প্রধান শিক্ষকসহ ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

 

খাসকররা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে ৮ লাখ টাকা লোপাট

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গার খাসকররা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লাখ লাখ টাকা লোপাট করার অভিযোগ উঠছে। প্রধান শিক্ষকসহ কমিটির কয়েকজন এ টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন খোদ কমিটির কয়েকজনসহ এলাকার লোকজন। বিদ্যালয়ের জমি লিজ, দোকান বরাদ্দ, জেলা পরিষদ কর্তৃক বরদ্দকৃত টাকা  ও জেএসসি-এসএসসি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য জমানো টাকা কয়েকজন মিলে আত্মসাৎ করেছেন। এ নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

অভিযোগকারীরা জানান, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি খাসকররা বাজারের ওপরেই প্রতিষ্ঠিত। এ বিদ্যালয়ের নিজস্ব সম্পত্তির ওপরে রয়েছে ১৮টি দোকান। এ বিদ্যালয়কে জেএসসি ও এসএসসি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করার কথা বলে দোকানদারদের কাছ থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার উত্তোলন করা হয় গত বছর। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হবে বলেই টাকা দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। নতুন করে আরো ৬টি দোকানের পজিশন বিক্রি করা হয় ৫ লাখ ১০ হাজার টাকায়। বিদ্যালয়ের নিজস্ব আবাদি জমি থেকে আয় হয় ৬৩ হাজার টাকা। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য দু দফায় জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দ দেয়া হয় ১ লাখ টাকা। সর্বমোট ৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা বিদ্যালয়ের নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোলাম সিদ্দিক, সভাপতি আরজান আলীসহ ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন আত্মসাৎ করেছেন। বিধি অনুযায়ী এসব টাকা ব্যাংকের হিসাবে জমার কথা থাকলেও ব্যাংকে তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। মাস তিনেক আগে ম্যানেজিং কমিটির সভায় পরীক্ষা কেন্দ্রের টাকার হিসাবনিকাশের বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনার সময় অন্য টাকার কথাও উঠে আসে। এ সময় লাখ লাখ টাকার স্বচ্ছ হিসাব না পাওয়ায় উপস্থিত বাজার কমিটি ও স্কুল পরিচালনা কমিটির মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাতের ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আরজান আলী মাথাভাঙ্গাকে বলেন টাকা-পয়সা সব প্রধান শিক্ষকের হেফাজতে থাকার কথা। এ ব্যাপারে সব তার দায়দায়িত্ব। আমি কিছু জানি না। ইতঃপূর্বে প্রধান শিক্ষক গোলাম সিদ্দিকের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি মাথাভাঙ্গাকে বলেন ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয় করে বিদ্যালয়ের সীমানা পাঁচিল দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের কথার প্রতিবাদ করে বাজার কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান বলেন, পাঁচিল নির্মাণের জন্য আমার বড়ভাই শুকুর আলী এক গাড়ি ইট অনুদান দিয়েছেন। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী নিশ্চিন্দিপুর গ্রামের আনিছুর রহমান মল্লিক জানান, আমিসহ এলাকার বেশ কয়েকজন ইট, বালি ও সিমেন্ট অনুদান দিয়ে স্কুলের পাঁচিল নির্মাণ করে দিয়েছি। আমরা যে টাকা দিয়েছি তাতে এ পাঁচিল নির্মাণে আর বাড়তি টাকার প্রয়োজন হয়নি; বরঞ্চ কিছু টাকা থেকে যাওয়ার কথা।

গতরাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ব্যাপারে খাসকররা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম সিদ্দিকের মোবাইলফোনে রিং দেয়া হয়। কিন্তু তার মোবাইলফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। টাকা আত্মসাতের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুধীমহল, ম্যানেজিং কমিটির কিছু সদস্য ও অভিভাবক মহল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।