তিন দিনেও দাফন হয়নি বেওয়ারিশ লাশ

আলমডাঙ্গার ফিলিং স্টেশনের নিকটস্থ ডোবা থেকে তুলে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মারা যাওয়া অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তির লাশ গতকাল শনিবারেও দাফন করা হয়নি। আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম কমিটির চুয়াডাঙ্গাস্থ দায়িত্বপালনকারী শান্তিপাড়ার আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার কারণে তিনি বেওয়ারিশ লাশ দাফন করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।

আনুমানিক ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী পুরুষকে ঈদের পূর্বদিন আলমডাঙ্গার ফিলিং স্টেশনের নিকটস্থ ডোবার হাটুপানির মধ্য থেকে উদ্ধার করেন এসআই পিয়ার আলীসহ তার সাথে থাকা ফোর্স। সেখানে তিন দিন ধরে পড়ে থাকার এক পর্যায়ে স্থানীয়দের দেখা খবরের ভিত্তিতে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। উদ্ধারের সময় থেকে মারা যাওয়ার পূর্বমূহুর্ত পর্যন্ত সে তার পরিচয় বলতে পারেনি। ফলে অজ্ঞাত পরিচয়ের রোগী হিসেবেই হাসপাতালে ভর্তি করে শিড়ির সামনে ফেলে রাখা হয়। ৩ দিনের মাথায় গত বৃহস্পতিবার রাতে মারা যায় অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই ব্যক্তি। সেই থেকে হাসপাতালেই রাখা হয়েছে লাশ। লাশ রাখা ঘরটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত  করার জন্য যাবতীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা হলেও দীর্ঘদিন ধরে তা পড়ে আছে। অপরদিকে লাশ ওই ঘরে পড়ে থেকে পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

জানা গেছে, পুরুষ বেওয়ারিশ লাশ বেশ কিছুদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা শান্তিপাড়ার আনোয়ার হোসেনই দাফন করে আসছেন। মহিলা বেওয়ারিশ লাশের ক্ষেত্রে তিনি তার মায়ের সহযোগিতা নেন। এদের সহযোগী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছিলন আব্দুর রহমান। তিনি এক সময় ছিলেন ভ্যানচালক। কিছুদিন তিনি হাসপাতালের রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম নিরসনে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাকে কিছু উশৃঙ্খল যুবক মারধর করার পর থেকেই অসুস্থ। সে কারণে তিনি আগের মতো আর তেমন দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। হাসপাতাল এলাকার একাধিক ব্যক্তি বেওয়ালিশ লাশ দাফন সম্পর্কে এসব তথ্য জানিয়েছেন। আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম কমিটির মূল দায়িত্বে অবশ্য চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র। এক সময় খরচের দিকটা দেখতেন দিলিপ কুমার।

ঈদের আগের দিন ১৫ অক্টোবর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তির পর হাসপাতালের সিঁড়ির সামনেই রাখা হয় অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই রোগীকে। মুখে অল্প দাঁড়ি। গায়ের রং উজ্জ্বল। পরনে কিছু না থাকলেও গায়ে ছিলো কালোর ওপর শাদা ডোরাকাটা গেঞ্জি। কোথা থেকে কীভাবে অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তি আলমডাঙ্গা ফিলিং স্টেশনের ডোবার পানিতে এলো তা যেমন জানা যায়নি, তেমনই গত ৩ দিনে তার পরিচয় মেলেনি। মারা যাওয়ার পরও তিন দিন ধরে লাশ পড়ে থাকায় বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে অনেকের।