ভোজ্য তেল হিসেবে সয়াবিন ব্যবহার হওয়ায় দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে সরিষার চাষ

বেগমপুর প্রতিনিধি: ঋতুর পালা বদলে শীতের আগমনী বার্তায় মাঠে মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে সৌন্দর্য্যমণ্ডিত সরিষা ফুল। গ্রামের দিগন্ত মাঠ সেজেছে হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহে। সরিষা ফুলের মুহ মুহ গন্ধ সকলকেই আকৃষ্ট করে। চুয়াডাঙ্গা সদর  উপজেলার বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় এবার সরিষার আবাদ হয়েছে তুলনামূলক কম। এলাকার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, অল্পকিছু সরিষার চাষ হলেও হলুদ ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে সরিষা গাছ। কিছুদিনের মধ্যে উঠে আসবে চাষিদের প্রতিক্ষীত ফসল সরিষা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকার ফলে এ বছর সদর উপজেলার সরিষার বাম্পার ফলন হবে এমনটাই আশা করছেন কৃষকেরা। বেগমপুর গ্রামের কৃষক আলমাছ আলী জানান, ভালো ফসল হবে এমনটাই আশা করছি। তবে কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ সৃষ্টির জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কোনো ভূমিকা নেই বলেই চলে।

এলাকার চাষিরা অভিযোগ করে বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যদি কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ যথারীতি দেখাশোনা করে তাহলে অনেক অনাবাদি জমিতে আরও বেশি সবজিসহ সরিষাচাষ করা সম্ভব। কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা এবং সরিষার ন্যায্যমূল্য পেলে এ অঞ্চলের কৃষকরা ধান, পাট, আখ, ভুট্টাচাষের পাশাপাশি সরিষাচাষে আরও বেশি এগিয়ে আসবে।

উপজেলা কৃষি অফিসসূত্রে জানা যায়, মাত্র ১০ শতাংশ জমিতে সরিষাচাষ করলে ৬-৭ জনের পরিবারের এক বছরের তেলের চাহিদা মিটে যায়। উপজেলায় এবার সরিষার ফলন বেশ ভালো হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এ বছর সদর উপজেলায় ৩৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় অনেক কম। ভুট্টার আবাদের ফলে সরিষার চাষ হ্রাস পেয়েছে। তবে চাষিরা ভুট্টার সাথে সাথী ফসল হিসেবে সরিষার চাষ করলে বেশি লাভবান হতো। অন্যদিকে বাজারে সরিষার দাম ভালো পাওয়া গেলে কৃষকের লাভের অঙ্কটা একটু বেশি হবে। জমিতে বিঘায় চার মণ কোনো কোনো জমিতে পাঁচ মণ সরিষা পাওয়া যাবে। এবার দাম ভালো পেলে আগামীতে এলাকার কৃষকেরা সরিষা চাষে আগ্রহী হবে। অন্যরা জানায় ভোজ্য তেল হিসেবে এখন মানুষ সরিষার তেল ব্যবহার করে খুবই কম। সরিষার তেলের জায়গা দখল করেছে সয়াবিন ও পামতেল। সরিষার তেল পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় বিশেষ বিশেষ কাজে ব্যবহার হচ্ছে।