ফলোআপ: চুয়াডাঙ্গার গোষ্টবিহারে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পাল্টাপাল্টি মামলা

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার গোষ্টবিহার গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছে। এ ঘটনায় দু’পক্ষ মামলা দায়ের করেছেন। অপরদিকে প্রতিপক্ষের হামলা দেখে মধ্যবয়সী প্রতিবন্ধী আসুরা বেগম ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, দীর্ঘ একযুগ বছর ধরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়নের গড়াইটুপি মেলা সংলগ্ন মাঠের ২৯ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো গোষ্টবিহার গ্রামের ফকির চাঁদ বিশ্বাসের ছেলে শহিদুল ইসলাম ওরফে সদু এবং জয়রদ্দীনের ছেলে আব্দুল হামিদের মধ্যে। এ নিয়ে উভয়পক্ষ আদালতে মামলাও করে। মামলায় শহিদুল জয়ী হলেও জমির দখল ছাড়তে না রাজ হামিদ। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে প্রায় সময় বাগবিতণ্ডা চলে আসছিলো। গতপরশু শনিবার বিকেল ৪টার দিকে আনোয়ারের ছেলে সাইদুর কালুপোল বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় সদুর ছেলে মিলন ও সাইদুরের মধ্যে ওই জমি নিয়ে তর্কবিতর্ক হয় এবং মারপিটের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সাইদুর বাড়িতে গিয়ে জানালে তাহাজ উদ্ধীনের ছেলে লিটন, ছয়রদ্দিনের ছেলে আহাদ আলী, জহির উদ্দীনের ছেলে আ.হামিদ, আনোয়ার হোসেনের ছেলে সাইদুর, খোকাই মণ্ডলের ছেলে হটু ও হাশেমের ছেলে মুকুল রামদা, লাঠিসোঁটা নিয়ে সদুর বাড়িতে মামলা চালায়। সদুর বাড়ির লোকজন প্রতিরোধ গড়ে তুললে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষ। এতে শহিদুল পক্ষের গুরুতর আহত হয় তার ছেলে মিলন (২৫), আ.হামিদের পক্ষের আহত হয় লিটন (৩৫), সাইদুর (৩২) ও আহাদ আলী (৩৬)। আহদের উদ্ধার করে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। আহতদের মধ্যে আহাদ আলীর আঘাত গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ মামলা করেছে বলে জানিয়েছে।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গ্রামের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে লিটন যখন তার লোকজন নিয়ে হাতে রামদা এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে সদুর বাড়ির দিকে চিৎকার দিয়ে ছুটে যাচ্ছিলো তখন গ্রামের লোকজন থামানোর চেষ্টা করলে তাদের ওপর চড়াও হয় সে। তখন গ্রামবাসী ভীত হয়ে তাদের সামনে থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়। সে এক ভীতিকর দৃশ্য। এদিকে বাড়িতে হামলা এবং বড় বড় রামদা দেখে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে সদুর বাক প্রতিবন্ধী স্ত্রী আসুরা বেগম। ঘটনার পর থেকে যাকে দেখছে তাকে দেখেই ভয়ে কান্নাকাটি করছে। লিটন গং প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনার পর থেকে সদুর বাড়ি পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। অপরদিকে হামিদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সদু জোরপূর্বক ওই জমির দখল নিতে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকে গ্রামজুড়ে বিরাজ করছে চাপা আতঙ্ক। এ ঘটনায় উভয়পক্ষই চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে বলে জানিয়েছে।

এ ব্যাপারে তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশের এসআই আব্দুর রশিদ বলেন, গোষ্টবিহার গ্রামের উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার জন্য বলা হয়েছে।