যৌতুকের বলি ॥ আত্মহত্যা নাকি নির্মম নির্যাতনে মারার পর মৃতদেহ ঝুলিয়ে রাখা?

চুয়াডাঙ্গায় নিখোঁজের একদিন পর গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ॥ ময়নাতদন্ত

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় শহরে নিখোঁজের একদিন পর পুলিশ অন্তরা খাতুন (১৬) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে। গতকাল সোমবার সকাল নয়টায় শহরের পৌর কলেজ পাড়ার একটি পরিত্যক্ত বিস্কুট কারখানার ভেতর থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় পুলিশ সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, এ মৃত্যুর আড়ালে রহস্য নিহিত রয়েছে।
অন্তরার পিতা দামুড়হুদা কুড়–লগাছির চাকুলিয়া গ্রামের হািফজুর রহমান বলেছেন, রোববার সকাল ১০টায় মেয়ের সাথে মোবাইলফোনে কথা হয়। ওই সময় মেয়েকে বলেছিলাম জামাইর দাবিকৃত ৫০ হাজার নয়, ৩০ হাজার টাকা পপুলার ইনস্যুরেন্স থেকে তুলে ককেদিনের মধ্যে দেবো। এ কথাই শেষ। ঘণ্টাখানেকের মাথায় জামাই মোবাইলফোনে বলে, তোমার মেয়ে কোথায় যেন গেছে। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর এখন শুনছি মেয়ের লাশ পাওয়া গেছে। ওরা আমার মেয়েকে মেরে ঝুলিয়ে রেখে এখন আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করছে। আমি ওদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করবো। অন্তরার স্বামী শাকিবসহ তার বাড়ির লোকজন গতকাল সকাল থেকেই লাপাত্তা।
জানা গেছে, হাফিজুর রহমানের মেয়ে অন্তরা খাতুনের সাথে আনুমানিক ৭ মাস আগে চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজপাড়ার ইসলাম উদ্দীনের ছেলে শাকিবের বিয়ে হয়। অন্তরার মা বিলকিস খাতুন ও খালা ফাহিমা খাতুনের দাবি শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখে। অপরদিকে অন্তরার শাশুড়ি সাহেদা খাতুন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অন্তরা বেশ কিছুদিন ধরে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করছিলো। রোববার বেলা ১০টা থেকে সে নিখোঁজ ছিলো। অনেক এলাকা খোঁজাখুজির পর ওই দিবাগত মধ্যরাতে বাড়ির পার্শ্বে বিস্কুট কারখানায় গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় লাশটি পাওয়া যায়। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি লাশ উদ্ধার করে দ্রুত ময়নাতদন্ত্রের নির্দেশ দেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মোহাম্মদ জানান, মৃত্যুটি রহস্যজনক। হত্যা, না আত্মহত্যা তা জানার জন্য লাশ ময়নাতদন্তের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং সদর হাসপাতাল মর্গে মরদেহটি প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।