পাটের বস্তা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কয়েক মাস আগেও কুষ্টিয়ার বাজারগুলোতে যেখানে প্লাস্টিকের তৈরি বস্তার দাপট ছিলো এখন সেখানে ব্যবহার হচ্ছে পাটের বস্ত। প্লাস্টিকের বস্তার পরিবর্তে পাটের তৈরি বস্তা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষ করে কুষ্টিয়ার খাজানগরে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকামে পাটের তৈরি বস্তা ব্যবহার হচ্ছে। প্রতিদিন কয়েক লাখ বস্তা ব্যবহার হচ্ছে চালকলগুলোতে। এছাড়া গম, ভুট্টা, সারসহ অন্যান্য খাদ্যশস্য সরবরাহ করা হচ্ছে পাটের বস্তায় ভরে। সরকারি সিদ্ধান্তের পর স্থানীয় জেলা প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের কারণে ব্যবসায়ীরা পাটের বস্তা ব্যবহার শুরু করেছে। প্রথম দিকে ব্যবসায়ীরা প্লাস্টিকের তৈরি বস্তা ব্যবহারে অনড় থাকলেও পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু হলে দমে যান তারা।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর এলাকায় গড়ে উঠেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চালের মোকাম। এখানে প্রায় ৩ শতাধিক চালকল রয়েছে। প্রতিদিন কয়েক লাখ বস্তা চাউল এ মোকাম থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। কয়েক মাস আগেও এসব চালকলগুলোতে ব্যবহার করা হতো প্লাস্টিকের তৈরি বস্তা। তবে এ দৃশ্যপট এখন আর নেই। প্রতিটি চালকলে ব্যবহার হচ্ছে দেশে তৈরি পাটের বস্তা। সবার মাঝে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাটের বস্তা। এজন্য জেলা প্রশাসন ও পাট অধিদফতর থেকে সচেতনতামূলক প্রচারণা দীর্ঘদিন থেকে চালানো হচ্ছে।

চালকল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল মজিদ বাবুল জানান, সরকার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকেই আমরা পাটের বস্তা ব্যবহার শুরু করেছি। প্রথম দিকে আমাদের মধ্যে অনেকেই আপত্তি জানালেও জেলা প্রশাসন থেকে বারবার চাপ সৃষ্টির পর ব্যবসায়ীরা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসে। এখন প্রতিটি মোকামে পাটের বস্তা ব্যবহার করা হচ্ছে।

এদিকে কয়েক মাস আগে সরকারি ৬টি পণ্য বাজারজাত করণে প্লাস্টিকের বস্তা নিষিদ্ধ করে। এরপরও জেলায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গোপনে প্লাষ্টিকের বস্তা ব্যবহার করে আসছিলো। সে সময় জেলা প্রশাসন সাঁড়াশি অভিযানে নামে। ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে জরিমানার পাশাপাশি জব্দ করে প্লাস্টিকের বস্তা। এরপর ব্যবসায়ীরা পাটের বস্তা ব্যবহারে উদ্যোগী হন। এদিকে পাটের বস্তা ব্যবহারে এগিয়ে থাকায় সরকার কুষ্টিয়াকে সেরা জেলার স্বীকৃতি দিয়েছে। পাটের বস্তা ব্যবহারে সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখায় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসনকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোদেজা খাতুন জানান, এই মুহুর্তে কুষ্টিয়ার বাজারগুলোতে ধান, চাল ও গম বাজারজাতে পাটের বস্তা ব্যবহার হচ্ছে। প্রতিনিয়ত তারা বাজার মনিটরিং করছেন। জেলা প্রশাসন থেকে বাজারে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন জানান, সরকারি নিদের্শনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসন কাজ করছে। পাট শিল্পকে বাঁচাতে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জেলার সকল চালকলে পাটের বস্তা ব্যবহার শুরু হয়েছে। সবখানে পাটের বস্তা ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কেউ যদি আইন লঙ্ঘণ করে প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহারের চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।