মেহেরপুরে কোচে আগুন ঝিনাইদহে ৬টি ককটেল বিস্ফোরণে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ আহত ৬

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর অনেকটা শান্তিপূর্ণ থাকলেও আলমডাঙ্গা ও বদরগঞ্জে জোরালো পিকেটিং : দোকান ট্রাক ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর

 

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি নেতৃত্বধীন ১৮ দলীয় জোটের তিন দিনের হরতালের প্রথম দিনে চুয়াডাঙ্গায় উল্লেখযোগ্য অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। একাধিক পক্ষ পিকেটিং মিছিল করলেও কোনো পক্ষেরই শীর্ষ নেতাদের তাতে সশরীরে দেখা যায়নি। বাগানপাড়া মোড় থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মেহেরপুরে শ্যামলী পরিবহনের থেমে থাকা কোচ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ঝিনাইদহে ককটেল বিস্ফোরণে ৪ আওয়ামী লীগ নেতাসহ দু পথচারী জখম হয়েছেন। জীবননগরে রোববারটা শান্তিপূর্ণ থাকলেও আলমডাঙ্গা ছিলো উত্তপ্ত। আলমডাঙ্গায় দুটি ট্রাক ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। পিকেটররা দুটি দোকান ভাঙচুর করেছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের বদরগঞ্জে ভাঙচুর করা হয়েছে কমপক্ষে ২০টি মোটরসাইকেল ও একটি আলমসাধু। সরোজগঞ্জে ভাঙচুর করা হয়েছে একটি মোটরসাইকেল। দর্শনা ও দামুড়হুদায় ১৪ দলীয় মহাজোট ও ১৮ দলীয় জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করলেও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দামুড়হুদায় সকাল থেকেই বিজিবি মোতায়েন ছিলো।

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে ভাঙচুরের তেমন খবর পাওয়া যায়নি। পরশু রাত থেকে বিভিন্ন সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালানো হয়। সকাল হওয়ার আগেই চুয়াডাঙ্গা বাস টার্মিনালের সামনে রাস্তায় টায়ারে আগুন দেয়া হলেও তখন পিকেটারদের কাউকে দেখা যায়নি। জেলা শহরে সকাল থেকে দফায় দফায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ফুটে উঠলেও বড়বাজার পুরাতনগলিসহ বিপনীবিতান কেন্দ্রগুলোর দোকানিরা দোকান বন্ধ করেই তার সামনে বসে সময়ের প্রহর গুনতে থাকেন। দুপুরের পর অবশ্য কিছু দোকান খোলা হয়, কিছু দোকানের অংশ বিশেষ পাল্লা খুলে বেচাকেনা করলেও ক্রেতার সংখ্যা ছিলো কম। দূর পাল্লার কোনো বাস চলাচল করেনি। সড়কগুলোতে সকাল থেকেই শ্যালোইঞ্জিন চালিত অবৈধ যানের আধিক্য ছিলো। ব্যাটারিচালিত অটো শহরে ঘুরলেও সংখ্যা ছিলো কম। অফিস আদালতে স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হয়। ব্যাংক-বীমাগুলোতে কাজ হলেও লেনদেনে ছিলো ভাটা। দুপুরের দিকে বাগানপাড়া মোড় এলাকা থেকে যুবদলের তিন কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরা হলো- জাহাঙ্গীর আলম খোকন, পৌর কলেজপাড়ার রনি, ইসলামপাড়ার রফিকুল। গ্রেফতারের সময় সদর থানার এসআই সিকান্দার জানান, পিকেটিঙের কারণে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে অবশ্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেছেন, এদের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে।

