দর্শনায় পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত : পৌরসভায় অগ্রগতি পর্যালোচনাসভা

 

দর্শনা অফিস: দর্শনায় পূর্ণাঙ্গস্থল বন্দর বাস্তবায়নের দাবিতে সভা-সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে। দর্শনাবাসীর প্রাণের এ দাবি পূরণের সর্বস্তরের মানুষ রয়েছে সোচ্চার। এরই ধারাবাহিকতায় দর্শনা পৌরসভায় অনুষ্ঠিত হয়েছে অগ্রগতি পর্যলোচনাসভা। দর্শনা পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের আহ্বানে গতকাল বুধবার বিকেলে পৌরসভার হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান। মেয়র মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে এ সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, দর্শনা সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ শিক্ষাবিদ মোশাররফ হোসেন, দর্শনা সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমান, বাংলাদেশের কমিউনিস্টপার্টির কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড অ্যাড. শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্সপার্টির নেতা সৈয়দ মজনুর রহমান, কেরুজ চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাজি সহিদুর রহমান, দর্শনা বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজি ফজলুল করিম, হাজি হারুন অর রশীদ, দর্শনা রেলবাজার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাবির হোসেন মিকা, পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্মআহ্বায়ক সাংবাদিক রেজাউল করিম লিটন, মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোতালেব হোসেন, দর্শনার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন, দর্শনা গণউন্নয়ন গ্রন্থাগারের আবু সুফিয়ান, বিশিষ্ট সমাজসেবক মোমিন মিয়া, হাজি আকমত আলী, সাবেক শ্রমিক নেতা আ. খালেক, হাজি এরশাদ আলী মাস্টার, সুধির কুমার শান্তারা, ওমর আলী, আমির হোসেন, পৌর কাউন্সিলর মঈনুদ্দিন আহম্মেদ মন্টু, কানচু মাতবর, জাহানারা খাতুন, আম্বিয়া খাতুন ফুট্ররি, সুরাতন নেছা প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, দর্শনায় পূর্ণাঙ্গস্থল বন্দর বাস্তবায়নে সকল অবকাঠামো বিদ্যমান। এখন শুধু সড়ক সংযোগ করতে পারলেই বন্দর চালু হবে। ১৯৮৬ সাল থেকে দর্শনায় পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর বাস্তবায়নে প্রচেষ্টা চলে আসছে। বর্তমানে এ সম্ভাবনা চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গেছে। দর্শনায় পূর্ণাঙ্গস্থলবন্দর বাস্তবায়নের সকল নেতৃবৃন্দের সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দর্শনাবাসী সবকিছু করতে প্রস্তুত রয়েছে।

উল্লেখ্য, দর্শনায় ১৯৬২ সাল থেকে রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম শুরু হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রজ্ঞাপন নং-০১-আইন/২০১৫/২৫২৬/শুল্ক তাং-০১/০১/২০১৫ ইং মোতাবেক ভারত থেকে রেলপথে দর্শনা শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে গবাদিপশু, মাছের পোনা, তাজা ফলমূল, গাছগাছড়া, বীজ গম, পাথর, কয়লা, রাসায়নিক সার, চায়না ক্লে, কাঠ টিম্বার, চুনাপাথর, পিয়াজ, মরিচ, রসুন, আদা, বলক্লে, কোয়ার্টজ, চাল, ভূষি, ভুট্টা, বিভিন্ন প্রকার খৈল, পোল্ট্রি ফিড, ফ্লাই অ্যাশ, রেলওয়ে স্লিপার, বিল্ডিং স্টোন, রোড স্টোন, স্যান্ড স্টোন, বিভিন্ন প্রকার ক্লে, গ্রানুলেটেড স্লাগ ও জিপসাম আমদানি এবং সকল প্রকার রফতানির অনুমোদন আছে। কিন্তু এক্ষেত্রে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নিয়মানুযায়ী ৪২টি রেলওয়ে ওয়াগনে এক জাতীয় পণ্য বোঝাই করে একটি ৱ্যাক আকারে পণ্য আমদানি করতে হয় (০১টি ৱ্যাক = ৪২টি পণ্য বোঝাই ওয়াগন)। এ পদ্ধতিতে ৪২টি ওয়াগনে একই জাতীয় পণ্য বোঝাই করে আমদানি করা ব্যবসায়ীর সংখ্যাও কমে গেছে। ফলে চাহিদা থাকা স্বত্ত্বেও স্থল পথের যোগাযোগ না থাকায় স্বল্প পরিমাণ পন্যের আমদানিকারকদের পক্ষে পণ্য আমদানি করা সম্ভব হয় না। তাই রেলপথের পাশাপাশি সড়ক পথের সংযোজন হলে দর্শনা একটি পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের মতো অন্যান্য বন্দরের ন্যায় ট্রাকযোগে পণ্য আমদানি-রফতানির সক্ষমতা অর্জন করবে এবং রাজস্ব বৃদ্ধির ক্ষেত্র প্রসারিত হবে। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দর্শনা শুল্ক স্টেশন ৪৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় করেছে।