থানায় অভিযোগ দেয়ায় গাংনীতে দিনমজুরকে পেটালেন ইউপি মেম্মর

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনীর ভবানীপুর গ্রামের তোহিদুল ইসলাম (৪৫) নামের এক দিনমজুরকে বেধড়ক পিটিয়েছেন ইউপি মেম্বার আনারুল ইসলাম। মেম্বার কর্তৃক মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ থানায় অবগত করার কারণে গতকাল রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। আহত তোহিদুল ইসলাম গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। তিনি ভবানীপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তোহিদুল ইসলামের স্ত্রী ভানু খাতুনের সঙ্গে প্রতিবেশী কয়েকজনের লেনদেন বিষয়ে দ্বন্দ্ব চলছিলো। দ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতে দু পক্ষের মাঝে ঢোকেন কাজিপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার ভবানীপুর গ্রামের আনারুল ইসলাম ও তার সাগরেদ গোলাম মোস্তফা। বিষয়টি মীমাংসা করার প্রতিশ্রুতিতে ভানুর কাছে কিছু টাকা দাবি করেন তারা দুজন। কিন্তু টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় শনিবার সন্ধ্যায় আনারুল তার নিজ অফিসে ধরে নিয়ে যায় ভানুর স্বামী তোহিদুলকে। এ ঘটনায় গতকাল সকালে তোহিদুল ও তার স্ত্রী গাংনী থানায় উপস্থিত হয়ে ডিউটি অফিসারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। এ খবর পেয়ে তাদের ওপর আরো চটে যান আনারুল ও এলাকার বহুল আলোচিত গোলাম মোস্তফা।

আহত তোহিদুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল বিকেলে ভবানীপুর সেন্টার মোড়ে আয়ুব আলীর চায়ের দোকানে চা পান করছিলেন তোহিদুল। এ সময় আনারুল ও গোলাম মোস্তফা তাকে জাপটে ধরে দোকানের বাইরে নিয়ে যায়। সেখানে পড়ে থাকা কাঠের চলা দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। আনারুল ও মোস্তফা এলাকায় এতোটাই ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে যে প্রকাশ্যে পেটানোর ঘটনা ঘটলেও কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তোহিদুল ইসলাম।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে আরো জানা গেছে, আনারুল ইসলাম মেম্বার ও তার অন্যতম সাগরেদ গোলাম মোস্তফা এলাকায় কি কাজ করে তা সবারই জানা। কিন্তু পেশিশক্তি ও প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে এলাকার মানুষের প্রতিবাদী মুখ বন্ধে করে রেখেছে। এলাকার মানুষকে বিভিন্নভাবে ফান্দে ফেলা ও কাজের কথা বলে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। তাই আনারুল ও গোলাম মোস্তফার অপকর্মের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্যদিয়ে এলাকার নিরিহ মানুষের বসবাসের সুযোগ করে দেয়ার দাবি ভুক্তভোগীদের। তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে মোবাইলে কল দিয়েও আনারুলের মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন এলাকার মানুষের অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আনারুল ও মোস্তফার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে কিন্তু কেউ লিখিত অভিযোগ না দেয়ায় পুলিশের কিছু করার থাকে না। তোহিদুলকে মারধরের ঘটনায় মামলা দিলে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।