pic-2

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে ৬০ ঘণ্টা হরতালের সমর্থনে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি মিছিল বের করে। গতকাল জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে সকাল ১০টায় মিছিলটি বের হয়ে চুয়াডাঙ্গা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল শেষে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে সামনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি এম. জেনারেল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, দপ্তর সম্পাদক অ্যাড. আ.স.ম. আব্দুর রউফ, পৌর বিএনপির সভাপতি সহিদুল ইসলাম রতন, সাধারণ সম্পাদক মজিবুল হক মালিক মজু, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মন্টু, অ্যাড. আসছার আলী, অ্যাড. বদিউজ্জামান, এখলাছুর রহমান কাজল, অ্যাড. এরশাদ, রবিউল ইসলাম লিটন, বাদশা শেখ, মহিদুল ইসলাম, মঞ্জু মণ্ডল, আব্দুস সাত্তার মুন্সি, শাহ নেওয়াজ কালু, শহিদ হোসেন লাড্ডু, জেলা যুবদলের আশরাফ বিশ্বাস মিল্টু, মখলেছুজ্জামান মোখলেছ, মুকুল জোয়ার্দ্দার, তৌফিকুজ্জামান তৌফিক, আতিয়ার রহমান লিটন, আরিফুজ্জামান পিন্টু, জেলা ওলামাদলের সভাপতি মো. ফজলুর রহমান, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ পরিষদের সভাপতি সুশিল কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক স্বাধীন অধিকারী, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শরিফ উর জামান সিজার, সিনিয়র যুগ্মআহ্বায়ক এমএ তালহা, যুগ্মআহ্বায়ক রাজিব খান, সুজন মালিক, আব্দুল মোমিন প্রমুখ।

এদিকে হরতালের সমর্থনে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি একাংশ পিকেটিং ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সকাল ১১টায় কোর্ট মোড় থেকে মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কেদারগঞ্জস্থ কার্যালয়ে সমাবেশ করে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. এমএম শাহাজাহান মুকুলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির যুগ্মসম্পাদক মাহমুদুল হক পল্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক রওউফুন নাহার রীনা, দফতর সম্পাদক আবু আলা সামসুজ্জামান, আইন বিষয় সম্পাদক হেদায়েত হোসেন আসলাম প্রমুখ। ১৮ দলীয় জোটের হরতাল শান্তিপূর্ণ পালন করায় জেলা বিএনপি একাংশের সভাপতি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুহা. অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস জেলাবাসীকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া হরতালকে কেন্দ্র করে এ সরকারের পেটুয়াবাহিনী পুলিশ কর্তৃক দেশব্যাপি ১৮ দলীয় নেতাকর্মীদেরকে খুন, গ্রেফতার ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির অন্যতম নেতা লে. কর্নেল (অবঃ) সৈয়দ কামরুজ্জামান সমর্থিতদল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ৭টার দিকে রূপছায়া সিনেমা হল সংলগ্ন কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ে সমবাশের আয়োজন করে। সমাবেশে জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক অ্যাড. ওহাব মল্লিকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপর সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলী হোসেন, জেলা বিএনপির সদস্য মহাসনি আলী, মফিজুর রহমান মনা, জেলা যুবদল সদস্য সৈয়দ শরিফুল আলম বিলাস প্রমুখ। বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোচনার নামে বিরোধীদল তথা দেশবাসীর সাথে নাটক করছে। সারাদেশের মানুষ এ সরকারকে প্রত্যাখান করছে এবং ৬০ ঘণ্টার হরতালের সমর্থন জানিয়ে প্রমাণ করেছে শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই অবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে সরকারকে বাধ্য করা হবে।

হরতাল সমর্থনে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। গতকাল রোববার সকাল ১১টার দিকে কোর্টমোড়স্থ কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার্যালয়ে সমাবেশ করে। সমাবেশে জেলা বিএনপির সহসভাপতি আরশেদ আলী কালুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা মৎস্যজীবীদলের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক বকুল, সাধারণ সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম ওহিদ, জেলা কৃষকদলেল সভাপতি হামিদুল হক নেতাজী, সদর থানা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মনিরুজ্জামান মনি,  পৌর বিএনপির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ প্রমুখ।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় হরতালের প্রথম দিনে হরতাল সমর্থনে বিএনপির দু গ্রুপই বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এ সময় দুটি ট্রাক, ১টি হোটেল ও ১টি দোকান ভাঙচুর করা হয়। সকাল ৮টায় অহিদুল গ্রুপের আলমডাঙ্গা উপজেলা সভাপতি মজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন লাড্ডু চেয়ারম্যান, বিএনপি নেতা মীর ইসমাইল, ইলিয়াস হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন, কাউন্সিলর কাজী সাচ্চু, যুবদল নেতা মীর উজ্জ্বল, ফরহাদ হোসেন, পৌর জামায়াতের আমির আব্দুল জলিল, নায়েবে আমির মাও. রিন্টু, উপজেলা নায়েবে আমির মাও. নজরুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতি হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে সমাবেশ করে।

