দামুড়হুদার বিষ্ণুপুরে পুলিশ ক্যাম্পের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপনকালে এসপি আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী

পুলিশ ক্যাম্প থাকলে এইট মার্ডারের মত লোমহর্ষক ঘটনা ঘটতো না

 

বখতিয়ার হোসেন বকুল: দামুড়হুদা উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন ও ফলক উম্মোচনের মাধ্যমে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা কখনই জনগণের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হতে পারে না। তারা অবৈধ অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে বেড়ায়। উপজেলার রক্তাক্ত জনপদখ্যাত এ বিষ্ণুপুর গ্রামে স্থায়ীভাবে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের পরে এখন থেকে আর সেই এইট মার্ডারের মতো লোমহর্ষক ঘটনা কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত দল আর ঘটাতে পারবে না। তিনি নব নির্মিত এ পুলিশ ক্যাম্পটি সুশৃংখলভাবে পরিচালনার জন্য এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে পুলিশ সুপারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

এএসপি (প্রবি) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, আছাদুজ্জামান, দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবীব (পিপিএম), ওসি (তদন্ত) আজিজুল হক, জুড়ানপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী, ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সাবেক মেম্বার মহাতাব উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রবিউল কবীর পল্লব, ইউপি সদস্য খোকন, লিটন, শিক্ষক শাহাবুদ্দিন শাহিন, ফিরোজ ইফতেখার, গোলাম সরোয়ার নান্নু, মিজানুর রহমান, আ. গফুর, মোস্তাফিজুর রহমান মাজু, ছানোয়ার হোসেন, জামিরুল প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালের ২৫ এপ্রিল রাতে নিষিদ্ধ ঘোষিত পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল) ২০/২৫ জনের সশস্ত্র ক্যাডাররা বিষ্ণুপুর গ্রামে হানা দিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গ্রামের আটজন নিরীহ মানুষকে বিষ্ণুপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়মাঠে ধরে নিয়ে যায় ওই রাতেই তাদেরকে জবাই করে খুন করে ফেলে রাখে। এর মধ্যে জুড়ানপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নিহত আলী হোসেনের ভাই ফজলুর রহমানকে মুমূর্ষু অবস্থায় গ্রামবাসী উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে সে প্রাণে বেঁচে যায়। ওই ঘটনার পর এলাকায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধসহ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে গ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অস্থায়ীভাবে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয় এবং গ্রামে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের লক্ষ্যে ২০০০ সালের প্রথম দিকে গ্রামবাসী তিন লাখ টাকা চাঁদা তুলে তৎকালীন জেলার পুলিশ সুপারের নামে ৬৬ শতক (দুবিঘা) জমি ক্রয় করে। গতকাল শনিবার ওই জমিতে স্থায়ীভাবে পুলিশ ক্যাম্পের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপনের মাধ্যমে এলাকার মানুষের দির্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে একধাপ এগিয়ে গেলো বলে এলাকাবাসী জানান। অনুষ্ঠান শেষে পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী ও দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবীব (পিপিএম) একটি করে গাছের চারা রোপণ করেন।

দামুড়হুদা মডেল থানা চত্বরে গাছের চারা রোপন করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী। গতকাল শনিবার বিকেল ৪ টার দিকে তিনি থানা চত্বরে একটি থাই জামরুলের চারা রোপণ করেন। এ সময় তিনি দামুড়হুদা মডেল থানাকে নান্দনিক সৌর্ন্দয্যে সাজিয়ে তোলার জন্য দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবীবকে (পিপিএম) ভূয়শি প্রশাংসা করেন। এএসপি (প্রবি) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, আছাদুজ্জামান, দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আহসান হাবীব (পিপিএম), ওসি (তদন্ত) আজিজুল হক, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রবিউল কবীর পল্লব প্রমুখ উপস্তিত ছিলেন।