ভ্রাম্যমাণ আদালত রায় প্রদানের পর ভুয়া ডাক্তার কাজী কামাল জেলহাজাতে প্রেরণ

 

জীবন নগর ব্যুরো/আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: ভ্রাম্যমাণ আদালত রায় প্রদানের পর ভুয়া মেডিসিন বিশেষজ্ঞ কাজী কামাল ডাক্তারকে জেলহাজাতে প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল জীবননগর থানা পুলিশ আদালতের নির্দেশে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

জানা গেছে, ভারতীয় নাগরিক কথিত ডা. কাজী কামাল ২০১০ সালে বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে। চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া গ্রামে অবস্থান করাকালে নিজেকে এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে এলাকায় চিকিৎসা শুরু করে। তার চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র নিয়ে স্থানীয় চিকিৎসকদের মাঝে সন্দেহ দেখা দিলে ২০১১ সালে চুয়াডাঙ্গা গোয়েন্দা সংস্থা তাকে গ্রেফতার করে। দীর্ঘদিন হাজতবাসের পর ছাড়া পেয়ে কথিত ডা. কাজী কামাল ঝিনেইদহ এলাকায় গিয়ে অবস্থান করছিলো। কয়েক মাস পর ফিরে এসে ফের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও ভারতীয় এমবিবিএস বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে এলাকায় মাইকিং করে চর্ম, যৌন, শিশু, স্ত্রী রোগসহ জটিল কঠিন রোগের চিকিৎসা দিয়ে আসছিলো।

জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়া বাজারের মিস্ত্রিপাড়া মোড়ে নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দাওয়াখানায় বসে নিয়মিত সরলসোজা রোগীদের হাতে ব্যবস্থাপত্র ধরিয়ে দিয়ে হাতিয়ে নিতো ২শ টাকা। অভিযোগ উঠেছে, এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে চালিয়ে আসছিলো কাজী কামাল তার চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসার কারবার। ভারতীয় চিকিতসক রোগীদের এ দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে কাজী কামাল হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। চিকিৎসার নামে এলাকায় তার অপচিকিৎসার শিকার হয়েছে অনেকে। এ অভিযোগ পেয়ে জীবননগর থানা পুলিশ গত শনিবার বিকালে আন্দুলবাড়িয়া বাজারের নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দাওয়াখানায় অভিযান চালিয়ে কাজী কামালকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোর্পদ করে। আদালত ভুয়া চিকিৎসক কাজী কামালকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

এদিকে অনুমোদনবিহীন অবৈধ নিউ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তুলেছে অনেকে। অপরদিকে আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালে চক্ষুক্যাম্প স্থাপন নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ইন্টার্নি চিকিৎসক দিয়ে চক্ষু বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে চোখের মতো স্পর্শকাতার চিকিতসার ব্যবস্থাপত্র দেয়ায় স্থানীয় জনতা স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এ আভিযোগ তোলেন। প্রসঙ্গত, গত শনিবার জীবননগর থানা পুলিশ আন্দুলবাড়িয়া বাজারে অভিযান চালিয়ে ভুয়া এমবিবিএস ভুয়া চিকিৎসক কাজী কামাল ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ মিরাজ উদ্দিনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা আসল সনদপত্র প্রদান করতে ব্যর্থ হলে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের জেল-জরিমানার আদেশ দেন।