অপরদিকে শামসুজ্জামান দুদু গ্রুপ সকাল ১০টার দিকে দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল কাউনাইন টিলু, সাধারণ সম্পাদক শেখ সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবদল সদস্য উপজেলা আহ্বায়ক এমদাদুল হক ডাবু, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসরাফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান, যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন জালাল, মিল্টন মল্লিক, নাসির উদ্দিন, অহিদুল ইসলাম বাবু, মাগরিবুর রহমান, বিল্লাল হোসেনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার্যালয় গিয়ে সমাবেশ করে। এ সময় বাবলু মিয়ার বাড়ির সামনে থেকে তার দুটি ট্রাক, সোনাপট্টির মিলনের হোটেল ও হালিমের চশমার দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো আরও জানিয়েছে, আলমডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিকেলে শহরে হরতালবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান কাদির গনু, সহসভাপতি আমিরুল ইসলাম মন্টু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী খালেদুর রহমান অরুন, বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম চেয়ারম্যান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, পৌর সভাপতি আবু মুসা, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, ইন্দ্রজিৎ দেব শর্মা, তবারক হোসেন, মহিদুল ইসলাম মহিদ, আশরাফুল হক ঠাণ্ডু, আব্দুল হালিম, আব্দুর রাজ্জাক, যুবলীগ নেতা আব্দুল গাফফার, সোনাহার, ডিটু, মনার নেতৃত্বে মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার্যালয়ে ফিরে সমাবেশ করে।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, হরতালের প্রথম দিনে গতকাল রোববার মেহেরপুর শহরে হরতালের পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। হরতাল চলাকালে সকালে একটি পরিবহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। টায়ার জ্বালিয়ে শহরের কয়েকটি স্থানে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করা হয়।            রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ হরতাল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের করে। শহরের বড়বাজার এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাসস্ট্যান্ড গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্বে ছিলেন শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম। মিছিলে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আব্দুস সালাম, জেলা যুবলীগের সভাপতি সাজ্জাদুল আনাম, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল আলম, শহর আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক আলসাম খান পিন্টু, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুল, জেলা যুবলীগের যুগ্মসম্পাদক নিশান সাবের, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান হিরোন, মাহফিজুর রহমান মাহবুবসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। মিছিল থেকে জামায়াত-বিএনপি বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে হরতাল প্রতিরোধের আহ্বান জানানো হয়। পরে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এক পথসভায় বক্তব্য রাখেন শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আব্দুস সালাম, মুজিবনগর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুল হাসান চান্দু, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল আলম, থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি জাফর ইকবাল, যুবলীগ নেতা জসিউর রহমান বকুল প্রমুখ।

এদিকে বেলা ১১টার দিকে ১৮ দলীয় জোটের উদ্যোগে হরতালের সমর্থনে সাবেক এমপি বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাসুদ অরুনের নেতৃত্বে ১৮ দলীয় জোট মেহেরপুরে মিছিল করেছে। কাথুলী বাসস্ট্যান্ড থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক হয়ে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন পৌর সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, জেলা বিএনপির যুগ্মসম্পাদক মাহবুবুর রহমানসহ, বিএনপি নেতা আব্দুস সামাদ, ফজলু খান, হাবিব ইকবাল, জেলা তাঁতিদলের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান জুয়েল, ছাত্রদল নেতা সোহেল, রাজিব খানসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ। মিছিলে হরতালের সমর্থনে বিভিন্ন স্লোগান উচ্চারিত হয়।

এছাড়া জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে শহরের কলেজ মোড় এলাকা থেকে একটি হরতালবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন। মিছিলে অংশ নেন শহর কলেজ ছাত্রলীগের কুদরত-ই খোদা রুবেলসহ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

