রোববার থেকে রেলের ভাড়া বাড়ছে ৭ দশমিক ২৩ ভাগ

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী রোববার থেকে বাড়ছে রেলের ভাড়া। বৃহস্পতিবার রেল কর্তৃপক্ষ বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৯ পয়সা অর্থাৎ বৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সর্বশেষ রেলের ভাড়া বাড়ানো হয় ২০১২ সালে। এ সময় ভাড়া বৃদ্ধি করা হয় ৫০ শতাংশ। এর আগে নতুন ভাড়া কার্যকরের আগে কিলোমিটারপ্রতি হার ছিলো ২৪ পয়সা। পরে বাড়িয়ে তা নির্ধারণ হয় ৩৬ পয়সা। এবার কিলোমিটারপ্রতি করা হচ্ছে ৩৯ পয়সা অর্থাৎ বৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। এছাড়া ট্যারিফ নির্ণয় পদ্ধতির কারণে এখন থেকে জ্বালানি, রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতনের বড় অংশ আদায় করা হবে ভাড়া থেকে।
সূত্র জানিয়েছে, ট্রেনে বর্তমানে এসি বার্থ, এসি সিট, স্নিগ্ধা, প্রথম শ্রেণি, শোভন চেয়ার, শোভনসহ বিভিন্ন শ্রেণিবিন্যাস রয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, ঢাকা-চট্টগ্রামের সাধারণ চেয়ারের ভাড়া ৩২০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৩৪০ টাকা। এসি চেয়ার ৬১০ টাকার পরিবর্তে হবে ৬৫০ টাকা। ঢাকা-সিলেট রুটে সাধারণ চেয়ার ২৯৫ টাকার ভাড়া হবে ৩১৫ টাকা। এসি চেয়ার হবে ৫৬৪ টাকা থেকে ৬০৪ টাকায়। ঢাকা-রাজশাহী রুটে সাধারণ চেয়ারের ক্ষেত্রে ৩১৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩৩৫ টাকা হবে। এসি চেয়ার হলে ৬০৪ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ৬৪৪ টাকায়। আর ঢাকা-খুলনা রুটে সাধারণ চেয়ারের ভাড়া ৪৬৫ টাকার পরিবর্তে হবে ৪৯৫ টাকা। এসি চেয়ারের ক্ষেত্রে ৮৯২ টাকার ভাড়া হবে ৯৪৯ টাকা।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০১২-১৩ অর্থবছরে রেলের পরিচালন ব্যয়ের ১৯ শতাংশ জ্বালানি খাতে, ২৩ শতাংশ রক্ষণাবেক্ষণ খাতে এবং ৫৮ শতাংশ কর্মচারী খাতে ব্যয় হয়েছে। জ্বালানি মূল্য বাজার দরের সাথে সম্পৃক্ত তাই জ্বালানির দাম বাড়লে রেলওয়ের ট্যারিফ আনুপাতিক হারে বাড়বে। তবে রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় বৃদ্ধি সরাসরি নির্ণয় কঠিন। বিষয়টি কনজুমার প্রাইস ইনডেক্সের (সিপিআই) সাথে সম্পৃক্ততার কারণে সিপিআই বৃদ্ধির অনুপাতে ট্যারিফ নির্ধারণ করা হচ্ছে। আর বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি, নতুন পে-স্কেল প্রদান ও নতুন কর্মচারী নিয়োগ ইত্যাদির কারণে কর্মচারী খাতে ব্যয় বাড়ে। এ খাতে ব্যয় বৃদ্ধি ট্যারিফ সংশোধনের মাধ্যমে সমন্বয় করা হবে। যেমন ৮ম জাতীয় বেতন স্কেল চালুর ফলে আয়-ব্যয়ের ব্যবধান বেড়ে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে পরিচালন অনুপাত আরো বাড়বে। অর্থাৎ এতে করে বাড়ছে ট্রেনে ভাড়ার পরিমাণও। মোটকথা সাধারণ মানুষের ওপর সরাসরি পড়ছে ওই ব্যয়ের খড়গ।
পরিবহন বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, রেলে আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি। গণপরিবহনের এ মাধ্যমটি টিকিয়ে রাখতে ভাড়া বাড়ানো প্রয়োজন ছিলো। প্রধানমন্ত্রী ভাড়া বৃদ্ধিতে সম্মতি দিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। এখন কর্তৃপক্ষ কোন সময় থেকে ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর করবেন তা রেল কর্তৃপক্ষের ব্যাপার।