মুজিবনগরের বাবুপুরের দু ভাইকে অপহরণ ৪ ঘণ্টা পর ১৫ হাজার টাকা মুক্তিপণে মুক্ত

স্টাফ রিপোর্টার: মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার বাবুপুর গ্রামের ফ্লাক্সিলোড ব্যবসায়ী দু ভাইকে অপহরণের ৪ ঘণ্টা পর মুক্তিপণ নিয়ে মুক্তি দিয়েছে অস্ত্রধারী অপহরণকারীরা। গতরাত ৮টার দিকে মহাজনপুর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে গ্রামের পার্শ্ববর্তী ব্রিজের কাছ থেকে তাদের অপহরণ করে। রাত ১২টার দিকে ১৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে কুনার মাঠের মধ্যে তাদের ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওই এলাকায় প্রায়ই এরকম ঘটনা ঘটলেও তার প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। ফলে সন্ধ্যার পর থেকেই অনেকেই ঘর থেকে বের হতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন এলাকার কয়েকজন।

ভুক্তভোগীর পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, বাবুপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে ডালিম হোসেন (২৮) ও আব্দুল হালিম (২৬) গতরাতে মহাজনপুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। মহাজনপুর বাজারে সবুজ টেলিকম নামে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মহাজনপুর ও বাবুপুর গ্রামের অদুরবর্তী ব্রিজের কাছে পৌঁছুলে কয়েকজন তাদের দু ভাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে ডালিমের মোবাইল থেকে পিতা লিয়াকত আলীর সাথে কথা বলে অপহরণকারীরা। দু ছেলের মুক্তিপণ হিসেবে তারা ৫ লাখ টাকা দাবি করে। তবে তার বাড়ার সাথে সাথে টাকার মুক্তিপণের পরিমাণও কমতে থাকে। অবশ্য টাকা না দিলে দু ছেলে হত্যারও হুমকি দেয়া হয়। দেনদরবারের এক পর্যায়ে ১৫ হাজার টাকায় মীমাংসা হয়। রাত ১২টার দিকে পরিবারের পক্ষ থেকে গ্রামের পার্শ্ববর্তী কুনার মাঠের মধ্যে টাকা নিয়ে যায়। মুক্তিপণের ওই টাকা হাতে পেয়েই দু ভাইকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। অপহরণ করার সময় তাদের দু ভাইকে চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়ায় তারা কাউকে চিনতে পারেনি বলেও পারিবারিকসূত্র জানিয়েছে। এদিকে অপহরণের খবর পেয়ে মুজিবনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। পরিবারের লোকজন পুলিশকে জানায় নিজ উদ্যোগে তারা ছাড়িয়ে আনবে।

এলাকার কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মহাজনপুর গ্রাম ও বাবুপুর গ্রামের মাঝে সামান্য দূরত্ব। মাঝে শুধুমাত্র একটি ব্রিজ। তারপরেও ব্রিজের কাছে প্রতিনিয়তই ঘটছে এমন ঘটনা। তাই সন্ধ্যার পর থেকেই গোটা এলাকাজুড়ে অপহরণ আতঙ্ক নেমে আসে। মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিছুই করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ফলে সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে যাওয়া বন্ধ করেছেন অনেক মানুষ। বিষয়টি নিরসনে প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করলেন ভুক্তভোগীসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

জানতে চাইলে মুজিবনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, ভুক্তভোগীরা বেশিরভাগ সময় অপহরকদের সাথে সমঝোতা করে। ফলে পুলিশের কিছুই করার থাকে না। তবে এ চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতারে জোর প্রচেষ্টা চলছে বলে জানালেন তিনি।