বেলা সাড়ে ১০টার দিকে মেহেরপুর শহরের শাহাজীপাড়াস্থ বিএনপি কার্যালয় থেকে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম বড় বাবুর নেতৃত্বে হরতাল সমর্থনে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি মেহেরপুর বড়বাজার এলাকা হয়ে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে এক সমাবেশে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম বড় বাবুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক আনছার-উল হক। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ও বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি বিএনপি নেতা মুজিবুল হক খান চৌধুরী হেলাল, পৌর বিএনপির সাধারণ  সম্পাদক আনোয়ারুল হক কালু, জেলা যুবদলের যুগ্মআহ্বায়ক প্রভাষক ফয়েজ মোহাম্মদ, সদর থানা যুবদলের সভাপতি হাসিবুজ্জামান স্বপন, সহসভাপতি নূর তাজুল ও আব্দুস রাজ্জাক, পৌর যুবদলের সহসভাপতি আনিসুর রহমান লাবলু, যুগ্মসম্পাদক সামসুল আযম লিন্টু ও মাহিনুর বাবু, সদর থানা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান পলাশ, যুবদল নেতা একরামূল হক একা, আজমল হোসেন মিন্টু, শাহিন খান, সদর থানা তৃণদলের সভাপতি ওমর ফারুক লিটন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. মোস্তাকিম, সহসভাপতি মীর আলমগীর ইকবাল আলম প্রমুখ।

মেহেরপুর সদর থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মেহেরপুরে হরতালবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে মেহেরপুর সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মো. গোলাম রসুলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের হোটেল বাজার ৩ রাস্তার মোড় থেকে শুরু করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে শেষ হয়। পরে হোটেল বাজার ৩ রাস্তার মোড়ে অনুষ্ঠিত এক পথ সভায় সভাপতিত্ব করেন আলহাজ মো. গোলাম রসুল। পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মিয়াজান আলী। বক্তব্য রাখেন সদর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান মফিজ, বর্তমান সভাপতি সাফুয়ান আহমেদ রূপক, সাধারণ সম্পাদক রাবিকুল ইসলাম লিজন, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি মাহফিজুর রহমান পোলেন প্রমুখ। এর আগে মিছিলে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ, সাধারণ সম্পাদক কুদরুত-ই খোদা রুবেল, সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ বাদল, মহাজনপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সম্পাদক হেলালউদ্দীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে গতকাল রোববার হরতাল চলাকালে মেহেরপুর থেকে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার কোনো বাস-ট্রাক চলাচল করেনি। শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিলো। অফিস-আদালত খোলা থাকলেও লোকজনের উপস্থিতি খুবই কম ছিলো। ব্যাংক-বীমায় লেনদেন হয়েছে সন্তর্পনে। স্কুল-কলেজ খোলা থাকলেও ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি কম ছিলো। তবে বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণির নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দেখা গেছে।

এদিকে সকাল ৬টার দিকে মেহেরপুর শহরের তাহের ক্লিনিকপাড়ায় রাস্তার পাশের দাঁড়িয়ে থাকা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৩১০০) মুখোশধারী কয়েক যুবক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও দমকলবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়। হরতালের সমর্থনকারীরা শহরের বড়বাজারসহ সড়কের কয়েটি স্থানে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা চালায়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। হরতাল চলাকালে জেলা আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ-ডিবি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এছাড়া র‌্যাবকে শহরে টহল দিতে দেখা যায়। শেষ সংবাদ পাওয়া পর্যন্ত শহরের গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।

ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, ঝিনাইদহ শহরের তিনটি স্থানে ৬টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের আদর্শপাড়া কঁচাতলার মোড়, হাটের রাস্তা ও কালিকাপুর এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় হরতাল সমর্থকরা। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের ৪ নেতাকর্মীসহ ৬ জন আহত হয়েছে। তাদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর শহরের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে এ ঘটনায় কেউ আটক হয়নি।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় একদল দুর্বৃত্ত শহরের তিনটি স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা.আব্দুর রাজ্জাক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৩ কর্মীসহ দুজন পথচারী আহত হয়েছে। আহতরা হলো- নাহিদ, আল-আমিন, জাহিদুল, খোকন ও আনিচুর। খবর পেয়ে বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। কর্মী আহতের খবর পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আজিজুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্মসম্পাদক ও পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু হাসপাতালে নেতা-কর্মীদের দেখতে যান।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে রাতেই জেলা আওয়ামী লীগ শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল শেষে শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে সমাবেশ করে নেতাকর্মীরা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আজিজুর রহমান, পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সামাদ, আক্কাচ আলী প্রমুখ। সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ রোববার রাতের মধ্যেই হামলাকারীদের আটক করার দাবি জানান।

দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদায় কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যদিয়ে বিএনপি তথা ১৮ দলীয় জোটের ডাকে ৬০ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিন সর্বাত্বকভাবে পালিত হয়েছে। হরতাল সফল করার লক্ষ্যে ১৮ দলীয় জোট নেতৃবৃন্দ পিকেটিং করেছে। গতকাল রোববার সকালে উপজেলা শহরের ব্র্যাকমোড়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা টায়ারে আগুন জালিয়ে পিকেটিং করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিভিয়ে দেয় এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি সহিংসু ঘটনা এড়াতে উপজেলা শহরে সাত প্লাটুন বিজিবি সশস্ত্র অবস্থায় টহল দেয়। তাদের টহল ছিলো চোখে পড়ার মতো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সার্বক্ষণিকভাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোখলেছুর রহমান (এনডিসি), দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদ হোসেন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল মাহমুদ। সকাল থেকেই বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিলো। দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি।

দামুড়হুদা প্রতিনিধি আরও জানান, দামুড়হুদায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ হরতালবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল করেছে। রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এবং বিকেল ৪টার দিকে দু দফায় ১৮ দলীয় জোটের ডাকা হরতালের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিলটি উপজেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু, সদর ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম, যুগ্মসম্পাদক ইমতিয়াজ হোসেন, লাভলু মিয়া, আ.লীগ নেতা আয়ুব আলী, ডালিম, জনাব, মতি, উপজেলা যুবলীগ নেতা শফিউল কবির ইউসুফ, আবু তালেব, হযরত আলী, সেলিম উদ্দিন বগা, আব্দুস সালাম ভুট্টু, ছোট হযরত, শামসুল, শরিফুল, আজিবার, হাবিব, জমাত, রকিবুল, ছোট ভুট্টু, আবদার, সিরাজ, ডলার, মালেক, আতিয়ার, রফিকুল, সোহেল, এনামুল, খালেক, নাহিদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জামিরুল ইসলাম, সহসভাপতি মোছা করিম, সাধারণ সম্পাদক সাজু আহম্মেদ রিংকু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুল বিশ্বাস মিঠু, দপ্তর সম্পাদক মাসুম, হাতেম বিপ্লব, কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শাহিন মোল্লা, ছাত্রলীগ নেতা করিম, রাসেল, আরিফ, সজিব, ইসরাফিল, বাবু, রবি প্রমুখ। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা ১৮ দলীয় জোট নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে বলেন, জনবিরোধী হরতাল পরিহার করে প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে ফিরে আসুন।

হরতাল শান্তিপূর্ণ হলেও মানুষের মধ্যে ছিলো আতঙ্ক। হরতাল সমর্থক রাস্তার টায়ার জালিয়ে সড়ক অবরোধ করার চেষ্টা করলে পুলিশ প্রতিহত করে। শতস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন হওয়ায় উপজেলা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী শাহ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

সরোজগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল রোববার সরোজগঞ্জ এলাকায় হরতাল সমর্থনকারীরা ব্যাপক পিকেটিং করতে দেখা গেছে। চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কে ডিঙ্গেদহ, ৫ মাইল, ভাণ্ডারদহ মোড়, সরোজগঞ্জ ছাদেমান নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে, সরোজগঞ্জ খাদ্যগুদামের নিকট, ৯ মাইল (ভুলটিয়ার) ও বদরগঞ্জ বাজারে খণ্ড খণ্ডভাবে রাস্তা দখল করে রাখে। এ সময় সরোজগঞ্জ ছাদেমান নেছা বালিকা বিদ্যালয়ের নিকট দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এছাড়া বদরগঞ্জ বাজারে ২০টি মোটরসাইকেল ও ১টি আলমসাধু ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে। ডিঙ্গেদহ থেকে বদরগঞ্জ বাজার পর্যন্ত বাস, ট্রাক, আলমসাধু, মোটরসাইকেলসহ সকল যানবাহন ছিলো বন্ধ। সরোজগঞ্জ বাজারের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা থাকলেও হরতালকারীরা কৌশলগতভাবে বাজারের প্রবেশ মুখ বন্ধ করে রাখে।

