পথ হারানো শিশু

 

তাছির আহমেদ: ১১ বছর বয়সের বৃষ্টি নামের মিষ্টি চেহারার এ মেয়েটি উদাস মনে বসেছিলো। গতকাল সোমবার দুপুরে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিস রুমে। মায়ের ওপর অভিমান করে কুষ্টিয়া থেকে ট্রেনযোগে গত রোববার সন্ধ্যায় দর্শনা হল্টস্টেশনে নামে। তারপর আশ্রয় পায় দর্শনার আকমত আলী বিশ্বাসের কাছে। অতপর ফিরে পায় আপন ঠিকানা।

বৃষ্টি জানায়, ‘আমাদের বাড়ি কুষ্টিয়া মিরপুরের কুঠিপাড়ায়। স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে লেখাপড়া করি। পিতার নাম আশরাফুল। পেশায় রাজমিস্ত্রি। গত রোববার দুপুরে পিতা-মাতার বকুনি খেয়ে রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে পোড়াদাহ স্টেশনে যায়। ট্রেনযোগে রাতে দর্শনায়  নামি।

বৃষ্টির আশ্রয়দাতা দক্ষিণচাঁদপুরের আকমত আলী বিশ্বাস মোবাইলফোনে বলেন, বৃষ্টি পোড়াদহ স্টেশন থেকে গোয়ালন্দ ট্রেন ধরে দর্শনার হল্টস্টেশনে রাত ৮টার দিকে নামে। ঘণ্টাখানেক স্টেশন এলাকায় ভীরু মনে ঘোরাঘুরি করে। আমার ভাবী স্টেশনের কাছে এক ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরছিলো। বৃষ্টি ওদের পিছু নিয়ে আমাদের বাড়িতে চলে আছে।  মেয়েটির ভাগ্য খুব ভালো। তা না হলে কিযে হতো?

বৃষ্টির পিতার সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার এক মেয়ে এক ছেলে। মেয়ে বৃষ্টি বড়, বয়স ১১ বছর। গত রোববার একটু বকাঝকা করাতে রাগ করে চলে গেছে। আমি বহু খোঁজাখুজি করে ওকে না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ি। এমন সময় দামুড়হুদার মডেল থানার ওসি আহসান হাবীব ফোন করে বৃষ্টির অবস্থান অবগত করেন। ফোন পেয়ে বৃষ্টিকে ফেরত আনতে আমরা রওনা করেছি।

দামুড়হুদার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহসান হাবীব (পিপিএম) বলেন, বৃষ্টির বিষয়টি আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে। কারণ পিতামাতার সামান্য শাসনে শিশুরা যদি এভাবে বাড়ি ত্যাগ করে বা করতে পারে তাহলে সকল পিতামাতাকেই শিশুরা ভাবিয়ে তুলবে। শিশুদের বকুনি বা শাসনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক পিতামাতাকে আরো সাবধান হওয়া উচিত।