পুলিশের বিরুদ্ধে ডলার ছিনতাইয়ের অভিযোগ

স্টাফ রিপর্টার: তল্লাশির নামে একজন সুইডিশ নাগরিকের কাছ থেকে ৩ হাজার ডলার ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে যশোর বেনাপোল সড়কের ঝিকরগাছার পাঁচপুকুর নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার শিকার সুইডিশ নাগরিক খুকুমনি পারভীন ও তার স্বামী মিজানুর রহমান সন্ধ্যায় যশোর প্রেসক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করেন।
খুকু মনি জানান, এ সময় ঝিকরগাছা থানার এসআই এজাহার ও তার সঙ্গীয় ফোর্সরা তার সাথে চরম দুর্ব্যবহার করেন। নড়াইলের কালিয়া উপজেলা সদরের মিজানুর রহমানের স্ত্রী সুইডিশ নাগরিক খুকু মনি আরও জানান, দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে তিনি সুইডেনে বসবাস করেন। পেশায় তিনি একজন সেবিকা। তার স্বামী মিজানুর রহমানও সুইডেনের নাগরিক। তিনি পেশায় একজন প্রকৌশলী। গত ১৪ ডিসেম্বর তারা স্বামী-স্ত্রী দেশে ফেরেন। ১ জানুয়ারি খুকু মনি ভারতে আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যান। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে তিনি বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে ফেরত আসেন। বেনাপোল বন্দর থেকে তাকে নিয়ে আসতে তার স্বামী মিজানুর রহমান আগেই বেনাপোল বন্দরে পৌঁছান। তারা বেনাপোল পোর্ট থেকে ঢাকা মেট্রো গ-১১-১৬৯৪ নম্বরের একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে কালিয়ার উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে যশোর বেনাপোল সড়কের পাঁচপুকুর নামক স্থানে পৌঁছুলে ঝিকরগাছা থানার এস আই এজাজ আলী সঙ্গীয় ফোর্সসহ খুকুমনির বহনকারী প্রাইভেট কার থামান এবং কারের দু যাত্রীকে নামিয়ে রাস্তার ওপর তাদের দেহ তল্লাশি করে। সুইডিশ নাগরিক খুকু মনি পারভিন পুলিশের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় এসআই এজাহার তার সাথে চরম দুর্ব্যবহার করেন। এক পর্যায়ে এসআই এজাজ খুকু মনির পার্স তল্লাশি করে ৩ হাজার ইউএস ডলার হাতিয়ে নেন। প্রতিবাদ করলে দারোগা এজাজ জানান, যেহেতু পাসপোর্টে এই ডলার ইনড্রোস করা নেই। ফলে এটা অবৈধ। এটা দেয়া যাবে না। ঘটনাস্থলে বেশ কিছুক্ষণ বচসা করার পর পুলিশি আতঙ্ক নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন সুইডিশ নাগরিক খুকুমনি পারভিন ও তার স্বামী মিজানুর রহমান। পরে তারা সোজা পৌঁছে যান যশোর প্রেসক্লাবে। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের তারা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, মাটির টানে দেশে আসি। কিন্তু দেশের ভাইদের কাছ থেকে যে এমন ব্যবহার পাবো তা ভাবতেই পারিনি। তিনি বলেন, দারোগা যে ভাষায় আমার সাথে আচরণ করেছেন তা বলা সম্ভব নয়। কোনো সভ্য দেশের পুলিশ এভাষায় কথা বলতে পারে তা চিন্তার মধ্যে ছিলো না। তিনি পুলিশের এই আচরণে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশের এই অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে দেশে আসার আগে দুই বার ভাববো। এ বিষয়ে ঝিকরগাছা থানার ওসি মোল্লা খবির আহমেদ বলেন, অভিযোগকারীদের বর্ণনা সঠিক নয়। পুলিশ তাদের তল্লাশি করেছে ঠিক। কিন্তু সুইডেন নাগরিক পরিচয় শোনার পর পরই তাদেরকে সসম্মানে ছেড়ে দেয়া হয়।