বদরগঞ্জ ব্যুরো জানিয়েছে, সারাদেশের মতো চুয়াডাঙ্গা সদরের সরোজগঞ্জ, বদরগঞ্জ বাজার এলাকায় পালিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত বদরগঞ্জ, সরোজগঞ্জ বাজারের সড়ক পথে বিএনপি জামায়াত-শিবির কর্তৃক মিছিল মিটিং করতে দেখা যায়নি। বদরগঞ্জ এলাকার বিএনপি মিছিল করার সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে হরতালকারীরা সটকে পড়ে। তারপরও কড়া প্রহরের মধ্যে থাকে পুলিশ প্রশাসন। বিএনপি-জামায়াত ও শিবিরের নাশকতা না ঘটতে পারে সেদিকে নজর রাখে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। ঝিনাইদহদ-চুয়াডাঙ্গা সড়কে ভারী যানবাহনের পাশাপাশি অবৈধ আলমসাধু চলাচল করতে দেখা যায়নি। সরোজগঞ্জ ও বদরগঞ্জ বাজারে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি, র‌্যাব ও ডিবি মোতায়নসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর নজরদাড়ি ছিলো দিনভর।

অন্যদিকে বদরগঞ্জ ব্যুরো আরোও জানিয়েছে, বদরগঞ্জ বাজার এলাকার আ.লীগ এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানায়, হরতালের নামে সারাদেশব্যাপি বিরোধীদলের নৈরাজ্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিএনপি জামায়াত যদি ভাঙচুর নাশকতা করে তা হলে আ.লীগ বসে থাকবে না। বিএনপি-জামায়াত ও শিবিরের নৈরাজ্যের প্রতিহত করার জন্য রুখে দাঁড়ানোর জন্য একান্তভাবে প্রতিরোধ কমিটি গঠনের আহ্বান জানানো হয়।

দর্শনা অফিস জানিয়েছে, হরতালবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল করেছে দর্শনা আ.লীগ। গতকাল রোববার বিকেলে দর্শনা পৌর আ.লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের যৌথ আয়োজনে পৌর আ.লীগের কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পৌর আ.লীগের কার্যালয়ে গিয়ে করেছে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ। পৌর আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন, ওয়াকার্সপার্টি জেলা নেতা সৈয়দ মজনুর রহমান, দর্শনা পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র মতিয়ার রহমান, দামুড়হুদা উপজেলা আ.লীগের যুগ্মসম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, আ.লীগ নেতা আ. খালেক, সিরাজুল ইসলাম, মোজাহারুল ইসলাম, হাতেম মণ্ডল, আ. গফুর, আব্দুর রাজ্জাক, গোলাম ফারুক আরিফ, আব্দুল হান্নান, নজরুল ইসলাম, সাবেক দর্শনা পৌর প্যানেল মেয়র কাজল আহম্মেদ, হাজি আব্দুল জলিল, সাইদুর রহমান, যুবলীগ নেতা আব্দুল হান্নান ছোট, আজিজুর রহমান বাবু, শেখ আসলাম আলী তোতা, মতিয়ার রহমান মতি, জয়নাল আবেদীন নফর, ইকবাল হোসেন, মামুন শাহ, একে আজাদ কিরণ, হাবিবুর রহমান মিলন, সাইফুল ইসলাম হুকুম, রফিকুল ইসলাম, সাজাহান মোল্লা, সোলায়মান কবির, ফারুক আহম্মেদ, মহিবুল, স্বপন, রেজাউল ইসলাম, আসাদুল ইসলাম, ফয়সাল, ছাত্রলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম ববি, নাহিদ পারভেজ প্রমুখ।

দর্শনা অফিস আরও জানিয়েছে, হরতালের প্রথম দিনে দর্শনায় ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। দর্শনায় বিএনপির তিনটি পক্ষের কোনো পক্ষকেই হরতালের সমর্থনে পিকেটিং করতে মাঠে দেখা না গেলেও যুবদলের একটি পক্ষ করেছে পিকেটিং। হরতাল চলাকালীন কোনো প্রকার ভারী যানবাহন চলাচল না করলেও দর্শনা রেলবাজার, পুরাতন বাজার, বাসস্ট্যান্ড ও হল্টস্টেশন এলাকার দোকানপাট ছিলো খোলা। সরকারি-বেসরকারি অফিসের কার্যক্রম ছিলো স্বাভাবিক। যানবাহন চলাচল না করায় দর্শনা বন্দরের কার্যক্রম ছিলো বন্ধ। দূরপাল্লার কোনো পরিবহন দর্শনা ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি।

