পরিবারের সদস্যদের শীত থেকে রক্ষা করতে সাধ্যমত লেপ কাঁথার ব্যবস্থা করে থাকে। হেমন্তের পর শীতের আবির্ভাব অলঙ্ঘনীয় বিধানেরই মতো। এ সমটায় সাধ ও সাধ্যের মধ্যে প্রতিটি পরিবারই প্রতিবছর না হলেও একবারের জন্যও যান লেপতোষকের দোকানে। আর শীতের আগমন উপলক্ষে ব্যস্ত সময় পার করেন লেপতোষক তৈরির কারিগররা। শীত নিবারণে বাজারে আধুনিক সব কম্বল জাতীয় জিনিসপত্র থাকায় লেপ-তোষকের কদর হ্রাস পাচ্ছে।

কারণ হিসেবে জানা যায়, লেপ তৈরিতে যে টাকা খরচ হয় সে টাকায় বাহারি ডিজাইনে শীত বস্ত্র কিনতে পাওয়া যায়। তারপরও লেপ তোষকের  কদর রয়েই গেছে।

লেপ-তোষকের কারিগর ইকরামুল ১৭/১৮ বছর ধরে বেছে নিয়েছেন লেপতোষক আর জাজিম তৈরির পেশা। শীতের আগমন উপলক্ষে কী পরিমাণ অর্ডার পেয়েছেন জিজ্ঞাসা করতেই জানালেন, ব্যবসা ভালো। যদিও লেপ ব্যবহারের মতো শীত এখনও পড়েনি তারপরও অনেকেই আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রতিদিনই অর্ডার পড়ছে। জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর খরচ একটু বেশি পড়ছে। তিনি জানান, ৬শ টাকা থেকে ১হাজার ৪শ টাকার মধ্যে লেপ তৈরির অর্ডার বেশি আসছে। লাল শালু, মলমলে ও তোষকের পাট্টা কাপড়ের দাম এ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে। কার্পাসতুলা ১১০ টাকা, গেঞ্জিতুলা ৬০ টাকা, উলের তুলা ৫৫ টাকা, গার্মেন্টেসের তুলা ৪০ টাকা এবং নরমাল তুলা ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লালশালু কাপড় ৩৫ টাকা, মলমল ৩৮ টাকা, তোষকের পাট্টা কাপড় ৪২ টাকা গজ দরে বিক্র হচ্ছে। আগে এ শিল্পের সাথে নারীরা জড়িত ছিলো। বর্তমানে গ্রামাঞ্চল ছাড়া শহরে নারীরা কেউ এ পেশায় জড়িত নেই। তিনি প্রতিদিন ৫/৬ টি করে লেপ বানাচ্ছেন। শীতের তীব্রতা বাড়লে কাজের চাপ আরও বাড়বে। তাই কবির ভাষাতেই বলতে হয় একটা শুধু ছিলো জামা তা-ও ছিঁড়েছে ভাদরে, শীত না আসলে ডাকে না কেউ আদরে। শীত এলেই খোঁজ হয় লেপ-তোষকের। ছুটতে হয় লেপ তোষকের দোকানে।