তিনজনের পরিচয় মেলেনি : ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ

 

স্টাফ রিপোর্টার: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় জঙ্গি আস্তানায় নিহত চারজনের মধ্যে আবু কালাম ওরফে আবু ছাড়া বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি। তাদের ডিএনএ নমুনা নেয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরের দিকে চারজনের লাশ জঙ্গি আস্তানা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়ারেছ আলী মিয়া জানান, আবুর লাশ ছাড়া বাকিদের শনাক্ত করা যায়নি। জঙ্গি আস্তানা থেকে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও একটি সুইসাইড ভেস্ট উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে এখনো উদ্ধারকাজ চলছে।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল ইসলামের ভাষ্য, ভেতরে আরও বিস্ফোরক থাকতে পারে। উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য তালিকা তৈরির কাজ চলছে বলে তিনি জানান। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলামের ভাষ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেই পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ শেষ করে চলে গেছে। ঘটনাস্থলে সিআইডির ক্রাইম সিন দল কাজ করছে। লাশ প্যাকেট করার কাজে নিয়োজিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, চারজনের পরনেই ছিল জিনসের প্যান্ট ও কালো গেঞ্জি। দুজনের দেহ ছিন্নভিন্ন। আবু ছাড়া অন্যদের চেহারা চেনা যাচ্ছে না। জঙ্গি অভিযানে নিহত আবুর মা ফুলসানা বেগমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি শয্যাশায়ী। ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। লাশ নেবেন কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনারা দিলে নিবো, না দিলে নাই।’ ফুলসানা বেগমের ছোট ছেলে মো. সবুরের স্ত্রী রুনা বেগম বলেন, আমার শাশুড়ি এখন অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। কথা বলতে পারছেন না। আমার শ্বশুর ও স্বামী বাইরে কাজে গেছেন। তাই বাড়ির দায়িত্ব এখন আমার ওপর। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, ‘আবুর লাশ আমরা নিতে চাই না। তবে আবুর দুই মেয়েকে আমরা পেতে চাই।’ এ সময় আবুর মাও জানান, তারা লাশ নেবেন না।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য আবুর স্ত্রী সুমাইয়াকে (২১) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার পাঁচ বছরের মেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। সকাল ১০টায় গিয়ে দেখা যায়, ভেতর থেকে দরজা লাগানো। জানালা দিয়ে দেখা যায়, তিনজন পুলিশ রয়েছে। একজন জানান, সে ভালো রয়েছে। তবে তার সাথে কোনো কথা বলার সুযোগ নেই।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ত্রিমোহনী শিবনগর গ্রামের আমবাগানের ভেতরের একটি বাড়িতে জঙ্গিরা আস্তানা গেড়েছে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার ভোরে বাড়িটি ঘেরাও করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও জেলা পুলিশ। দুই দিন ধরে ঘিরে রাখা বাড়িটিতে অভিযান শেষে চারজন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। ওই বাড়ি থেকে এক নারী ও তার শিশুসন্তানকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।