এদিকে হরতালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দর্শনার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। হরতালের সমর্থনে দর্শনা পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাহারুল ইসলাম শিক্ষক ও পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিউল্লাহর নেতৃত্বে যুবদলের নেতাকর্মীরা গতকাল রোববার দুপুর ২টার দিকে দর্শনা পুরাতন বাজার এলাকায় পিকেটিং করেছে।

ডাকবাংলা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা সাধুহাটি, সাগান্না ইউনিয়ন হরতালের সমর্থনে মিছিল মিটিং ও রাস্তায় টায়ার জালিয়ে হরতাল পালন করেছে। যুবদলের সভাপতি জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ডাকবাংলা বাজারে মিছিল হয়েছে। সাগান্না ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন আল-মামুনের নেতৃত্ব শান্তিপূর্নভাবে হরতাল পালিত হয়েছে। সাধুহাটি ইউনিয়নের হরিনাকুণ্ডু লালন শাহসড়কে গ্রামের মানুষ টায়ার জ্বালিয়ে শান্তিপূর্নভাবে হরতাল পালন করেছে।

এদিকে আমাদের বাজার গোপালপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মধুহাটি উইনিয়ন বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন গতকাল রোবরার বাজার গোপালপুর, আটলিয়া, ডুগডুগিতে কোনো প্রকার অপ্রিতিকর ঘটনা ছাড়াই হরতাল পালন করেছে। হরতাল সমর্থনকারীরা সকাল থেকে রাস্তায় কাঠের গুঁড়ি ফেলে ও বাঁশ বেঁধে যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। এ সময় অত্র এলাকার বাজারগুলোর দোকানপাট বন্ধ ছিলো। তবে এ সময় বিরোধীদলের হরতালবিরোধী কোনো মিছিল মিটিং অনুষ্ঠিত হয়নি বলে জানা গেছে। এর আগে ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন এ হরতালের সমর্থনে গত শনিবার বিকেলে দলের নেতাকর্মীরা বিশাল মিছিল ও সমাবেশ করে। মিছিলটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাজার চত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তৈয়ব আলী লস্কর, টিটু, যুবদলের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ছাত্রদলের সভাপতি আতিয়ার রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মতিয়ার রহমানু, চান্দু মিয়া, রিপন, রবিউল, আ.সোবাহান, বকুল প্রমুখ।

হরিণাকুণ্ডু প্রতিনিধি জানিয়েছেন, হরিণাকুণ্ডুতে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে নজীরবিহীন শান্তিপূর্ণ অবস্থায় হরতাল পালিত হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরিণাকুণ্ডুর প্রধান সড়কে কোনো প্রকার যান্ত্রিক পরিবহন চলাচল করেন। জেলা সদরের সাথে যোগাযোগসহ দূর পাল্লার উদ্দেশে কোনো বাস চলাচল করেনি। একান্ত প্রয়োজনে শহরগামী নাগরিকদের ভ্যানে করে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। উপজেলা সদরসহ এলাকার প্রধান সড়ক সংলগ্ন পারবতীপুর, দখলপুর, কুলবাড়িয়া, সাতব্রিজ, ভবানীপুর, জোড়াদাহ বাজারের সকল প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো। সরকারি লালন শাহ কলেজ, সালেহা বেগম মহিলা কলেজসহ অন্যান্য কলেজ এবং উপজেলা সদরের হাই স্কুলগুলোতে  ছাত্রছাত্রীর তেমন উপস্থিতি না থাকায় কোনো ক্লাস হয়নি। অফিস আদালতে সেবা গ্রহণকারী নাগরিকদের উপস্থিতি ছিলো অন্য দিনের চেয়ে কম। ব্যাংক-বীমায় উল্ল্যেখযোগ্য তেমন লেনদেন হয়নি বলে জানা গেছে। শহরের দোয়েল চত্বরের আশপাশে পুলিশের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। তবে হরতালের পক্ষে বিপক্ষে রাস্তায় কোনো পিকেটিং না থাকায় পুলিশকে অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। সকালের দিকে জোড়াদাহ কলেজের পার্শ্ববর্তী এলাকায় হরতাল সমর্থকরা গাছ দিয়ে সড়ক অবরোধ করে। এ সময় হরতালের বিপক্ষে অবস্থানকারীগণ রাস্তা থেকে অবরোধ অপসারণ করতে গেলে উভয় দলের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় বলে জানায় এলাকাবাসী। তবে স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যায়।

এদিকে বিকেলের দিকে হাসপাতাল মোড় বাসস্ট্যান্ড  এলাকায় যন্ত্রচালিত গ্রামীণ পরিবহনখ্যাত আলমসাধু রাস্তায় বের হলে হরতাল সমর্থকদের বাধার মুখে পড়ে সটকে পড়ে। হরিণাকুণ্ডুর কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটায় শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হয়েছে

ইবি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, হরতাল সমর্থনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) রোববার মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল। তবে এ সময় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এছাড়া হরতালের কারণে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুল্লাহর নেতৃত্বে হরতাল সমর্থনে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস সংলগ্ন শেখপাড়া বাজারে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিবির ও স্থানীয় জামায়াত নেতারা বক্তব্য দেন। শেখপাড়ায় সমাবেশ শেষে মিছিলটি প্রধান ফটকে এসে শেষ হয়। পরে সকাল ১০টার দিকে হরতাল সমর্থনে শেখপাড়া থেকে মিছিল বের করে ইবি শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ছাত্রদল সভাপতি মো. ওমর ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক রাশিদুজ্জামান রাশেদের নেতৃত্বে মিছিলটি প্রধান ফটকের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়। এর আগে সকাল ৯টার দিকে শেখপাড়ায় মিছিল ও সমাবেশ করে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী ত্রিবেণী ইউনিয়নের ১৮ দলীয় জোটের নের্তৃবৃন্দ। এ সময় বক্তব্য রাখেন শৈলকূপা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য স্থানীয় বিএনপি নেতা এমএ ওহাব, জালাল উদ্দিন মোল্লা, জামায়াত নেতা আবদুল হালিম, ছবিরুল ইসলাম প্রমুখ। মিছিল-সমাবেশ চলাকালে পুলিশের কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। হরতালের কারণে শেখপাড়া বাজার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থিত দোকানপাট বন্ধ ছিলো। এছাড়া ক্যাম্পাস সংলগ্ন খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কে দূরপাল্লার কোনো গাড়ি ছেড়ে যায়নি।

এদিকে হরতালের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো গাড়িই কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ ছেড়ে যায়নি। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে না যেতে পারায় সকল বিভাগের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ ছিলো। শারদীয় দুর্গাপূজা ও পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ১৮ দিন বন্ধ থাকার পর ছুটি শেষে শনিবার আবাসিক হলসমূহ খুলে দেয়া হয়। রোববার থেকে ক্লাস পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিলো।

গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুর গাংনীতে টান টান উত্তেজনার মধ্যদিয়ে ১ম দিনের হরতাল শুরু হয়। গতকাল মাঠে আন্দোলন কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নেয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এমন খবরে রাজপথে সক্রিয় হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। রোববার রাতেই লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয় তারা। চারিদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে শেষ পর্যন্ত হরতাল সমর্থকরা রাজপথে কোনো কর্মসূচি পালন না করায় শান্তিপূর্ণভাবেই প্রথম দিনের হরতাল শেষ হয়েছে। সকাল থেকেই আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার কোনো বাস চলাচল করেনি। তবে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করেছে। দোকানপাট খোলা থাকলেও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিলো কম। হরতালের বিপক্ষে গতকাল সকালে ও সন্ধ্যায় হরতালবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগের একাংশ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোকালেছুর রহমান মুকুল, পৌর মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আহম্মেদ আলী, হাজি মহসিন আলী, উপজেলা যুবলীগের যুগ্মসম্পাদক মজিরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ক্লাবের সভাপতি আশিকুর রহমান আকাশ, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিলন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান রেজা সেন্টু ও কলেজ ছাত্রলীগ সম্পাদক উজ্জ্বলসহ নেতৃবৃন্দ।

এদিকে গতকাল সমকালে হরতালের বিপক্ষে শহরে পিকেটিং করে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেকসহ নেতৃবৃন্দ শহরের কাথুলী মোড় থেকে থানা সড়কের মোড় পর্যন্ত পিকেটিং করেন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

হরতালের শুরুতেই বামন্দী বাজারে ছাত্রদল নেতা চপল বিশ্বাসের নেতৃত্বে ছাত্রদল ও যুবদল নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলের জন্য জড়ো হয়। সড়কের ওপরে ব্যানার ধরে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করতে চাইলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশি বাধায় তারা কর্মসূচি পালন থেকে বিরত থাকে।